ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পরিস্থিতি ঝুঁকিতে

করোনা রোগী সুস্থতার হার বাংলাদেশে সবচেয়ে কম

প্রকাশিত: ২১:২৩, ৫ জুন ২০২০

করোনা রোগী সুস্থতার হার বাংলাদেশে সবচেয়ে কম

নিখিল মানখিন ॥ করোনা রোগী শনাক্তের হার, সুস্থ হওয়া এবং নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। ওয়ার্ল্ডোমিটার’র ৪ এপ্রিলের বিশ^ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বিশে^র মোট শনাক্তকৃত করোনা রোগীর সংখ্যার বিবেচেনায় বাংলাদেশসহ শীর্ষ ২১ দেশের মধ্যে বাংলাদেশে করোনা রোগীর সুস্থতার হার সবচেয়ে কম। কিন্তু পরীক্ষিত নমুনা সংখ্যার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার সবচেয়ে বেশি। আর সবচেয়ে কম নমুনা পরীক্ষা করার দিক দিয়েও প্রথম সারিতেই রয়েছে বাংলাদেশ।করোনাভাইরাস শনাক্তের তালিকায় শীর্ষ একের পর এক দেশকে পেছনে ফেলে দিচ্ছে বাংলাদেশ। গত ৩১ মে প্রকাশিত ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী আক্রান্তের সংখ্যার বিচারে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ২১তম। গত ২৫ মে আরেকটি দেশকে পেছনে ফেলে দিয়েছিল বাংলাদেশ। এটি দেশের করোনা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতির চিত্র ফুটিয়ে তুলছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সংক্রমণ শনাক্তের বিচারে ভারত ও পাকিস্তানই কেবল বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। ভারতের অবস্থান চলে এসেছে সপ্তম স্থানে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী দক্ষিণ এশিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যায় বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। তার আগে রয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। সংক্রমণ শনাক্তের তালিকায় শীর্ষ অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের। বাংলাদেশ করোনা পরিস্থিতি ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩৫ জনের মৃত্যু এবং ২৪২৩ জন করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ৭৮১ এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৭ হাজার ৫৬৩ জনে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ৫৭১ জনসহ এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন মোট ১২ হাজার ১৬১ জন। বাংলাদেশে রোগী সুস্থতার হার কম ॥ ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী মোট আক্রান্তের বিবেচনায় মোট সুস্থতার হার আমেরিকায় ৩৬ শতাংশ, ব্রাজিল ৪৫ শতাংশ, রাশিয়ায় ৪৬ শতাংশ, ইতালিতে ৬৯ শতাংশ, ভারতে ৪৮ শতাংশ, জার্মানিতে ৯১ শতাংশ, পেরুতে ৪১ শতাংশ, তুর্কিতে ৭৯ শতাংশ, ইরানে ৭৮ শতাংশ, ফ্রান্সে ৪৬ শতাংশ, চিলিতে ৮০ শতাংশ, মেক্সিকোতে ৭২ শতাংশ, কানাডায় ৫৫ শতাংশ, সৌদি আরবে ৭৫ শতাংশ, পাকিস্তানে ৩৫ শতাংশ, চীনে ৯৪ শতাংশ, কাতারে ৬০ শতাংশ, বেলজিয়ামে ২৮ শতাংশ এবং বাংলাদেশে ২১ শতাংশ। বিশ্ব প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পরীক্ষিত নমুনা ও রোগী সংখ্যা ॥ উত্তর আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের স্পেন, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যসহ আরও কয়েকটি দেশে গণহারে নমুনা পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। শনাক্তকৃত রোগী সংখ্যার তুলনায় ৯ গুণ বেশি নমুনা পরীক্ষা করছে বাংলাদেশ। আর শনাক্তকৃত রোগীর তুলনায় জার্মানিতে ১৮ গুণ, রাশিয়ায় ২৫ গুণ, কানাডায় ১৭ গুণ, পর্তুগালে ২২ গুণ, সৌদি আরবে ১১ গুণ, অস্ট্রিয়ায় ২৩ গুণ, জাপানে ১৫ গুণ, পাকিস্তানে ১০ গুণ, পোল্যান্ডে ৩৩ গুণ, দক্ষিণ কোরিয়ায় ২৯ গুণ, ডেনমার্কে ৪৩ গুণ, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৬৪ গুণ, নরওয়েতে ২৬ গুণ, অস্ট্রেলিয়ায় ১৫৪ গুণ, মালয়েশিয়ায় ৬৪ গুণ, দক্ষিণ আফ্রিকায় ২৯ গুণ, মিসরে ১১ গুণ, থাইল্যান্ডে ৯৪ গুণ, কাজাখস্তানে ৮২ গুণ, বাহরাইনে ৩৪ গুণ, উজবেকিস্তানে ১৬৪ গুণ, থাইল্যান্ডে ৯৪ গুণ, নিউজিল্যান্ডে ৮২ গুণ, ভিয়েতনামে ৭৬৩ গুণ, ভেনিজুয়েলায় ১৩১১ গুণ, দক্ষিণ এশিয়ার ভারতে ২৪ গুণ, পাকিস্তানে ১১ গুণ, শ্রীলঙ্কায় ৪৬ গুণ, মালদ্বীপে ৩০ গুণ, নেপালে ২৬৭ গুণ ও ভুটানে ৬৭৭ গুণ বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। রোগী শনাক্তের ভিত্তিতে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান ॥ দক্ষিণ এশিয়ায় নমুনার সংখ্যার বিপরীতে করোনা রোগী শনাক্তের হার বাংলাদেশে ২০ শতাংশ, ভারতে ৪ শতাংশ, পাকিস্তানে ১০ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ২ শতংশ, মালদ্বীপে দশমিক ৯ শতাংশ, নেপালে দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং ভুটানে দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। বিশে^র সর্বাধিক আক্রান্ত দেশসমূহে বাংলাদেশের অবস্থান ॥ নমুনা সংখ্যার বিপরীতে করোনা রোগী শনাক্তের হার বাংলাদেশে ১৩ শতাংশ, রাশিয়ায় ৪ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ১২ শতাংশ এবং ইউরোপের ইতালিতে ৭ শতাংশ, জার্মানিতে ৬ শতাংশ, স্পেনে ৯ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৯ শতাংশ, ফ্রান্সে ১২ শতাংশ, অস্ট্রিয়ায় ৭ শতাংশ, নরওয়ে ৫ শতাংশ। রোগী শনাক্তের ভিত্তিতে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় বাংলাদেশ ॥ দক্ষিণ এশিয়ায় নমুনার সংখ্যার বিপরীতে করোনা রোগী শনাক্তের হার বাংলাদেশে ২০ শতাংশ, কম্বোডিয়ায় শূন্য দশমিক ৮৮ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ায় ১৩ শতাংশ, মালয়েশিয়ায় ৫ শতাংশ, ফিলিপিন্সে ৯ শতাংশ, সিঙ্গাপুরে ১১ শতাংশ, থাইল্যান্ডে ২ শতাংশ, ভিয়েতনামে দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ, মিয়ানমারে ২ শতাংশ, তিমুরে ৭ শতাংশ।
×