ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

৬ জুন থেকে মশক নিধন অভিযান

দুর্নীতিবাজ যেই হোক কোন ছাড় নয় ॥ মেয়র আতিক

প্রকাশিত: ২৩:৫০, ৪ জুন ২০২০

দুর্নীতিবাজ যেই হোক কোন ছাড় নয় ॥ মেয়র আতিক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুর্নীতিবাজ কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারী যেই হোক না কেন, তাকে কোনপ্রকার ছাড় দেয়া হবে না। তার বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ অবলম্বনের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম। একইসঙ্গে মুজিববর্ষে দায়িত্ব গ্রহণ করে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন বলেও জানান তিনি। বুধবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ডিএনসিসির নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের নিয়ে ডিএনসিসির প্রথম কর্পোরেশন সভায় মেয়র এসব কথা বলেন। কর্পোরেশন সভায় ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবদুল হাই, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর সাইদুর রহমান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন, প্রধান প্রকৌশলী আমিরুল ইসলাম, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক উপস্থিত ছিলেন। আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে মিরপুর মাজার রোডে অবস্থিত ডিএনসিসির ১০ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতেই মৃত্যুবরণকারী সাবেক মেয়র আনিসুল হক, প্যানেল মেয়র ওসমান গণি এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়। মেয়র নবনির্বাচিত সকল ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরদের স্বাগত জানিয়ে কাউন্সিলরদের উদ্দেশে বলেন, আমরা সৌভাগ্যবান যে, মুজিববর্ষে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছি। করোনা মোকাবেলা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, করোনাকালে ডিএনসিসি এক দিনের জন্যও বন্ধ থাকেনি। প্রতিদিন ডিএনসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাছে। মেয়র পদে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণ করার আগে থেকেই এ মহাদুর্যোগের সময়ে আমিও নগরবাসীর পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছি। সিটি কর্পোরেশনের কর্মীদের পাশে থেকে তাদেরকে অনুপ্রেরণা যোগানোর মাধ্যমে এবং ডিএনসিসির সঙ্গে সমন্বয় করে আমি নগরবাসীর জন্য সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। এই দুর্যোগের সময়ে নগরবাসীর জীবনযাপন স্বাভাবিক রাখতে আপনাদের সঙ্গে নিয়ে এই প্রচেষ্টা চলমান থাকবে। করোনা মোকাবেলায় ডিএনসিসির বিভিন্ন কার্যক্রম মেয়র কাউন্সিলরদের কাছে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী করোনা আক্রান্তের সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে পরীক্ষামূলকভাবে ডিএনসিসির ১টি ওয়ার্ড ৩টি জোনে ভাগ করা হবে। গ্রিন, ইয়েলো ও রেড। সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। মেয়র আতিক বলেন, ৩১ মে পর্যন্ত ডিএনসিসি ১০টি ওয়াটার বাউজারের সাহায্যে ৮৬ লাখ ১০ হাজার লিটার তরল জীবাণুনাশক ডিএনসিসির প্রায় ১২ কোটি ৯২ লাখ বর্গফুট এলাকায় ছিটানো হয়। এছাড়া ৭টি স্থানে করোনা স্যাম্পল কালেকশন বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এর বাইরেও কোভিড-১৯ টেস্টিং ল্যাব (পিসিআর মেশিন) স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। এরই মধ্যে সাময়িকভাবে মহাখালী ডিএনসিসি মার্কেট করোনা হাসপাতাল ও আইসোলেশান সেন্টার নির্মাণের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। করোনা মোকাবেলায় ডিএনসিসির নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে করোনার চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য ও পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। ডিএনসিসির ১৬টি কাঁচাবাজার উন্মুক্তস্থানে স্থানান্তরিত করা হযেছে যেন জনগণ যাতে আরও নিরাপদে দৈনন্দিন বাজার সম্পন্ন করতে পারেন। বিভিন্ন ওয়ার্ডের প্রায় ৫ লক্ষাধিক অসহায়, দুস্থ পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছে ডিএনসিসি। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রসঙ্গে আতিকুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়া যেন গত বছরের মতো ভয়াবহ রূপ নিতে না পারে সেজন্য আমি আগে থেকেই সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছি। ১০ মে থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত ৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে মোবাইল কোর্ট অব্যাহত থাকবে। কোথাও জমে থাকা পানি বা এডিস মশার বংশবিস্তারের উপযোগী পরিবেশ পাওয়া গেলে, সেটি যদি সরকারী প্রতিষ্ঠানও হয়, সেখানে আইন অনুযায়ী অর্থদ- বা কারাদ- বা উভয়দ-ে দ-িত করা হবে।
×