ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পূর্ব লাদাখে ঢুকে পড়েছে চীনা বাহিনী ॥ ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

প্রকাশিত: ১২:৫৮, ৩ জুন ২০২০

পূর্ব লাদাখে ঢুকে পড়েছে চীনা বাহিনী ॥ ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক ॥ পূর্ব লাদাখে চীনা সেনাবাহিনী ঢুকে পড়ার কথা স্বীকার করেছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যম সিএনএন-নিউজ ১৮ কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন স্বীকারোক্তি দেন তিনি। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দিল্লি যাবতীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেও জানিয়েছেন রাজনাথ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বিষয়টি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন। রাজনাথের দাবি, চীন ওই এলাকাকে নিজেদের দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে এটি ভারতীয় ভূখণ্ড। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, আগামী ৬ জুন চীন ও ভারতীয় বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে মিলিত হবেন। তবে নিজের অবস্থান থেকে কোনোভাবেই পিছু হটবে না দিল্লি। রাজনাথ বলেন, ‘বেশকিছু চীনা নাগরিক ওই এলাকায় ঢুকে পড়েছে। ভারতের যা করা উচিত ছিল, তা-ই করেছে।’ সমস্যা সমাধানের জন্য চীনকে পরিস্থিতি গভীরভাবে বিবেচনার পরামর্শ দেন ভারতীয় মন্ত্রী। প্রায় মাসখানেক ধরে পূর্ব লাদাখের পার্বত্য অঞ্চলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে চীনা ও ভারতীয় বাহিনী। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা হলেও সমাধান মেলেনি। ২০১৭ সালে ডোকলামে ত্রিদেশীয় সীমান্তে এমন সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল চীনা ও ভারতীয় বাহিনী। সেবার কূটনৈতিক ও সামরিক আলোচনার মাধ্যমে বিতর্কের অবসান ঘটেছিল। দিল্লির প্রত্যাশা এবারও সেই পথেই সংকট উত্তরণ ঘটতে পারে। এমন আশাবাদের কথা জানালেও একইসঙ্গে হুঁশিয়ারি দিতেও ভোলেননি ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তার ভাষায়, ‘ভারত কোনও দেশের অহংকারে আঘাত করতে চায় না। আবার একইসঙ্গে নিজের অহংকার খর্ব করার কোনও প্রচেষ্টাকেও প্রশ্রয় দেয় না।’ ইতোমধ্যে দুই দেশই পূর্ব লাদাখে অতিরিক্ত বাহিনী, সামরিক যান ও প্রচুর অস্ত্রসম্ভার পাঠিয়েছে। এর মধ্যেই গত ৫ মে সন্ধ্যায় প্রায় ২৫০ ভারতীয় ও চীনা সেনা সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে। পরে গত ৯ মে উত্তর সিকিমেও একই রকম ঘটনা ঘটে। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার জেরে ভারতে শুরু হয়েছে ‘বয়কট চায়না’ ক্যাম্পেইন। এর আওতায় নিজেদের মোবাইল থেকে বিভিন্ন চীনা অ্যাপ আনইনস্টল করছে ভারতীয়রা। ভারতে চীনা পণ্য বর্জনের ডাক অবশ্য নতুন নয়–প্রতিবারই দিওয়ালির আগে নতুন করে এই ডাক ওঠে। আরএসএসের মতো অনেক উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর তাতে সমর্থনও থাকে। কিন্তু দিওয়ালির কেনাকাটা মিটে গেলে সেই ডাক আবার থিতিয়েও যায়। অর্থনীতিবিদ সৈকত সেনগুপ্ত মনে করেন, ‘লাদাখ বা সিকিম সীমান্তে যদি চীন-ভারত সংঘাত খারাপ মোড় নেয়, তাহলে এবারের চীন বয়কট আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হবে। এটা ধরেই নেওয়া যায়। কোভিড-১৯ সংকটের জন্য বহু মানুষই চীনের ওপর বেজায় খাপ্পা হয়ে আছেন, সামরিক সংঘাত সেটাকে আরও জটিল করে তুলবে। দেশের সাধারণ মানুষ তার নিজের মতো করে এর বদলা নিতে চাইবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।’ সূত্র: নিউজ ১৮, হিন্দুস্তান টাইমস।
×