ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পকলা খুললেও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড স্থবিরতা

প্রকাশিত: ২৩:০৯, ৩ জুন ২০২০

শিল্পকলা খুললেও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড স্থবিরতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর সংস্কৃতিচর্চার প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। নাট্যকর্মীদের সরব উপস্থিতিতে বছরজুড়ে মুখরিত থাকে একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার তিনটি মিলনায়তন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় মিলনায়তনগুলো বিভিন্ন নাট্যদলের মঞ্চনাটকের প্রদর্শনীগুলো উপভোগ করতেন নাট্যপ্রেমীরা। অন্যদিকে সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনেও নাচ-গানের আসরগুলো মন রাঙাত সংস্কৃতিপ্রেমীদের। জাতীয় চিত্রশালার ছয়টি গ্যালারিতে চিত্রকর্ম, ভাস্কর্যসহ নানা মাধ্যমের শিল্পকর্ম প্রদর্শনীগুলো মনের খোরাক জোগাত শিল্প রসিকদের। মহামারী কোভিডের কারণে একাডেমিতে অনুষ্ঠিত শিল্পচর্চার সব সকল শাখাতেই নেমে এসেছে নিস্তব্ধতা। জনসমাগম পরিহারে ১৮ মার্চ থেকেই বন্ধ হয়ে যায় একাডেমির মিলনায়তন ভিত্তিক আনুষ্ঠানিকতা। পরবর্তীতে ২৬ মার্চ থেকে সরকারীভাবে সাধারণ ছুটি ঘোষণা হলে আনুুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ থাকে একাডেমির কার্যক্রম। অবশেষে দীর্ঘ ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে ৩১ মার্চ থেকে খুলে গেছে সেগুন বাগিচার শিল্পকলা একাডেমি। তবে একাডেমি খুললেও নেই নাট্য প্রদর্শনী, সঙ্গীত-নৃত্যানুষ্ঠান বা শিল্পকর্ম প্রদর্শনী। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে কোন কিছুই করা সম্ভব হচ্ছে না। কবে নাগাদ পুরোদমে শুরু হবে সাংস্কৃতিক কর্মকা-Ñসেটাও এখন অনিশ্চিত। কারণ, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত একাডেমির মিলনায়তনগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রশাসনিক কার্যক্রমের পাশাপাশি চলছে কিছু অনলাইননির্ভর কার্যক্রম। বর্র্তমানে বন্ধ রয়েছে শিল্পকলা একাডেমির পাঁচটি মিলনায়তন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তন, এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হল ও স্টুডিও থিয়েটার হল, জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তন এবং জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তন। পাশাপাশি একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে অবস্থিত কফি হাউস এবং নাট্যশালার ছাদের খাবারের দোকান ‘চিলেকোঠা’ ও বন্ধ থাকবে। এ বিষয়ে একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী জনকণ্ঠকে বলেন, সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী সোস্যাল ডিসটেন্স বা শারীরিক দূরত্বের বিষয়টি আমাদের যথাযথভাবে মানতে হবে। এ কারণেই গ্যালারি ও মিলনায়তনগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। আপাতত কোন অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে না। আমরা তো অনুষ্ঠান করি দর্শকদের জন্য। তারাই যদি না আসে তাহলে অযথা অনুষ্ঠান করার মানে নেই। একইভাবে মিলনায়তন ভাড়া দেয়ার মতো সময় এখনও আসেনি। তবে মিলনায়তনগুলো নিয়মিতভাবে পরিষ্কার করে রাখা হচ্ছে। যাতে স্বাভাবিক পরিস্থিতি হলে সঙ্গে সঙ্গে অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব হয়। আপাতত সরকারী নির্দেশনা মেনে সবকিছু করা হচ্ছে। যখন মনে হবে পরিস্থিতি ঠিক হয়েছে, তখন আমরা নিজেদের অনুষ্ঠান আয়োজনসহ মিলনায়তনগুলো ভাড়া দেব। কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন,বর্তমানে পরিস্থিতি অনুযায়ী একাডেমির কর্মকা- চলছে। করোনাচলাকালীন বিভিন্ন জেলা শিল্পকলা একাডেমির অসম্পন্ন কাজগুলো অনলাইন সভার মাধ্যমে সম্পন্ন করেছি। পাশাপাশি অনলাইনে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে। শিল্পীদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে একাডেমির ফেসবুকে পেজে প্রতিদিন ‘আর্ট এগেইনস্ট করোনা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হচ্ছে দিনের বিভিন্ন সময়ে। সেখানে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের শিল্পীদের ঘরে বসে ধারণ করা নাচ, গান ও আবৃত্তি পরিবেশিত হচ্ছে। এছাড়া এপ্রিল ও মে মাসে একাডেমি নির্মিত ১৮ জন বরেণ্য শিল্পী-সাহিত্যিকের জীবন ও কর্ম নিয়ে তথ্যচিত্র সম্প্রচারিত হয়েছে ইউটিউবে।
×