বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষায় সবাইকে আবারও সতর্ক ও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, সবাই সচেতন থাকলে কোভিড সংক্রমণ রোধ সহজ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। করোনা যাত্রী-মালিক-শ্রমিককে আলাদাভাবে চিনবে না। নিজেদের স্বার্থেই সচেতনতা জরুরী। তাই করোনার সংক্রমণরোধে সবাইকে দৃঢ় মনোবল নিয়ে নিজ নিজ গৃহ এবং কর্মস্থলে সচেতনতার প্রাচীর নির্মাণ করতে হবে।
মঙ্গলবার সংসদ ভবন এলাকার সরকারী বাসভবন থেকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন-বিআরটিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে এ আহ্বান জানান। গণপরিবহনে প্রথম দিন স্বাস্থ্যবিধি মানায় পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সোমবার থেকে শর্তসাপেক্ষে সারাদেশে গণপরিবহন চলছে। প্রথম দিনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও স্বাস্থ্যবিধি না মানারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মন্ত্রী জানান, অর্ধেক বা তার চেয়ে কম যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলেছে। অনেকের ভাড়া সমন্বয় নিয়ে শঙ্কা ছিল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে জনগণের প্রতি মানবিক আচরণ এবং সঙ্কটে ইতিবাচক সাড়া দেয়ার মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠনসহ সংশিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, অনেকে মনে করছেন যাত্রী সংখ্যা বাড়লে পরিবহনগুলো অর্ধেক আসন খালি রাখার শর্ত মানবে না। জনগণের এই আশঙ্কা থেকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের নিজেদের মুক্ত রাখতে হবে। গাড়িতে ওঠার আগে ও নামতে প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে আবার অনুরোধ করছি।
যাত্রীদের আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সচেতনতা বোধ ও সামাজিক দূরত্ব যথাযথ প্রতিপালনের মধ্য দিয়ে আমরা এ সংক্রমণ রোধ করতে পারি। নিজেদের অবহেলা ও শৈথিল্য দুর্যোগ আরো ঘণীভূত হতে পারে। তিনি বিআরটিসি বাসে ট্রাকিং ডিভাইস স্থাপন ও ডিজিটাল টিকেটিং চালুর উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশ প্রদানের পাশাপাশি অনিয়ম ও দুর্নীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসে বিআরটিসিকে লাভের ধারায় ফিরিয়ে আনার আহ্বানও জানান।
বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, একটি দল করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে একই বক্তব্য দিয়ে আসছে। অনবরত সমালোচনার ভাঙ্গা রেকর্ড বাজাচ্ছে বিএনপি। অন্ধ সমালোচনা, নেতিবাচকতা আর মিথ্যাচারের বৃত্ত থেকে তারা বেরতে পারছে না। প্রাণঘাতী করোনা বদলে দিচ্ছে বিশ্ব। বদলে দিচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ সৃষ্টাচার। কিন্তু এ দলটিকে বদলাতে পারেনি। তারা নিজেদের মধ্যকার সমন্বয়হীনতা না দেখে অন্যত্র সমন্বয় আছে কিনা তা খুঁজে বেড়ায়। তিনি বলেন, নেতিবাচক ও দায়িত্বহীন রাজনীতির জন্য ইতোমধ্যে তারা (বিএনপি) রাজনীতির আইসোলেশনে পৌঁছে গেছে। বিষোদগারের ভাইরাসে আক্রান্ত বিএনপি ভাল কাজ দেখতে পায় না। তাদের মনে ছড়িয়ে পড়েছে নেতিবাচকতার সংক্রমণ।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব বলেছেন, সরকার নাকি কানে তুলো দিয়েছে! আমি বলতে চাই সরকারের ষষ্ঠ ইন্দ্রীয় সক্রিয় আছে। বরং আপনারাই দেখতে পাচ্ছেন না অসহায় কর্মহীন মানুষের কষ্ট। জীবন রক্ষায় ও জীবিকার সমন্বয়। দেখতে পাচ্ছেন না সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধির নিরলস প্রয়াস। চোখ বন্ধ রাখলে দেখতে পাওয়া যায় না। চোখের সামনে থেকে মরচে ধরার চশমা সরিয়ে ফেলুন, তবে সরকারের কার্যক্রম দেখতে পাবেন। তিনি আরও বলেন, বিএনপির দৃষ্টিসীমায় অবৈধ ক্ষমতার মসনদ আর দুর্নীতির পাহাড়। তাই তারা সরকারের ইতিবাচক কিছু দেখতে পায় না।
