ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীর ২১৫ স্পটের ৩১টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ ঢাকা বিভাগে আক্রান্ত ৭০ ভাগের বেশি, রাজধানীতে ৫১ ভাগ সবচেয়ে কম আক্রান্ত বরিশাল বিভাগে

অতি ঝুঁকিপূর্ণ ৩৬ জেলা ॥ করোনায় ১৩ জেলা ঝুঁকিপূর্ণ, কম ১৫ জেলা

প্রকাশিত: ২২:২৮, ৩ জুন ২০২০

অতি ঝুঁকিপূর্ণ ৩৬ জেলা ॥ করোনায় ১৩ জেলা ঝুঁকিপূর্ণ, কম ১৫ জেলা

রাজন ভট্টাচার্য ॥ দেশের সকল জেলার মধ্যে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত বিবেচনায় রাজধানীসহ অতি ঝুঁকিপূর্ণ ঢাকা বিভাগের ১১টি মিলিয়ে অন্তত ৩৬টি জেলা। এসব জেলায় রোগীর সংখ্যা ১০০ থেকে প্রায় ১৭ হাজার পর্যন্ত। ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনায় রয়েছে এমন জেলার সংখ্যা ১৩টি। এসব জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫১ থেকে ১০০’র মধ্যে। এক থেকে ৫০ জন আক্রান্ত এমন জেলার সংখ্যা ১৫টি। এসব জেলা তুলনামূলক কম ঝুঁকিপূর্ণ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী ঢাকা বিভাগে আক্রান্তের হার ৭০ ভাগের বেশি। মোট আক্রান্তের প্রায় ৫১ ভাগ। এখন পর্যন্ত বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম শূন্য দশমিক ৯০ ভাগ আক্রান্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট পরীক্ষার তিন ভাগের দুই ভাগই হয়েছে ঢাকা মহানগরীতে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত জেলার মধ্যে রয়েছে, ঢাকা মহানগর, ঢাকা জেলা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, রংপুর, ময়মনসিংহ, মুন্সীগঞ্জ, নোয়াখালীসহ বেশ কয়েকটি জেলা। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, করোনা সংক্রমণের মধ্যেই সবকিছু খুলে দেয়া হলেও রোগী বিবেচনায় সারাদেশকে জোনভিত্তিক ভাগ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। লাল, হলুদ ও সবুজ এই তিন জোনে ভাগ করা হতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শতাধিকের বেশি রোগী থাকলে রেড জোন, ৫১-১০০ থাকলে হলুদ ও ১-৫০ পর্যন্ত সবুজ জোন করা যেতে পারে। এই হিসাব অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হলে রোগীর সংখ্যা কমতে পারে। তবে ঢাকা মহানগরীতে মানুষের ঘনত্ব বেশি হওয়ায় এখানে জোন ভিত্তিক ভাগ করে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন খুবই চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন তারা। তবে যেসব এলাকায় সংক্রমণের মাত্রা বেশি সেসব এলাকা লকডাউন করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে বিশদ পরিকল্পনা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তারা। বিভাগভিত্তিক পরিসংখ্যান ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতরের মঙ্গলবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সকাল আটটা পর্যন্ত সারাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৪৪৫ জন। এ দিন আক্রান্ত হয়েছে দুই হাজার ৯১১ জন, মৃত্যু হয়েছে ৩৭ জনের। এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ৭০৯ জনে গিয়ে ঠেকেছে। আট মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী ধরা পড়েন। এরপর থেকে মঙ্গলবারই সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছেন। পরীক্ষাও হয়েছে বেশি। ৩১ মে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা সিটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ৬৮৮। যা মোট আক্রান্তের ৫০ ভাগের বেশি। ঢাকা বিভাগে ছয় হাজার ৪৪১ রোগী মিলিয়ে মোট আক্রান্তের ১৯ দশমিক ৫৯। সব মিলিয়ে ঢাকা বিভাগে মোট আক্রান্তের মধ্যে ৭০ ভাগের বেশি। এ ছাড়া চট্টগ্রামে রোগীর সংখ্যা ১৫ হাজার ৩৯০ জন। যা মোট আক্রান্তের ১৬ ভাগের কিছু বেশি। সিলেটে আক্রান্ত ৭৩৫ জন যা মোট আক্রান্তের দুই দশমিক ২৪ ভাগ, রংপুরে ৯৩৪ জন যা মোট আক্রান্তের দুই দশমিক ২৮ ভাগ, খুলনায় ৫৯১ জন যা মোট আক্রান্তের এক দশমিক ৮০ ভাগ, ময়মনসিংহে ৯৯৫ জন যা মোট আক্রান্তের তিন দশমিক ০৩ ভাগ। বরিশালে ২৯৭ জন যা মোট আক্রান্তের শূন্য দশমিক ৯০ ভাগ। সবশেষ রাজশাহী বিভাগে ৮০৬ জন রোগী। যা মোট আক্রান্তের হিসেবে দুই দশমিক ৪৫ ভাগ। ৩১ মে পর্যন্ত সারাদেশে কোভিড-১৯ পরীক্ষা হয়েছে তিন লাখ ২০ হাজার ২৬৯টি। এরমধ্যে এ দিন পর্যন্ত ঢাকায় আট হাজার ৩১৭টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা হয় সাড়ে সাত হাজারের বেশি। ঢাকা সিটিতে ঐদিন পর্যন্ত মোট পরীক্ষা হয় দুই লাখ সাত হাজারের বেশি। বাদবাকি জেলাগুলো থেকে এদিন চার হাজার ৪৮৭টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা হয়েছে তিন হাজার ৮৫৯টি। সারাদেশে ৩১ মে রিপোর্ট দেয়া পর্যন্ত কোভিড-১৯ পরীক্ষা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৭৯টি। অর্থাৎ তিন ভাগের প্রায় দুইভাগই পরীক্ষা হয়েছে রাজধানী ঢাকায়। ঢাকার ২১৫ এলাকার মধ্যে ৩১ স্পটে রোগী বেশি ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতরের ৩১ মে পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সারাদেশের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। দুই কোটির বেশি মানুষের এই শহরে জনসংখ্যার ঘনত্বের হার বেশি হওয়ায় সংক্রমণও বেশি বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। শহরের ২১৫টি এলাকায় পাওয়া গেছে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী। এরমধ্যে অন্তত ১১টি এলাকা রয়েছে যেখানে রোগীর সংখ্যা দুই থেকে চার শতাধিকের বেশি। আর শতাধিক রোগী আছে এমন এলাকার সংখ্যাও ১১টির বেশি। সবচেয়ে বেশি রোগী চিহ্নিত হওয়া এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে, মহাখালীতে ৪০৮ জন। এছাড়াও আগারগাঁওয়ে ৯৬, আজিমপুরে ৮১, বাবুবাজারে ১৬১, বাড্ডায় ১৬৭, বনানীতে ৮২, বাসাবোয় ১০২, ধানম-িতে ২২৭, গুলশানে ১৩০, যাত্রাবাড়িতে ৩৫৪, বংশালে ১০৭, চকবাজারে ৮১, গে-ারিয়ায় ১২৩, হাজারীবাগে ৯৪, কাকরাইলে ২৯৯, খিলগাঁওয়ে ১৮৮, মালিবাগে ১১৪, লালবাগে ১৮১, মীরপুরে-১-২-৬-৭-১০-১১-১২-১৩-১৪ মিলিয়ে রোগীর সংখ্যা ৩৯৬ জন, মগবাজারে ২২৭, মোহাম্মদপুরে ৩৩৭, মুগদায় ৩৩০, রাজারবাগে ২১৫, রামপুরায় ১৪২, রমনায় ৭১, শাহবাগে ৯২, শামলীতে ৮৯, শের ই বাংলা নগরে ৮১, তেজগাঁওয়ে ২১২, উত্তরায় ৩১৫ ও ওয়ারীতে ১০৫ জন। মোট ২১৫টি স্পটের মধ্যে ৩১টিতে রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া ৯০টি স্পট রয়েছে যেখানে রোগীর সংখ্যা এক থেকে ১০ জন। বাদবাকি এলাকায় রোগীর সংখ্যা ১১ থেকে ৭০ জন জন পর্যন্ত। অর্থাৎ আক্রান্ত বিবেচনায় এলাকাভিত্তিক জোন ভাগ করে পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। ঢাকা বিভাগের সব জেলাই রেড জোন ॥ ঢাকা বিভাগের ১৩টি জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৬ হাজার ৬৮৮ রোগী ঢাকা মহানগরীতে। এরপর ঢাকা জেলায় রোগীর সংখ্যা এক হাজার ৭৬ জন। গাজীপুরে এক হাজার ৬৫, নারায়ণগঞ্জে তিন হাজার ৪৭, মুন্সীগঞ্জে ৭৫৭, নরসিংদীতে ১৮১, ফরিদপুরে ২২৩, গোপালগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জে ২৩৩ জন করে, মাদারীপুরে ১২৪, মানিকগঞ্জে ১৪২ জন রোগী পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে ঢাকা বিভাগের সবকটি জেলাই ঝুঁকিপূর্ণ। অর্থাৎ রেড জোন। জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় দিন দিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এই অবস্থায় সহসাই অতিঝুঁকির তালিকা থেকে এসব জেলাকে বের করে আনা খুবই কষ্টকর। চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার মধ্যে আটটিতে রোগি বেশি ॥ চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার মধ্যে আটটি জেলায় সর্বনি¤œ রোগীর সংখ্যা দেড় শতাধিক আর সর্বোচ্চ রোগী প্রায় আড়াই হাজার। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ৩১ মে তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চট্টগ্রামে দুই হাজার ৪৪১ জন, কক্সবাজারে ৭৩৪, কুমিল্লায় ৮৪৬, নোয়াখালী ৬২৬, ফেনী ২১৬, চাঁদপুর ১২৭, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১১৬, লক্ষীপুরে ১৪১। এর বাইরে খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি জেলায় ৩৬-৬৫ জন পর্যন্ত রোগী রয়েছে। এই বিভাগে রেড আর গ্রীন জোন করা যেতে পারে। রোগী সংখ্যা মাঝামাঝি না থাকায় হলুদ জোন করার সুযোগ নেই। সিলেট বিভাগের চার জেলাই রেড জোন ॥ চারটি জেলা নিয়ে গঠিত সিলেট বিভাগে সর্বনি¤œ রোগীর সংখ্যা ১০০। এরমধ্যে সিলেটে সবচেয়ে বেশি ৩৪৭, হবিগঞ্জে ১৬৮,সুনামগঞ্জে ১২০ ও মৌলভীবাজারে ৩১ মে পর্যন্ত ১০০ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে। রংপুর বিভাগের তিন জেলা অতি ঝুঁকিপূর্ণ, দুটি হতে পারে হলুদ জোন ॥ আট জেলা নিয়ে গঠিত রংপুর বিভাগে তিন জেলায় রোগীর সংখ্যা ১০০ বেশি। তাই তিনটি জেলাই রেড জোন হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে রংপুর ৪২৭, নিলফামারী ১০০ ও দিনাজপুরে ১৪৩ জন। এর বাইরে গাইবান্ধা ৪৮, লালমনিরহাট, ৩৮, পঞ্চগড় ৪৯, ঠাকুরগাঁও ৬১ ও কুড়িগ্রামে ৬৮। এই বিবেচনায় ৫০ রোগীর কম জেলা তিনটি হতে পারে গ্রীন জোন আর ৫০ বেশি রোগী থাকা জেলা বাকি দুটি জেলা হতে পারে হলুদ জোন। খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় হবে তিন জোন ॥ খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় কমবেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তের বিবেচনায় লাল, হলুদ ও সবুজ জোন তিনটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে পুরো বিভাগকে। এরমধ্যে খুলনায় রোগীর সংখ্যা ৭৬, যশোর ১৪৮, কুষ্টিয়া ৬৮, চুয়াডাঙ্গা ৯৩, নড়াইল ২৬, বাগেরহাট ৩৫, মাগুড়া ২৪, মেহেরপুর ২৫, ঝিনাইদহ ৫০, সাতক্ষীরায় ৪৬ জন। ১০ জেলার একটি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, বাকি চার জেলা হলুদ ও অন্য পাঁচটি জেলা সবুজ ধরে নিয়ে প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে। ময়মনসিংহের চার জেলার তিনটি অতিঝুঁকিপূর্ণ ॥ ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার মধ্যে তিনটিতেই করোনা রোগীর সংখ্যা বেশি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ময়মনসিংহে ৪৫১, জামালপুরে ২০৫, নেত্রকোনায় ২১২ ও শেরপুরে ৮৭ জন। বরিশালের সবকটি জেলাই ঝুঁকিপূর্ণ-কম ঝুঁকিপূর্ণ ॥ বরিশাল বিভাগের ছয়টি জেলার মধ্যে সবকটিতেই এখন পর্যন্ত মাঝারি মানের সংক্রমণ হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ৩১মের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এই বিভাগের কোন জেলায় এখন পর্যন্ত শত রোগী ছাড়ায়নি। বরগুনায় ৬৭, বরিশাল ৭০, পটুয়াখালী ৮২, ভোলা ২৩, পিরোজপুর ২৫, ঝালকাঠিতে ৩০ জন। এই হিসেবে বিভাগের তিন জেলা ঝুঁকিপূর্ণ বাকি তিনটি কম ঝুঁকিপূর্ণ। রাজশাহীর আট জেলার তিনটি অতি ঝুঁকিপূর্ণ ॥ রাজশাহী বিভাগের আট জেলার মধ্যে তিন জেলা অতি ঝুঁকিপূর্ণ। বাকি তিনটি ঝুঁকিপূর্ণ এর বাইরে দুই জেলা কম ঝুঁকিপূর্ণ। এরমধ্যে জয়পুরহাটে রোগীর সংখ্যা ১৪০ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৬২, বগুড়ায় ২১৬, নওগাঁয় ১৭৯, রাজশাহীতে ৭১, সিরাজগঞ্জে ৩৫, পাবনায় ৪৫ ও নাটোরে ৫৮ জন। ১৫ জেলা হতে পারে গ্রীন জোন ॥ কমবেশি সব জেলাতেই পাওয়া গেছে কোভিড-১৯ রোগী। এরমধ্যে কোন কোন জেলা আছে যেখানে সংক্রমণের মাত্রা একেবারেই উর্ধগতি। আবার এমন জেলা আছে যেখানে করোনার রোগী পাওয়া গেলেও সংখ্যা একেবারেই কম। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণ দেখা গেছে, করোনায় সবচেয়ে কম রোগী ভোলা জেলায় ২৩ জন। এরপর মাগুরায় ২৫, পাবনায় ৪৫, ঝালকাঠিতে ৩০, নড়াইলে ২৬, গাইবান্ধায় ৪৮, পঞ্চগড়ে ৪৯, বান্দরবানে ৩৬, টাঙ্গাইলে ৫২, সিরাজগঞ্জে ৩৫, পিরোজপুরে ২৫, বাগেরহাটে ৩৫, লালমনিরহাটে ৩৮, খাগড়াছড়িতে ৪২ ও রাঙ্গামাটিতে ৬৫ জন। এসব জেলাগুলোর মধ্যে কোন্ উপজেলায় কতজন আক্রান্ত এর সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব জেলায় করোনার রোগী কম থাকায় সবকটিকে গ্রীন জোন হিসেবে সরকার বেছে নিয়ে সংক্রমণ রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে। জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাঃ লেনিন চৌধুরী বলেন, সংক্রমণ যখন সবচেয়ে বেশি তখন প্রতিরোধের চিন্তা করা হচ্ছে। এটা কতটুকু কার্যকর হবে তাই দেখার বিষয়। তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, ঢাকার যেসব এলাকায় সংক্রমণ বেশি সেখানে পুরোপুরি লকডাউন করা যেতে পারে। তবে তা মানাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর ও পরিকল্পিত পদক্ষেপ নিতে হবে। এর বাইরে দেশের বিভিন্ন জেলায় ১-৫০, ৫১-১০০, ১০১ থেকে বাদবাকি আক্রান্ত হিসাবে জোন ভাগ করে পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে দুই মাসের লকডাউন শেষে সব খুলে দেয়ার পর ফের ভাইরাস সংক্রমণ আটকাতে নতুন পরিকল্পনা নিচ্ছে সরকার। এই পরিকল্পনার আওতায় সারা দেশকে লাল, সবুজ ও হলুদ জোনে ভাগ করা হবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। লকডাউনের পর সীমিত পরিসরে অফিস খোলার দ্বিতীয় দিন সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠক শেষে তিনি একথা বলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার অনুযায়ী সারা দেশকে রেড, ইয়েলো ও গ্রীন জোনে ভাগ করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশেষজ্ঞ টিম নিয়ে গত পরশুদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিস্তারিত এ বিষয়ে আলাপ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দিয়েছেন সে পরামর্শ অনুযায়ী আমরা আজ বসলাম। তিনি বলেন, আমরা একটা প্ল্যান তৈরি করব। প্ল্যান নীতিগতভাবে এখানে (সভায়) আলোচনা হয়ে গেছে। আমরা এখন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা দিয়ে দেব। তখন মেয়র, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং আমরাও (স্বাস্থ্য) থাকব। সবাই মিলে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করব। কী পরিকল্পনা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের পরিকল্পনা এখন পর্যন্ত এটাই। এখন বিশেষজ্ঞরা কীভাবে বাস্তবায়ন করবে বা জোনিং করবে সেটা তারা জানে। এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকা, নারায়াণগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রাম সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত হয়েছে। যদি কোন জোন রেড হয়ে থাকে সেগুলোকে রেড করা হবে। ‘বাংলাদেশের অধিকাংশ জেলা ও উপজেলা এখনও অনেকাংশে ভাল আছে। আমরা সেটা ভাল রাখতে চাই। ভাল রাখার জন্য আজকের এই সভা। এলাকাভিত্তিক লকডাউনের সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, জোনিংয়ের মাধ্যমেই সব করা হবে। যে জোনের মধ্যে খুব বেশি সংক্রমিত হবে; ছোট্ট এলাকা, ঢাকার ভেতরে ধরেন একটা ছোট্ট এলাকা-সেখানে হয়ত একটি এলাকাকে বলব যে, এই এলাকা বন্ধ থাকবে এই কয় দিনের জন্য। এভাবে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেবে, সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করব।
×