ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে বিনিয়োগ করবে ব্যাংক

প্রকাশিত: ২১:২১, ৩ জুন ২০২০

শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে বিনিয়োগ করবে ব্যাংক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দুই মাসেরও বেশি সময় পর গত রবিবার থেকে পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু করেছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ। ব্যাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী পুঁজিবাজারকে সাপোর্ট দিতে বিনিয়োগে আগ্রহী সরকারী ব্যাংকগুলো। বাজারকে সাপোর্ট দিতে ইতোমধ্যে ব্যাংকগুলো বিনিয়োগও শুরু করেছে। তবে করোনা পরিস্থিতিতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দেখেশুনে বিনিয়োগ শুরু করার পক্ষপাতী। জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের চেয়ে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে বেসরকারী ব্যাংকগুলো। এই মুহূর্তে দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে জানিয়েছে বেশ কয়েকটি বেসরকারী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের অপেক্ষায় রয়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তাদের প্রত্যাশা, ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগে ফিরলে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল হবে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরবে। এদিকে, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় গত সোমবার বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। দুই পক্ষের ওই বৈঠকে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। এছাড়া নগদ লভ্যাংশ প্রদানে ব্যাংকগুলোকে নমনীয় হওয়া এবং মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর গত দুই মাসের সুদ মওকুফের সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে বলে বৈঠক সূত্র নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, বিভিন্ন কারণে ধরাবাহিকভাবে দীর্ঘদিন পুঁজিবাজারে মন্দা পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি সরকারের সর্বোচ্চ মহলের নির্দেশে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য সম্মিলিতভাবে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের জন্য দেশের ৫৯টি তফসিলি ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে প্রতিটি তফসিলি ব্যাংক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠনের সুযোগ পেয়েছে ব্যাংকগুলো। প্রাপ্ত তথ্য মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা জারির পর সর্বশেষ গত ২৪ মার্চ পর্যন্ত ১৬টি ব্যাংক পুঁজিবাজারে ১৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। ব্যাংকগুলো হলো- সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, বিডিবিএল, পূবালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও সাউথ ইস্ট ব্যাংক। অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ সামস-উল ইসলাম বলেন, অবশ্যই আমরা বিনিয়োগ করব। সরকারী ব্যাংক হিসেবে এটা আমাদের দায়িত্ব। এর আগেও আমরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেছি। আমরা লাভ-লোকসান বুঝি না। আমরা চাই অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে। এ ক্ষেত্রে আমরা বিনিয়োগ করলে পুঁজিবাজারসহ সার্বিক অর্থনীতি ভাল থাকবে। মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, এ মুহূর্তে আমরা প্রণোদনা প্যাকেজগুলো বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। প্রণোদনার ইস্যুগুলো সমাধান হোক তারপর পুঁজিবাজারের ওপর গুরুত্ব দেয়া হবে। বাণিজ্যিকগুলো এখন তার বেসিক দায়িত্ব পালন করছে। বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সরকারের নির্দেশে ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগের সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। করোনা পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগে ফিরলে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল হবে এবং তারল্য সঙ্কট কমবে।
×