ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীর সর্বত্র জনসমাগম স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই

প্রকাশিত: ১৫:২৩, ২ জুন ২০২০

রাজশাহীর সর্বত্র জনসমাগম স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ লকডাউন তুলে নেওয়ার পর প্রাণচঞ্চলতা ফিরে পেয়েছে বিভাগীয় শহর রাজশাহী। নগরীর সর্বত্র এখন জনসমাগম। সকাল থেকে নগরীর গুরুত্বপুর্ন এলাকায় লোক সমাগম চোখে পড়ার মত। তবে কোথাও নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার চিহ্ন। বাস-ট্রাক, অটোরিক্সাসহ ছোট যানবাহন চলাচলের ফাঁকা শহরে আবার রূপ নিয়েছে আসল চেহারায়। অফিস আদালতেও বাড়ছে ভীড়। খুলেছে দোকানপাট, মার্কেট। তবে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধির ঘাটতি লক্ষ্য করা যায়। অনেকেই মাস্ক ছাড়াই বাইরে বের হয়ে পড়ছেন। রাজশাহীর ছোটবড় দোকান থেকে শুরু করে শপিংমল পর্যন্ত খোলা শুরু হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষে বলা হচ্ছে বাজার থেকে শুরু করে নগরীর প্রতিটি জায়গায় সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দীর্ঘ ছুটির পর সরকারী অফিস আদালত কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে। নগরীর রাস্তাঘাটও সরগরম হয়ে উঠেছে। আদালত পাড়ায় বেড়েছে ভীড়। যানবাহন চলার কারণে নগরীর বাইরে থেকে অফিস আদালতে আসতে শুরু করেছে লোকজন। এতে শুধু আদালত পাড়াতেই নয়, বিভিন্ন অফিসেও লোকজনের আনাগোনা লক্ষ্যনীয়। একইসঙ্গে রাজশাহীতে খুলতে শুরু করেছে ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার। এসব চিকিৎসালয়ে লোকজনদের উপস্থিতি বাড়ছে। তবে নগরীর বা বাইরে থেকে আসা লোকজনের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। আজ মঙ্গলবার নগরীর সাহেব বাজারের চিত্র দেখা যায় পুরোটাই উল্টো। সকাল থেকে সাহেব বাজারে অটোরিক্সার জ্যাম চোখে পড়ে। বিভিন্ন পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করলেও জ্যাম দুর করতে তাদের হিমশিম খেতে হয়েছে। অটোরিক্সায় সর্বোচ্চ চারজনের বেশি যাত্রী নেয়া নিষেধ থাকলেও দেখা গেছে ৫ থেকে ৬জন পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। এছাড়াও নগরী থেকে বাইরের উপজেলায় গাদাগাদি করে যাত্রী নিয়ে অটোরিক্সা চালকদের যেতে দেখা যায়। লোকাল বাসেও একই অবস্থা। ঠাসাঠাসি করে যাত্রী পরিবহন চলছে। নগরীতে যেসব দোকানপাট বন্ধ ছিল তা প্রায় সব খোলা হয়েছে। মঙ্গলবার নগরীর নিউমার্কেটে প্রায় দোকানপাট খোলা ছিল। এছাড়া নগরীর আরডিএ মার্কেটের দোকানপাট খোলা হয়েছে। মোড়ে মোড়ে চা, পান, সিগারেটের দোকান থেকে শুরু করে প্রায় সব দোকানপাট খোলা হলেও কোথাও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। সবখানে স্বাস্থবিধি মানার ক্ষেত্রে হ-য-ব-র-ল অবস্থা তৈরি হয়েছে। এতে ঝুঁকির মুখে পড়েছে জনগোষ্ঠি। রাজশাহীতে সোমাবার সকাল থেকে চলাচল শুরু করেছে গণপরিবহন। এসব গণপরিবহনকে স্বাস্থবিধি মেনে চলাচল করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু তা হচ্ছে না। গাড়ির চালক থেকে শুরু যাত্রীরা কেউই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। রাজশাহী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, আশেপাশের উপজেলাগুলো থেকে রাজশাহী আসছে বাস। রাজশাহী থেকেও ছেড়ে যাচ্ছে কাছে ও দূরপাল্লার বাস। বাস টার্মিনালে যাত্রীদের বেশ ভিড়। টিকেট কাউন্টারগুলোতে মানা হচ্ছে না শারীরিক দূরত্ব। সরকারের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে টিকেট বিক্রির কথা থাকলেও বেশি ভাগ ক্ষেত্রে তা কাজে আসছে না। সরকারি নির্দেশনায় বাসে উঠার আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিস্কার করার কথা। তবে অনেক বাস কাউন্টারে নামে মাত্র স্যানিটাইজার রাখা হয়েছে। এসব স্যানিটাইজার ব্যবহারে আগ্রহ দেখাচ্ছে না যাত্রীরা। যাত্রীদের ওঠানোর আগে তার শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করার যন্ত্র নেই অনেক বাসে। নির্দেশনায় যাত্রার শুরুতে এবং শেষে বাধ্যতামূলকভাবে গাড়ির অভ্যন্তরভাগসহ পুরো গাড়িতে জীবাণুনাশক স্প্রে করার কথা থাকলেও কোথাও তার বাস্তবায় চোখে পড়েনি। টার্মিনালে বাস আসার সঙ্গে সঙ্গেই ফের নতুন করে যাত্রী তুলে আবার রওনা দিচ্ছে চালকরা। এমনকি নেমে যাওয়া যাত্রীর বসা সিটও পরিস্কার করছে না তারা। এক সিট পরপর যাত্রী বসানো হলেও ওঠা-নামার সময় শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত হচ্ছে না। এমন কি বাসস্ট্যান্ড ছাড়া যেখানে সেখানে যাত্রী উঠা-নামা করাতে দেখা গেছে। ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বাক-বিতন্ডা জড়াতে দেখা গেছে অনেক বাসশ্রমিককে। রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন জানান, আমরা পর্যাপ্ত চেষ্টা করছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে। এখানে সবধরনের ব্যবস্থা নেয়া আছে। বাস চালকদের নিদের্শনাও দেয়া আছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে।
×