ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পরিস্থিতির অবনতি হলে কঠিন সিদ্ধান্ত ॥ কাদের

প্রকাশিত: ২২:৫২, ২ জুন ২০২০

পরিস্থিতির অবনতি হলে কঠিন সিদ্ধান্ত ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অফিস ও গণপরিবহন খুলে দেয়া হলেও অসচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি হলে জনস্বার্থে সরকার আবারও কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সোমবার সংসদ ভবন এলাকায় নিজের সরকারী বাসভবন থেকে সেতু বিভাগের কর্মকর্তা ও প্রকল্প প্রধানদের সঙ্গে ভিডিও কলে এসব কথা বলেন তিনি। দুই মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ৩ মে থেকে অফিস খোলার পাশাপাশি চালু হয়েছে গণপরিবহন। সর্বোচ্চ সংক্রমণের মধ্যে সবকিছু স্বাভাবিক করে দেয়া নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা চলছে। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে বারবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কতটাকু স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব হবে এ প্রশ্ন রয়েই গেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে আওয়াম লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পরিস্থিতি অবনতি হলে সরকার আরও কঠোর হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি মালিকদের স্বাস্থ্যবিধি এবং শর্ত মেনে গাড়ি চালানোর অনুরোধ করছি। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ ভিজিলেন্স টিম, মোবাইল কোর্টসহ টার্মিনাল কর্তৃপক্ষকে অর্ধেক আসন খালি রাখা, বর্ধিত ৬০ শতাংশ ভাড়া এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও মাস্ক পরিধানের বিষয়ে তদারকির আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি যাত্রী সাধারণকে অনুরোধ করছি আপনারা অতিরিক্ত যাত্রী হবেন না। অর্ধেক আসন খালি রাখুন। শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে টিকেট কাটুন। নিজে সংক্রমণ থেকে বাঁচুন অপরকে বাঁচান। হুড়োহুড়ি, বাড়তি যাত্রী হওয়া, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে দেশকে আরও সঙ্কটে নিমজ্জিত করতে পারে। আমি পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্কটে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপনের অনুরোধ জানাচ্ছি। আমাদের অসচেতনতা এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানায় পরিস্থিতির যদি আরও অবনতি হয় তাহলে জনস্বার্থে সরকার আবারও কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা উদ্বেগজনক পর্যায়েও লকডাউন শিথিল করছে এবং কোথাও তুলে নিয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পবিত্র মক্কা-মদিনা-মসজিদুল আকসাও ধীরে ধীরে মুসল্লিদের জন্য ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। জীবনের পাশাপাশি জীবিকা দীর্ঘমেয়াদী বন্ধ থাকলে জীবনের গতিপথে নেমে আসবে স্তব্ধতা। অর্থনীতি হয়ে পড়বে স্থবির। তাই পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান বেছে নিতে হবে। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতিতে সরকারের কর্মকা-ের বিরুদ্ধে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন মিথ্যাচারের’ বক্তব্য মহামারীর বিরুদ্ধে সামনে থেকে লড়া যোদ্ধাদের মনোবল নষ্ট করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, সরকার সঙ্কটের শুরু থেকে সকল দফতর ও সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে তুলে সংক্রমণ রোধ, আক্রান্ত দের চিকিৎসা, টেস্ট ক্যাপাসিটি বৃদ্ধিসহ ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আকস্মিক সঙ্কট মোকাবেলায় বিশ্বের উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে। আমরা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সঙ্কট সমাধানের সক্ষমতা বৃদ্ধি করছি। গড়ে তোলা হয়েছে সুসমন্বয়। তিনি বলেন, কেন্দ্র থেকে উপজেলা পর্যন্ত চিকিৎসা নেটওয়ার্কসহ সচেতনতা তৈরিতে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে সরকার। খাদ্য সহায়তা, আর্থিক সহায়তাসহ নানান উদ্যোগের ফলে আল্লার রহমতে এখন পর্যন্ত একজন মানুষ না খেয়ে মরেনি। শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্কট সমাধানের সাহসী ও মানবিক প্রয়াস প্রশংসিত হচ্ছে। আর বিএনপি খুঁজে পাচ্ছে সমন্বয়হীনতা। নিজেরা অসহায় কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়াতে নির্লজ্জভাবে ব্যর্থ হয়ে দায়িত্বহীন বক্তব্য রাখছে, বিষোদগার করছে, যা প্রকারান্তরে ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা ও আক্রান্তদের মনোবল নষ্ট করছে। তিনি আরও বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসন খালি রেখে গাড়ি চালনায় সরকার ভাড়া সমন্বয় করেছে এবং আজ থেকে শর্তসাপেক্ষে গণপরিবহন চলছে। এ সময় মন্ত্রী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ ভিজিল্যান্স টিম, মোবাইল কোর্টসহ টার্মিনাল কর্তৃপক্ষকে অর্ধেক আসন খালি রাখা, বর্ধিত শতকরা ৬০ শতাংশ ভাড়া এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনেচলা ও মাস্ক পরিধানের মতো বিষয়গুলো তদারকির আহ্বান জানান। ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্যের সময় মন্ত্রী করোনা সঙ্কটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রকল্প পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে নেয়ার জন্য প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। সেতু বিভাগের অধীন বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকদের বেতন ভাতা যথাসময়ে পরিশোধের বিষয়টিও তিনি তাঁর বক্তব্যে গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন। এছাড়া প্রকল্পে কর্মরত দেশী-বিদেশী সকল জনবলকে স্বাস্ব্যবিধি মেনে কাজ করার নির্দেশনা দেন। সকলকে দেশপ্রেম, নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রে শক্তিশালী টিমওয়ার্কের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও মানবিক নেতৃত্বে বাংলাদেশ করোনা সঙ্কট কাটিয়ে উঠবে বলেও আশা প্রকাশ করেন। এ সময় সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেনসহ সেতু বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তা ও প্রকল্প পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
×