ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফাঁকা ক্যাম্পাসে করোনা যোদ্ধারা

প্রকাশিত: ০১:১২, ৩১ মে ২০২০

ফাঁকা ক্যাম্পাসে করোনা যোদ্ধারা

সুনসান নীরবতা ১০১ একরের ক্যাম্পাসে। কোথাও নেই কারও ব্যস্ততা। নেই পরিচিত বন্ধু-বান্ধব, সহপাঠীদের আনাগোনা। এই নীরবতার মাঝে চলছে করোনাভাইরাসে ভয়হীন একদল যোদ্ধার সংগ্রাম। ল্যাবে ব্যস্ত সময় কাটছে তাদের। চলছে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার কাজ। পরিবার ছেড়ে ফাঁকা ক্যাম্পাসে কাটছে তাদের দিন। তারা জানে না কবে শেষ হবে এই যুদ্ধ। বলছিলাম নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) এর একদল করোনাভাইরাসে ভয়হীন যোদ্ধার কথা। নোবিপ্রবির অনুজীববিজ্ঞান বিভাগের আরটি পিসিআর ল্যাবে চলছে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার কাজ। এই নমুনা পরীক্ষার কাজ করছে নোবিপ্রবির বিভিন্ন বিভাগের ৪০ শিক্ষার্থী। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিয়োজিত আছে তারা। নোবিপ্রবির অনুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফিরোজ আহমেদের তত্ত্বাবধানে কাজ করছে এই স্বেচ্ছাসেবকরা। নোবিপ্রবি প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় গত ১১ মে থেকে শুরু হয় এই কার্যক্রম। এই ল্যাবে চলছে চাঁদপুর ,লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী অঞ্চলের করোনা নমুনা পরীক্ষার কাজ। নোবিপ্রবির ল্যাবে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের অনুমতি পাওয়ার পর তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করা হয় ল্যাব। এছাড়াও করোনা শনাক্তকরণের যাবতীয় বিষয়গুলোর ওপর প্রশিক্ষণ করানো হয় এই স্বেচ্ছাসেবকদের। এই প্রশিক্ষণ কাজে তত্ত্বাবধানে ছিলেন নোবিপ্রবির অনুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফিরোজ আহমেদ। স্বেচ্ছাসেবকরা জানান, ল্যাবে করোনাভাইরাসের শনাক্তকরণ কাজে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তারা করোনাভাইরাসের শনাক্তকরণ পরীক্ষার কাজ করছেন। করোনাভাইরাসের শনাক্তকরণ পরীক্ষার জন্য পিপিই, টেস্টিং কিট, গ্লাভস, মাস্ক ব্যবহার করে করা হচ্ছে। মোট ৩টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের কাজ চলছে। প্রতিদিন ২টি গ্রুপ পালাক্রমে ল্যাবে কাজ করছে। করোনাভাইরাসের শনাক্তকরণ পরীক্ষার পাশাপাশি রিপোর্ট তৈরি, পরিচ্ছন্নতার কাজসহ ল্যাবের যাবতীয় কাজ করে যাচ্ছেন এই স্বেচ্ছাসেবকরা। তারা আরও জানান, ফাঁকা ক্যাম্পাসে কাজ করার ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতা তাদের। ল্যাবে কাজ করার পাশাপাশি অবসর সময়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ক্যাম্পাসে আড্ডা দেয়া ও পরিবার, বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তারা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজেদের সুরক্ষার বিষয়ে সচেতনতা অবলম্বন করছেন। নিজেদের জীবনের অনিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও দৃঢ় মনোবল নিয়ে করোনা মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের মানুষের কল্যাণে করোনা মোকাবেলায় তাদের এই প্রচেষ্টা সফল হবে বলে প্রত্যাশা এই স্বেচ্ছাসেবকদের।
×