দক্ষিণ কোরিয়ায় স্কুল খোলার কয়েকদিনের মাথায় আবার বাধ্য হয়ে দুই শতাধিক স্কুল বন্ধ করতে হয়েছে। ভাইরাস সংক্রমণ নতুন করে বাড়ায় নিতে হয়েছে এ পদক্ষেপ। দেশটিতে বিধিনিষেধ শিথিল হতে শুরু করার পর হাজার হাজার শিক্ষার্থী স্কুলে ফিরেছিল। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার নতুন ৭৯ জনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। ৫ এপ্রিলের পর আক্রান্তের এ সংখ্যা সর্বোচ্চ। খবর আলজাজিরা অনলাইনের। শুক্রবার আক্রান্ত হয়েছে ৫৮ জন। এ নিয়ে দেশজুড়ে নতুন আক্রান্তের মোট সংখ্যা ১১ হাজার ৪০২ জনে দাঁড়িয়েছে। কোরিয়া টাইমসের খবরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, এ পরিস্থিতিতে বুচন শহরে মোট ২৫১টি স্কুল বন্ধ করতে হয়েছে। রাজধানী সিউলে আরও ১১৭টি স্কুল খোলার সময়ও পিছিয়ে দিতে হয়েছে। নতুন আক্রান্তদের বেশিরভাগই বুচনে শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স কোম্পানি কোপাং পরিচালিত একটি গুদামঘর থেকে সংক্রমিত হয়েছেন। সেখানে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধি ঠিকভাবে মানা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। গুদাম ঘরটির কর্মীদের জুতা ও জামাকাপড়ে কোভিড-১৯ এর চিহ্ন পাওয়ার কথাও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। সংক্রমণ বাড়তে থাকার মুখে আবারও সবকিছু শুক্রবার থেকে দু’সপ্তাহের জন্য বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সিউল এবং এর আশপাশের শহরগুলোতে বন্ধ হচ্ছে পার্ক, জাদুঘর, আর্ট গ্যালারি। লোকজনকে আবার জনসমাগম এড়িয়ে চলা এবং সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করে চলতে বলা হচ্ছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ টানা ৭ দিন ৫০ জনের বেশি করে বাড়তে থাকলে পরবর্তীতে আরও কড়াকড়ির পদক্ষেপ নেওা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
গতবছর ডিসেম্বরে চীনে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পরপরই দক্ষিণ কোরিয়ায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল। ওই সময় দক্ষিণ কোরিয়ায় সংক্রমণ অনেক বেশি থাকলেও পরে দেশটি আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছিল। ৬ মে থেকে ধীরে ধীরে দক্ষিণ কোরিয়া বিধিনিষেধ শিথিল করতে শুরু করে। চালু হতে থাকে ব্যবসা-বাণিজ্য, খুলতে শুরু করে স্কুল। কিন্তু সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহে আবার ধরা পড়েছে করোনাভাইরাসের গুচ্ছ সংক্রমণ। এ মাসের শুরুর দিকে সিউলের ইতেওনের নাইটক্লাব এবং বারগুলোতে যাওয়া এক যুবকের কাছ থেকে বেশ কয়েকজন ভাইরাস আক্রান্ত হন। ইতেওনে আক্রান্তের সংখ্যা ২৬৬ বলে জানিয়েছে ইয়োনহাপ বার্তা সংস্থা। এ সপ্তাহে নতুন আক্রান্তদের প্রায় ৯০ শতাংশই সিউল ও এর আশপাশের এলাকায় হওয়ায় জনবহুল রাজধানীতে ব্যাপকহারে ভাইরাসটির বিস্তার ঘটতে পারে বলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।