ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তবু ভাল আছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২০:৫২, ৩১ মে ২০২০

তবু ভাল আছে বাংলাদেশ

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার ‘সমস্যা’ প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘কেহ যখন রিক্তপাত্র লইয়া মাথায় হাত দিয়া ভাবিতে থাকে কেমন করিয়া তাহার পেট ভরিবে তখন তাহাকে এই কথাটি বলিলে তাহার প্রতি হিতৈষিতা প্রকাশ করা হয় না যে, ভাল করিয়া অন্নপান করিলেই ক্ষুধানিবৃত্তি হইয়া থাকে। এই উপদেশের জন্যই সে এতক্ষণ কপালে হাত দিয়া অপেক্ষা করিয়া বসিয়া ছিল না। সত্যকার চিন্তার বিষয় যেটা সেটাকে লঙ্ঘন করিয়া যত বড় কথাই বলি- না কেন, তাহা একেবারেই বাজে কথা।’ বাংলাদেশে কোভিড-১৯ ইস্যুতে অভিযোগ পার্টি ও সরকারের সম্পর্ক ঠিক এমনই। জাতির ক্রান্তিকালে সরকারকে সহযোগিতা তো দূরের কথা, মানুষের প্রতি সহানুভূতি-সমানুভূতি না জানিয়ে একের পর এক সমালোচনা করে যাচ্ছেন তারা। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কিন্তু বাজে কথার ফুলঝুড়ি আওড়াননি, নামসর্বস্ব উদ্যোগও গ্রহণ করেননি। বরং দেশ ও দশের কল্যাণে সত্যিকারের ‘বাস্তব সঙ্কল্প’ নিয়ে ত্রাণকর্তার ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত, প্রতি মুহূর্ত। বলার অপেক্ষা রাখে না, করোনাভাইরাস বিশ^জুড়ে মহামারী রূপে ধারণ করলেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এখনও সুদৃঢ় অবস্থায় রয়েছে। নিশ্চিত হয়েছে যথাযথ চিকিৎসা ব্যবস্থাও। যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় ফোর্বস ম্যাগাজিন দাবি করছে, শঙ্কা থাকা সত্ত্বেও বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে করোনার লাগাম টেনে ধরতে পেরেছে সেগুলোর নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যতম। বাংলাদেশের পাশাপাশি জার্মান, তাইওয়ান, আইসল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, ফিনল্যান্ড ও ডেনমার্কের কথা বলা হয়েছে ম্যাগাজিনটিতে। সেখানে আরও বলা হয়, করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, তা এখনও কার্যকর করতে পারেনি যুক্তরাজ্য। ম্যাগাজিনের তথ্য, প্রায় ১৬ কোটিরও বেশি মানুষের বসবাস বাংলাদেশে। সেখানে দুর্যোগ কোন নতুন ঘটনা নয়। আর এই করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেননি তিনি (শেখ হাসিনা)। ত্বরিত এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (উই ফোরাম) পুরো বিষয়টিকে ‘প্রশংসনীয়’ বলে উল্লেখ করেছে। তার নেতৃত্বেই সরকারী চাকরিজীবী থেকে কওমী মাদ্রাসা শিক্ষক, গার্মেন্টস কারখানা থেকে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কুটির শিল্প, জাহাজ শ্রমিক থেকে অসহায় দিনমজুর- দান-প্রণোদনা থেকে বিরত রাখেননি কাউকেই। ভয়াবহ সঙ্কট মোকাবিলায় ত্বরিত গতিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে পাঁচ হাজার ৫৪ জন নার্স। যাদের দেশের বিভিন্ন কোভিট-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে পদায়ন করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এ ছাড়াও ৩৯তম বিসিএসের অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে দুই হাজার চিকিৎসককে সহকারী সার্জন হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। করোনা-সঙ্কট মোকবিলার প্রশ্নে এত কিছুর পরও যখন সেই শেখ হাসিনা সরকারের গঠনবিরোধী সমালোচনা করা হয়, সত্যিই তখন অবাক হই। পৃথিবীর সাড়ে সাত শ’ কোটি মানুষ আজ এক সুতায় জীবনযাপন করছে। কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন ও সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং- এসব তাদের ভাষা। ‘স্টে হোম, স্টে সেফ’ তাদের নীতিমালা। সবার পরিবার ও পরিবারের বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ, চব্বিশ ঘণ্টার লাইফস্টাইল কিংবা অবসর কাটানোর ধরনগুলোও একই রকম। বৈশি^ক এমন পরিস্থিতিতে স্বভাবতই চিন্তা আসে, করোনা মোকাবেলায় বিশে^র অন্য দেশগুলো কী করছে, যেটা বাংলাদেশ করছে না। অথবা, কোভিড-১৯ থেকে পাশর্^বর্তী কিংবা উন্নত বিশে^র মানুষগুলো কতটা নিরাপদ, আর আমরা কতটা? বলে রাখা ভাল- করোনাভাইরাসের সঠিক ও স্বীকৃত চিকিৎসা বিশে^ এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। যা হয়েছে তা হলো রেমডেসিভির। ভাইরাসটির বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সেরা চিকিৎসা এটি। যদিও রেমডেসিভির রোগ ভাল করার ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চয়তা দিচ্ছে না, তার পরও আশাব্যঞ্জক। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ফুড এ্যান্ড ড্রাগ এ্যাডমিনিস্ট্রেশন এটাকে কোভিড-১৯-এর চিকিৎসায় ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে। আমাদের জন্য সুখবর হলো, বাংলাদেশও এই ওষুধ বাজারে এনেছে। এত দ্রুত দেশীয় প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এই ওষুধ তৈরির নজির পৃথিবীর আর কোন কোন দেশ স্থাপন করেছে- নিশ্চয়ই তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ায় যে চারটি বড় দেশ সফলভাবে কোভিড-১৯ মোকাবেলা করছে, এর মধ্যে শ্রীলঙ্কার পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। অর্থনীতি, রাজনীতিসহ নানাদিক থেকে শক্তিশালী হওয়া সত্ত্বেও মৃত্যুর হার এখনও বেড়েই চলেছে ভারত ও পাকিস্তানে। ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস আমহার্স্টের দুজন অধ্যাপক দীপঙ্কর বসু ও প্রিয়াঙ্কা শ্রীবাস্তব এক গবেষণার দেখিয়েছেন, বাংলাদেশে মৃত্যুর হার শুরুতে বেশি হলেও মাসখানেকের মধ্যে সরকার সেটিকে দুই শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। সেদিক থেকে ভারত-পাকিস্তানের অবস্থা বেশ শোচনীয়। আক্রান্তে প্রায় একই হারে এগিয়ে চলা দেশ দুটির মৃত্যু হার সাড়ে তিন শতাংশেরও বেশি। ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান অধ্যাপকদ্বয় বলছেন, নানা কারণেই বাংলাদেশ-ভারতের সাফল্যের ছবি আমেরিকা ও ইউরোপের সঙ্গে তুলনীয় নয়। বরং সঠিক তুলনা হতে পারে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর পরিস্থিতির সঙ্গে। সে বিবেচনায় বাংলাদেশ ভালো আছে, তুলানামূলক উন্নতি করছে। আজ যখন দেখি, উন্নত দেশে বসবাসরত বাংলাদেশের হাজার হাজার প্রবাসী করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, তখন বাস্তবিক অর্থেই মুখ ফুটে বেরিয়ে আসে- ভাল আছে আমার বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, প্রবাসে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের মৃত্যুর হার দেশের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণের বেশি। অন্যদিকে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দেড়গুণের বেশি। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৭টি দেশে ৫৮৬ জন বাংলাদেশীর প্রাণহানি হয়েছে আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ হাজারের বেশি। উন্নত যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে থেকেও প্রাণ গেছে সাড়ে চার শ’ বাংলাদেশীর। যেখানে সৌদি আরবে ৭৬, কুয়েতে ১৭, ইতালিতে ৮, কানাডায় ৭, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৬, ফ্রান্স ও স্পেনে ৫, কাতারে ৪, সুইডেনে ২ এবং বেশ কয়েকটি দেশে ১ জন করে মারা গছে। তবে একটা বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখতে পাচ্ছি, চিকিৎসার অভাবে জনগণ সাধারণ চিকিৎসা হতে বঞ্চিত হচ্ছে। অনেকেই কোভিড-১৯ ব্যতীত অন্য রোগে আক্রান্ত হয়ে বেসরকারী হাসাপাতালগুলোতে গেলেও চিকিৎসা পাচ্ছে না। এ ধরনের অনেক রোগী চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করেছে। এ দায় কার? এ জন্য এই মুহূর্তে উচিত, নামী-দামী প্রত্যেকটি বেসরকারী হাসপাতালে যারা কোভিড-১৯ ও যারা কোভিড-১৯ নন- তাদের জন্য পৃথক পৃথকভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। তা না হলে স্বাস্থ্য খাতের প্রতি সাধারণ মানুষের অবিশ^াস জন্মাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক চিকিৎসা খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করা সত্ত্বেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকা-ের জন্য তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে, সেটি হতে পারে না। ॥ দুই ॥ স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণেও সদা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। যুক্তরাজ্য ও সৌদি আরবের মতো দেশ যখন বেসরকারী খাতের কর্মীদের যথাক্রমে ৮০% ও ৬০% ভাগ বেতন প্রদানের কথা জানিয়েছে; বাংলাদেশ তখন আপৎকালীন ৫ হাজার কোটি বরাদ্দের মাধ্যমে সব গার্মেন্টস শ্রমিকের বেতন ১০০% দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যা ইতোমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়েছে। আরও বেশ কয়েকটি প্যাকেজে মোট ১ লাখ কোটি টাকা প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার, যা মোট জিডিপির প্রায় তিন শতাংশ। এ ছাড়াও করোনাকালে মানুষের জীবনযাত্রা ঠিক রাখতে প্রধানমন্ত্রীর তাৎক্ষণিক, স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি করণীয় সংক্রান্ত পরিকল্পনা বাংলাদেশে তো বটেই, তৃতীয় বিশে^র জন্যও বড় উদাহরণ হয়েছে। বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যত বড় বড় সিদ্ধান্ত দ্রুতগতিতে নিয়েছেন, তা পৃথিবীর আর কোন কোন রাষ্ট্র নিয়েছে, তা গবেষণার বিষয়। বাংলাদেশের বাস্তবতায় নিঃসন্দেহে তা প্রশংসার দাবি রাখে। বাংলাদেশে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর অনেক বিষয়ের সঙ্গে অন্যতম যে বিষয়টি গুজব আকারে ছড়ানো হচ্ছিল, তা হলো ভেন্টিলেটরের স্বল্পতা। বিষয়টি নিয়ে প্রায় সব গণমাধ্যম নানামুখী নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশে মেতে ওঠে। ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশের তুলনায় বাংলাদেশ কতটা পিছিয়েÑ তা তুলে ধরা হয় সেই প্রেক্ষাপটে। ‘বাংলাদেশে সাড়ে ১৬ কোটি জনগোষ্ঠীর জন্য ভেন্টিলেটর মাত্র ১৭৬৯টি’ শিরোনামে একটি দৈনিকের খবরে বলা হয়, ‘ভোভিড-১৯ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে ভেন্টিলেটরের যে চাহিদা বাড়বে, তা পূরণ করা বাংলাদেশের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। এই মুহূর্তে দেশে ভেন্টিলেটর আছে ১৭৬৯টি। অর্থাৎ, প্রতি ৯৩ হাজার ২৭৩ জন মানুষের জন্য গড়ে একটি ভেন্টিলেটর।’ অথচ আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের আগে দেশে ভেন্টিলেটরের সংখ্যা ছিল হাতেগোনা কয়েকটি। বলে রাখা ভাল- করোনা আক্রান্ত দুই শতাংশ রোগীরও ভেন্টিলেটর প্রয়োজন হয় না। সে হিসেবে কাজে লাগা ভেন্টিলেটরের তুলনায় মজুদের সংখ্যা এখনও বেশি। বাস্তবিক অর্থে করোনাভাইরাসে জর্জরিত গোটা বিশে^ই এখন ভেন্টিলেটর সঙ্কট। তার পরও পূর্বপ্রস্তুতি মাথায় রেখে প্রতিনিয়ত ভেন্টিলেটর সংগ্রহ করছে সরকার। তৈরি হচ্ছে দেশেও। তবে এ কথা স্বীকার করতেই হবে যে, এন-৯৫ ও পিপিই নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর যে কেলেঙ্কারি করেছেন, তা কোনভাবেই উপেক্ষা করা যায় না। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও ভিডিও কনফারেন্সে এই প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং দফতর থেকে এ সম্পর্কে একটি ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করা হলেও তা কোনমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। ভুলবশত শব্দ উল্লেখ করলে সেই অপরাধ কোন কিছু দিয়ে ঢাকা যায় না। সরবরাহকারী মালামাল সঠিক মানের আছে কিনাÑ তা গুরুত্বসহ দেখার দায়িত্ব কর্তাব্যক্তিদের। এ জন্য কোন সহকারীকে দায়ী করা যায় না। যদিও প্রকারান্তরে দেখা গেল, একজন পিএর ওপর দায় চাপিয়ে অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করা হয়েছে। এই নি¤œমানের মাস্ক এবং পিপিইর কারণে করোনা যুদ্ধের সম্মুখযোদ্ধা আমাদের ডাক্তার, নার্স ও টেকনোলজিস্টরা অতিমাত্রায় আক্তান্ত হয়েছেন; যার ফলে চিকিৎসা ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে, হচ্ছে। এটা কোন লঘু অপরাধ নয়। এই অপরাধের যথাযথ শাস্তি বিধান করা উচিত। ॥ তিন ॥ করোনার শেষ আঘাত কোথায় গিয়ে থামবে, তা আমাদের সবার অজানা। দুই মাসের বেশি সময় পর সম্প্রতি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্ত দিয়ে লকডাউন শিথিল করেছে সরকার। যা নিয়ে একটি শ্রেণী নানামুখী সমালোচনায় মেতে উঠেছে। বলা হচ্ছে, করোনা রোগী বেড়ে যাওয়ার কারণ এই শিথিলতা। খেয়াল করে থাকবেন, করোনা সংক্রমণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত যে দেশটি, সেই যুক্তরাষ্ট্রেও কিন্তু লকডাউন তোলার জন্য বিক্ষোভ হচ্ছে। এর মানে হলোÑ খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাওয়া। গৃহে আবদ্ধ থাকার মতো পরিস্থিতি তাদের নেই। ‘দিনে এনে দিন খাওয়া’ পরিবারের দেয়ালে পিঠ ঠেকেছে। ইতোমধ্যেই আয়ের পথ বন্ধ হওয়া মানুষগুলোকে সরাসরি সহায়তার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবে দুই কোটি মানুষকে (৫০ লাখ পরিবার; পরিবার প্রতি চারজন) সরাসরি নগদ টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রতি পরিবার নগদ দুই হাজার ৪০০ টাকা করে পাবেন। টাকা বণ্টনের বিষয়টি কোন মন্ত্রণালয় বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দেয়া হয়নি; বরং খোদ তদারকি করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে ও তাঁর কার্যালয়। তা ছাড়া চিন্তা করতেই হয়, মরণব্যাধি এই ভাইরাস যদি দীর্ঘদিন সংক্রমণ অব্যাহত রাখে ও সে কারণে কর্মতৎপরতা বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে; যার ইঙ্গিত আফ্রিকার অনেক দেশের জন্য বিশ^ খাদ্য সংস্থা দিয়েছে। স্বভাবতই সব বিষয় মাথায় রেখে শুধু বাংলাদেশ নয়, অনেক দেশই লকডাউন শিথিল করেছে। তার পরও সমালোচনা আমাদের রক্তে মিশে আছে। জনবান্ধব সরকার জনকল্যাণমূলক যত উদ্যোগই গ্রহণ করুক না কেন, এক শ্রেণী তার পিছু নেবেই। লেখক : মুক্তিযোদ্ধা ও সদস্য, উপদেষ্টা পরিষদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
×