ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

একদিনে করোনায় আক্রান্তের নতুন রেকর্ড

প্রকাশিত: ২১:৫৭, ৩০ মে ২০২০

একদিনে করোনায় আক্রান্তের নতুন রেকর্ড

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একদিনে করোনায় আক্রান্তের নতুন রেকর্ড হয়েছে শুক্রবার। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৩ জনের মৃত্যু এবং ২৫২৩ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ৫৮২ এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪২ হাজার ৮৪৪ জনে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ৫৯০ জনসহ এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন মোট ৯ হাজার ১৫ জন। পরীক্ষিত নমুনা সংখ্যার বিবেচনায় শুক্রবার প্রকাশিত নতুন রোগী শনাক্তের হার ২২ শতাংশের বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ৩০১টিসহ এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭টি। শুক্রবার দুপুরে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এতথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২৩ জনের মধ্যে ১৯ জন পুরুষ এবং চারজন নারী। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯ জন, রংপুর বিভাগে দুজন, বরিশাল বিভাগে একজন এবং সিলেট বিভাগে একজন রয়েছেন। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে দুজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ছয়জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে পাঁচজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে পাঁচজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুজন, ২১ বছর থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন এবং ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১০ জন। ঢাকা বিভাগের ঢাকা সিটিতে ৪ জন, ঢাকা জেলায় ১ জন, নারায়ণগঞ্জে ২ জন, মুন্সীগঞ্জে ১ জন ও কিশোরগঞ্জে ১ জন। চট্টগ্রাম বিভাগে মারা যাওয়া ৯ জনের মধ্যে চট্টগ্রাম সিটিতে ৬ জন, কুমিল্লায় ১ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১ জন ও ফেনীতে ১ জন। রংপুর বিভাগের রংপুর জেলায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আর বরিশাল বিভাগের ভোলায় ১ জন এবং সিলেট বিভাগের সিলেট জেলায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ দশমিক চার শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৩৬ শতাংশ। নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৩২৮ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন পাঁচ হাজার ১৪০ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭২ জন। এখন পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছেন দুই হাজার ৮১০ জন। তিনি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইন মিলে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে চার হাজার ৯০০ জনকে। এখন পর্যন্ত মোট দুই লাখ ৮০ হাজার পাঁচজনকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন দুই হাজার ৯১৮ জন। এখন পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছেন দুই লাখ ১৯ হাজার ৭৭০ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৬০ হাজার ২৭৫ জন। সাড়ে তিন লাখের বেশি পিপিই মজুদ রয়েছে- স্বাস্থ্য অধিদফতর ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, এ পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়েছে ২৪ লাখ ৭০ হাজার ২টি পিপিই এবং বিতরণ করা হয়েছে ২১ লাখ ৪ হাজারটি। বর্তমানে মজুদ রয়েছে ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৪৬৮টি পিপিই। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় দুই লাখ করোনা সংক্রান্ত কল ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য বাতায়নের নম্বরে ৬১ হাজার ৩২৮টি, ৩৩৩ নম্বরে ১ লাখ ১৩ হাজার ৮৯টি এবং আইইডিসিআর’র নম্বরে ১৮৪০টি করোনা সংক্রান্ত কল এসেছে। অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় মোট কল এসেছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৫৭টি। এ পর্যন্ত হটলাইনগুলোতে করোনা সংক্রান্ত মোট কল এসেছে ৮৩ লাখ ৬৫হাজার ৪৩৩টি। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫৯০ জন- স্বাস্থ্য অধিদফতর ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতরের সমন্বিত করোনা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ১১, কুর্মিটোল জেনারেল হাসপাতালে ৩৬ জন, সংক্রামণক ব্যাধি হাসপাতালে ১৩ জন, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১১ জন, রিজেন্ট হাসপাতালে ৭ জন, সাজেদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ৬ জন, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ১৮৩ জন, মিরপুর লালকুঠি হাসপাতালে ১৪ জন, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৪ জন, সিএমএইচ হাসপাতালে ২৭ জন এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ বার্ন ইউনিটে ১৯ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন। এভাবে ঢাকা বিভাগে ৬৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৭ জন, খুলনা বিভাগে ১২ জন, বরিশাল বিভাগে ২ জন, সিলেট বিভাগে ১০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৬ জন এবং রংপুর বিভাগে ৬৯ জন সুস্থ হয়েছেন। অর্থাৎ একদিনে সারাদেশে ৫৯০ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট ৯০১৫ জন সুস্থ হয়েছেন বলে জানান ডাঃ নাসিমা সুলতানা। ৬০ বছরের বেশি বয়সী রোগীর মৃত্যুহার বেশি ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, এ পর্যন্ত করোনায় মারা যাওয়া রোগীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৬০ বছরের বেশি ৪২শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ২৭ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৯ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৭ শতাংশ, ২১ থেকে ২৯ বছরের ৩ শতাংশ এবং ১০ বছরের নিচে বয়সীরা ২ শতাংশ। এখন পর্যন্ত ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী রোগীর মধ্যে কেউ মারা যাননি। ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীরাই বেশি আক্রান্ত ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের বেশি ৪ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১৩ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৩ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২৪ শতাংশ, ২১ থেকে ২৯ বছরের ২৬ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের ৪ শতাংশ এবং ১০ বছরের নিচে বয়সীরা ৩ শতাংশ। করোনায় মৃতের হার ৭১ শতাংশ পুরুষ এবং ২৭ শতাংশ নারী। আর আক্রান্তের হার ৬৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৩২ শতাংশ নারী।
×