ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অফিস-আদালত খুলছে, তবে-

প্রকাশিত: ২০:০৮, ৩০ মে ২০২০

অফিস-আদালত খুলছে, তবে-

আগামীকাল থেকে শর্তসাপেক্ষে সব সরকারী, আধা-সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারী অফিসগুলো নিজ ব্যবস্থায় খোলা থাকবে। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আদেশে বলা হয়, সীমিত আকারে অফিস খুললেও ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত মানতে হবে বেশ কিছু নির্দেশনা। এমন একটি সময়ে এ সিদ্ধান্ত এলো যখন দেশে প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে এমনটাই অনুমিত হওয়া স্বাভাবিক যে, ভাইরাস সংক্রমণের চূড়ান্ত পর্বে প্রবেশ করছে দেশ। এই সময়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং নিজের সুরক্ষা বজায়ে করণীয় কড়াকড়িভাবে পালনের আবশ্যকতা রয়েছে। এখানে বিন্দুমাত্র শিথিলতা বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। আমরা এই সম্পাদকীয়র মাধ্যমে পাঠক তথা দেশবাসীর কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাই স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ মেনে চলার। মাস্ক পরা এবং একে অপরের থেকে কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে। তাছাড়া ঘন ঘন অন্তত কুড়ি সেকেন্ড ধরে দুই হাত সাবান দিয়ে ভাল করে ধুতে হবে। দীর্ঘ দুই মাস এক সপ্তাহ পর ছুটি শেষে অফিস-আদালত খুললেও সঙ্গত কারণেই স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকছে। সীমিত আকারে গণপরিবহনও চলবে। তবে সবক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যবিধি কড়াকড়িভাবে অনুসরণের তাগিদ দেয়া হয়েছে। এই সময়টাতেই অধিকতর সতর্কতা ও সচেতনতা কাম্য। আগেকার ছুটির সময়ের চাইতে সবাইকে আরও বেশি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। কেননা এখন বেশি সংখ্যক মানুষ ঘরের বাইরে যাবেন। কাজ শেষে তারাই আবার ঘরে ফিরে আসবেন নিজ পরিবারের সদস্যদের কাছে, যারা দিনমান ঘরেই অবস্থান করছেন। তাই বাইরে যাওয়া ব্যক্তির ওপর স্বাভাবিকভাবেই এসে পড়ছে অতিরিক্ত দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালনে সামান্যতম গাফিলতি হলে তার পুরো পরিবারকেই ফেলে দিতে পারে ভয়ঙ্কর ঝুঁকির মধ্যে। তাই নিজের ও পরিবারের কল্যাণ চাইলে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে পালনের কোন বিকল্প নেই। অফিস-আদালতে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধিমালা অনুসরণের জন্য প্রয়োজন হবে সংশ্লিষ্ট পৃথক ইউনিটের, যে ইউনিট সুরক্ষার সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবে। কার্যালয়ে আগত প্রতিটি কর্মী ও দর্শনার্থীর পরিহিত জুতা থেকেও সংক্রমণ হতে পারে। তাই জুতাও ভাইরাসমুক্ত করার সুবন্দোবস্ত থাকা চাই। প্রবেশদ্বারে শুধু দুই হাত ধোয়ার বা স্যানিটাইজার ব্যবহারের ব্যবস্থা থাকাটাই সব নয়। যিনি প্রবেশ করছেন তিনি মাস্ক পরিহিত কিনা, তার দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক কিনা সেসব নিরীক্ষণের ব্যবস্থা থাকতে হবে। ঈদের আগে ঢাকায় শপিংমল ও দোকানপাট খুলে দেয়ার পর যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি না মানায় বেশকিছু মার্কেট কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দেয়। তাই এবারও এক্ষেত্রে প্রতিটি কার্যালয় নিয়ম মানছে কিনা সেটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদারকি করবে কিনা এমন প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। একইভাবে প্রতিটি কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তথা প্রশাসনকেও সার্বক্ষণিকভাবে সতর্কতার সঙ্গে ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ নিশ্চিত করায় ভূমিকা রাখতে হবে। বলাবাহুল্য, সামান্যতম শিথিলতা বা দায়িত্বে অবহেলা পুরো কার্যালয়ের সব কর্মীর জন্যই বিপদ ডেকে আনতে পারে। সরকার অফিস-আদালত খোলার অনুমতি দিয়েছে। আবার সেইসঙ্গে সুনির্দিষ্ট বিধিও স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছে। এর প্রতিটি অক্ষরে অক্ষরে পালন করার অত্যাবশ্যকতা রয়েছে এবং এটি শতভাগ নিশ্চিতও করতে হবে। আমরা আগেও বলেছি, করোনাভাইরাসে বিশ্ব মহামারীর এই সময়টা পার করতে দেশের প্রতিটি নাগরিককেই সতর্কতা অবলম্বন করে সুচারুরূপে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
×