ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চীনের সমালোচনায় সরব যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া

হংকং নিরাপত্তা আইন পাস

প্রকাশিত: ১৯:৪৪, ৩০ মে ২০২০

হংকং নিরাপত্তা আইন পাস

চীনা পার্লামেন্ট অবশেষে হংকং নিরাপত্তা আইন পাস করেছে। আন্তর্জাতিক বৈরি ও মিত্রদেশগুলোর চরম সমালোচনার মুখে বৃহস্পতিবার চীনের পার্লামেন্টে আইনটি পাস হয়। চীনের ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের দুই হাজার ৮৭৮ জন প্রতিনিধি স্টান্ডিং কমিটির আনা খসড়া বিলের পক্ষে ভোট দেন। বিলটির বিপক্ষে একটি ভোট পড়ার পাশাপাশি ৬ জন প্রতিনিধি ভোটদানে বিরত ছিলেন। খবর বিবিসি, আলজাজিরা ও পিপলস টাইমস অনলাইনের। চীন বলছে, গত বছর টানা কয়েকমাস ধরে সরকারবিরোধী আন্দোলন ও সহিংসতা দেখা হংকংয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন, বৈধ সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা, সন্ত্রাসবাদ ও বিদেশী হস্তক্ষেপ রুখতে এ নিরাপত্তা আইন জরুরী হয়ে পড়েছিল। অন্যদিকে সমালোচকরা বলছেন, গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকারীদের কণ্ঠরোধ করতেই বেজিং এখন এ ধরনের নিপীড়নমূলক আইন চাপিয়ে দেয়ার পথ বেছে নিয়েছে। বৃহস্পতিবার বেজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলের স্ক্রিনে ভোটের ফলাফল দেখানোর সময় এ নিরাপত্তা আইনের সমর্থকদের উল্লাস ও হর্ষধ্বনি দেয়। হংকংয়ের ‘বেসিক ল’ অর্থাৎ, মিনি সংবিধানের আর্টিকেল ২৩ অনুযায়ী, চীন সরকারের বিরুদ্ধে কোনরকম বিদ্রোহ প্রতিহত করতে এই জাতীয় নিরাপত্তা আইন চালুর বিধান আছে। কিন্তু এতে মানবাধিকার এবং বাক স্বাধীনতার মতো অধিকারগুলো ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশঙ্কার কারণে এ আইন সেখানে কখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি। হংকং সরকার এর আগে ২০০৩ সালে আইনটি চালু করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছিল। রাস্তায় ৫ লাখ লোকের প্রতিবাদের পর ওই উদ্যোগ আর নেয়া হয়নি। নতুন করে আইনটি চাপিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হলে গত সপ্তাহ থেকেই ফের উত্তাল হয়ে ওঠে হংকং। হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। সেসব বিক্ষোভ থেকে এরই মধ্যে কয়েকশ’ ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। এদিকে চীনের হংকং নিরাপত্তা আইন নিয়ে নতুন করে তীব্র নিন্দায় সরব হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ দেশটির মিত্রদেশ যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া। তাদের কথায়, বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে হংকংয়ে এ নতুন আইন চাপিয়ে দেয়ার পদক্ষেপ নিয়ে চীন বিভিন্ন দেশের সরকারের আস্থা ক্ষুণ্ণ করা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ব্যাহত করার ঝুঁকি নিচ্ছে। তবে চীন এই সমালোচনা উড়িয়ে দিয়েছে। চীনের পার্লামেন্ট হংকংয়ে সরাসরি জাতীয় নিরাপত্তা আইন চালুর বিল বৃহস্পতিবার অনুমোদন করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও বলেছেন, হংকংয়ের এ পরিস্থিতিই বলছে যে, তারা আর চীনের কাছ থেকে উচ্চ মাত্রার স্বায়ত্তশাসন সুবিধা ভোগ করছে না। চীন হংকংকে নিজেদের মতোই বানাতে চাইছে এটি এখন স্পষ্ট। পম্পেওর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ওয়াশিংটনের চীন দূতাবাস এ বিষয়ে বেজিং ও হংকংয়ের বেজিং সমর্থিত সরকারের মতোই নিরাপত্তা আইনটি হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসনকে হুমকিতে ফেলবে না বলে আশ্বস্ত করেছে। ‘হংকংয়ের বিষয়ে বিদেশী রাষ্ট্রগুলো হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করলে, আমরাও পাল্টা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব। যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্রদেশগুলো এক বিবৃতিতে বলেছে, বেজিং সরাসরি আইনটি চাপিয়ে দিলে হংকংয়ের মানুষের স্বাধীনতা সীমিত হয়ে পড়বে, স্বায়ত্তশাসন থাকবে না, ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ নীতি ও ক্ষুণ্ণ হবে।
×