ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আই এ্যাম মালালা

প্রকাশিত: ০১:০৪, ২৯ মে ২০২০

আই এ্যাম মালালা

নাট্যকার বাংলাদেশী, যার আপাত নিবাস সুইডেন, অথচ তিনি লিখলেন ইংরেজি ভাষায়। সেখান থেকে আবার বাংলায় রূপান্তর করলেন আরেক বাংলাদেশী! ব্যাপারটা আপাতদৃষ্টিতে অদ্ভুতুড়ে মনে হলেও সুস্ক বিচারে খুবই যৌক্তিক কারণ ভাষা এমনকি স্বয়ং বক্তাও দ্বিতীয়বার একইভাবে ব্যবহার করতে পারেন না। ফলে নাট্যকার নিজে তাঁর ইংরেজি ভাবনাকে বাংলায় পরিণত করতে চাইলেও ভাবনা দুটো যে একইরকম হতো না তা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলা যায়। এই ভাবনা থেকেই বাঙালী কবি ও নাট্যকার আনিসুর রহমানের ইংরেজি ভাষায় লেখা তিনটি নাটক (পূর্বে যেগুলো সুইডিশসহ আরও বেশ কিছু ভাষায় অনূদিত হয়েছে) বাংলায় অনুবাদের সিদ্ধান্ত নেয়া। হেনরিক ইবসেন এবং অগাস্ট স্ট্রিনডবার্গকে নিয়ে গবেষণার সূত্র ধরে নাট্যকারের সঙ্গে আমার পরিচয়। শুরুতে এ নাইট জার্নি নাটকটি হাতে আসে। পড়ে মুগ্ধ হই। বিস্ময়াভূত হয়ে লক্ষ্য করি, ছোট্ট নাটকটিতে এমন দারুণ কিছু তথ্য রয়েছে যা আমার দীর্ঘদিনের গবেষণার আড়ালে ছিল। বাংলায় অনুবাদের প্রস্তাব আমি নিজেই দিই, নাট্যকার তাতে আন্তরিকভাবে সম্মত হন। তখনো জানতাম না নাটকটি মুগ্ধ করেছে আরো অনেককেই-সেই তালিকায় বিদগ্ধ সমালোচক-বোদ্ধা থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শকও রয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম ২০১২ সালে অগাস্ট স্ট্রিনডবার্গের মৃত্যু শতবার্ষিকী উপলক্ষে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়েছিল সুইডেনের গটসান্ডা ড্যান্স এ্যান্ড থিয়েটারে। সে সময়ে সুইডেনের শীর্ষস্থানীয় পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয় নাটকের গল্প এবং অতি অবশ্যই বিদগ্ধজনের প্রশংসা। নাটকটির প্লট হেনরিক ইবসেন এবং অগাস্ট স্ট্রিনডবার্গের মুখোমুখিতা। জীবিতাবস্থায় এ দু’জনের মধ্যে যে খুব সুখকর সম্পর্ক ছিল না তা সর্বজনবিদিত, কিন্তু দু’জনের সম্পর্কের মধ্যে এমন কিছু বিষয়ও ছিল যা হয়তো অনেকের দৃষ্টি এড়িয়েছে। নাট্যকার সে আপাত-অজ্ঞাত বিষয়গুলোকে তুলে এনেছেন। এর বাইরে দু’জনের বিখ্যাত কাজগুলোর ভিন্নধর্মী ব্যাখ্যা উপস্থাপনের প্রয়াসও লক্ষ্য করা গিয়েছে নাটকটিতে। সর্বোপরি, ব্যক্তি ইবসেন এবং ব্যক্তি স্ট্রিনডবার্গ যেন ভ্রমণে বের হয়েছেন ওই পাশের বাড়ির মানুষটির মতো। আই অ্যাম মালালা নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র নারী শিক্ষার জন্য প্রাণ হারাতে যাওয়া পাকিস্তানি কিশোরী মালালা ইউসুফ জাঈ। অবশ্য মালালাকে ‘পাকিস্তানি’ বলাটা বোধহয় ভুল হলো। কারণ নাট্যকার দেখিয়েছেন মালালা নিজেই নিজেকে সকল দেশের, সকল কালের, সকল ধর্মের বলে দেখতে পছন্দ করেছে। এটি একটি একাঙ্কিকা। ছোট্ট মেয়েটি যে ভীষণ সঙ্কাটাপন্ন হয়েও নিজের চিন্তা থেকে, নারী শিক্ষার প্রসার ঘটানোর প্রচেষ্টা থেকে সরে আসেনি সেটাই নাট্যকার দেখিয়েছেন গল্পে, ছন্দে। সব শেষে ‘আজ আমরা সবাই মালালা... লা... লা... লা...’ লাইনটি বলে দেয় এটি পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার কোন কিশোরীর গল্প নয়, বরং বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা মালালাদের গল্প। নাটকটি ২০১৪ সালে স্টকহোমের লোটা গার্টন প্রোডাকশন মঞ্চস্থ করে। ২০১৮ তে মঞ্চস্থ হয় আর্মেনিয়ায়। নেকড়ে এবং মন্ত্রী নাটকটির প্রেক্ষাপট বাংলাদেশের দর্শকদের জন্য একটু অপরিচিতই। তবে প্রবাসী বাংলাদেশী কিংবা এশিয়ানদের জন্য মোটেও নয়। এশিয়া থেকে ভাগ্যান্বেষণে উন্নত দেশগুলোতে যাওয়া হাজারো হতভাগ্য নাগরিকের ছবি ফুটে ওঠে নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রের মধ্যে। উন্নত বিশ্বের শ্রমবাজারে অনুন্নত দেশগুলো থেকে যারা যান তারা যে মোটেই মানবিক জীবন সেখানে যাপন করতে পারেন না তার চূড়ান্ত রূপ দেখা যায় যখন নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রটি নেকড়েতে পরিণত হয়। এ রূপান্তর হুট করে কোন এক সকালে পোকায় পরিণত হওয়া কাফকার ‘মেটামরফোসিস’ নয়, বরং পলে পলে মানুষের রূপ হারানো এক এশিয়ান হতভাগ্যের মেটামরফোসিস। হতভাগ্য নেকড়েকে আমরা দেখতে পাই সে দেশের প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রীর সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করতে। মানুষ থাকাকালীন যা পারেনি, নেকড়ে হয়ে হয়তো সেটাই উসুল করে নেবার নিষ্ফল প্রচেষ্টা। নাটকটি জল এনেছে বহু দর্শকের চোখে। মানুষের প্রতি নেকড়ের ঘৃণা প্রশ্ন তুলেছে সমগ্র মানবজাতির মুমূর্ষু বোধকে। সে হিসেবে এ নাটকটিও অতিক্রম করেছে দেশকালের গ-ি। ২০১২ তে সুইডেনের বেতার থিয়েটার এবং ২০১৩ তে এন. আর. কে নরওয়েজিয়ান বেতার থিয়েটারে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। অতি সাম্প্রতিককালে থিয়েটার ব্লাঙ্কা উপছালাতেও মঞ্চস্থ হয়েছে নেকড়ে এবং মন্ত্রী। নাটকগুলো যখন যে দেশে মঞ্চস্থ হয়েছে সেখানেই মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসা ও প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে অনুবাদ করার সময় এসব কোন তথ্য আমার জানা ছিল না। শুধুমাত্র নিজের ভালোলাগার বৃত্তের পরিসীমা বাড়াতেই ভাষান্তরের এ ক্ষীণ প্রচেষ্টা। ‘আক্ষরিক অনুবাদ’ বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে অপছন্দ করি বলেই নাটকগুলো অনুবাদের সময় প্রয়োজনীয় স্বাধীনতা নিয়েছি। নাট্যকারকে দেখানোর পর তিনিও সে স্বাধীনতাকে যথার্থ বলেই অনুমোদন করেছেন। এবার পাঠকের পালা... সার-সংক্ষেপ- পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার এক স্কুলপড়–য়া পশতুন বালিকার নাম মালালা। তালিবান গোষ্ঠী নারীশিক্ষার ওপর বাধা আরোপ করায় মালালা বিবিসির উর্দু শাখায় একটি ব্লগ অ্যাকাউন্ট খোলে। সেখানে নিজের চিন্তাভাবনা, অনুভূতি এবং তালিবান-নিয়ন্ত্রিত এলাকার নানা সমস্যার কথা লিখতে শুরু করে। সহপাঠী বালিকাদেরকে স্কুলে যাওয়ার জন্য উৎসাহ দেয়। সেইসঙ্গে সোয়াত উপত্যকায় নারীশিক্ষার পক্ষে প্রচারণা চালাতে থাকে। তার কাজকর্ম জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে। মালালাকে ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেন’স পিস প্রাইজ এবং ন্যাশনাল ইউথ পিস প্রাইজ অব পাকিস্তান প্রদান করা হয়। তার এ অগ্রগতি তালিবান গোষ্ঠীকে ক্ষিপ্ত করে তোলে। একদিন স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে তালিবানরা বাসের মধ্যে তাকে গুলি করে। নাটকটি ওই সময়ে তালিবানদের হিং¯্রতা ফুটিয়ে তোলে। সেইসঙ্গে এক স্কুলপড়–য়া বালিকার গল্প বলে যে কিনা সমাজের পরিবর্তন চেয়েছিল, নারীশিক্ষার উন্নয়ন চেয়েছিল। নাটকটি ওই বালিকার আশা, আকাক্সক্ষা, স্বপ্ন, কল্পনা, দৃঢ়তা এবং সাহসিকতার গল্প বলে। (মালালার বয়স ৭ বছর) Twinkle twinkle little star How I wonder what you are? Up above the world so high Like a diamond in the sky. (মঞ্চে মালালা নিজেই গানটি গাইতে পারে অথবা ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজানো যেতে পারে। গানের সঙ্গে মালালাকে নাচতে দেখা যায়। তার হাতে একটা ইংরেজী অইঈ বই, কলম, পেন্সিল আর খাতা) A for apple. B for Bush. bv! B for Blair. bvn&! B for Banana. B for Bird. B for Buddhists. C for Cunning. bv! C for Colony. Dû! C for Cat. C for Christian. D for Dog. না! D for Dirty. আরে, নাহ্! D for Doll. E for Egg. মোটেই না! E for Elephant. E for Education. F for False. না F for Fun. F for Freedom. G for Ghost. বিশ্রী লাগে শুনতে! G for Gaddafi. ধূর! G for God না, তাও না! এ ভড়ৎ এড়ড়ফ. এ ভড়ৎ এরৎষং. ঐ ভড়ৎ ঐবহ. হা হা হা, না! ঐ ভড়ৎ ঐড়হবু. উহু! ঐ ভড়ৎ ঐড়হবংঃু. ও ভড়ৎ রষষহবংং. না, ভাল না! ও ভড়ৎ ওফরড়ঃ. ছি! ও ভড়ৎ ওংষধস. ঔ ভড়ৎ ঔবধষড়ঁংু. একদম না! ঔ ভড়ৎ ঔববিষৎু. না, না! ঔ ভড়ৎ ঔবংি. ক ভড়ৎ শরহম. নাহ্, ভাল হলো না! ক ভড়ৎ শরহফহবংং. ক ভড়ৎ শরংং. খ ভড়ৎ খরব. অসম্ভব! খ ভড়ৎ খধফরহ. হতেই পারে না।! খ ভড়ৎ খড়াব. গ ভড়ৎ গড়হবু. না! গ ভড়ৎ গড়ড়হ. গ ভড়ৎ গধহশরহফ. গ ভড়ৎ গধষধষধ. ঘ ভড়ৎ ঘড়রংব. মাগো! ঘ ভড়ৎ ঘড়নষব. ঙ ভড়ৎ ঙসষবঃ. হি হি হি! ঙ ভড়ৎ ঙনধসধ. না! ঙ ভড়ৎ ঙংধসধ. কখনও না! ঙ ভড়ৎ ঙহরড়হ. না! ঙ ভড়ৎ ঙৎধহমব. চ ভড়ৎ চড়ঃধঃড়. না! চ ভড়ৎ চড়বিৎ. না! চ ভড়ৎ চধশরংঃধহ. চ ভড়ৎ চৎড়মৎবংং. চ ভড়ৎ চঁনষরপ. ছ ভড়ৎ ছঁববহ. চাই না! ছ ভড়ৎ ছঁবংঃরড়হ. জ ভড়ৎ জবফ. না, ভয়ঙ্কর লাগে! জ ভড়ৎ জড়ুধষ. ভাল হয় না! জ ভড়ৎ জড়ংব. ঝ ভড়ৎ ঝধঃধহ. না রে! ঝ ভড়ৎ ঝধষঃ. নাহ্! ঝ ভড়ৎ ঝঁহ. ঝ ভড়ৎ ঝবিবঃ. ঞ ভড়ৎ ঞধষরনধহ. জঘন্য! ঞ ভড়ৎ ঞৎঁঃয. ট ভড়ৎ টমষু. না না! ট ভড়ৎ টসনৎবষষধ. ঠ ভড়ৎ ঠরড়ষবহপব. না না না! ঠ ভড়ৎ ঠরৎঃঁব. ড ভড়ৎ ডবধষঃয. মানুষকে লোভী করে তোলে! ড ভড়ৎ ডরংফড়স. ঢ ভড়ৎ ঢঃৎধ. না! ঢ ভড়ৎ ঢংঃসধং. ণ ভড়ৎ ণবষষড়.ি না! কেমন ক্যাটকেটে লাগে! ণ ভড়ৎ ণড়ঁঃয. ত ভড়ৎ তবৎড়. হ্যাঁ, এটা ভাল। তবৎড় থেকেই তো সব কিছুর শুরু ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯ (মালালার বয়স ৮ বছর) আমার নাম মালালা। আমার বাড়ি সোয়াতে আমার বাড়ি পাকিস্তান আমি খ্রীস্টানদের পক্ষে আমি মুসলিমদের পক্ষে আমি পশতুনদের পক্ষে আমি শাদার পক্ষে আমি আলোর পক্ষে আমি মেয়েদের পক্ষে আমি শিক্ষার পক্ষে আমি মুসলিম আমার নাম মালালা আমি খ্রীস্টান আমার নাম ব্রিজিতা আমি বৌদ্ধ আমার নাম প্রজ্ঞা আমি হিন্দু আমার নাম দুর্গা আমি ইহুদী আমার নাম ... (মালালার বয়স ৯ বছর) আমি মালালা লা লা লা আমি ফুল ভালবাসি আমি হাসি ভালবাসি আমি আলো ভালবাসি আমি এক্কাদোক্কা খেলি গোল্লাছুট, কুতকুত, ব্যাডমিন্টন, টেনিস, ক্রিকেট, ফুটবল আমি সব কিছু ভালবাসি কানামাছি ভোঁ ভোঁ ভালবাসি কিন্তু... ধুর! না! না! আমি তালিবানদের একদম পছন্দ করি না। বাবা-মা, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধবী তোমাদের সবাইকে আমি ভালবাসি যারা পড়ালেখার কথা বলে তাদেরকেও ভালবাসি তালিবানদের কত্ত বড় সাহস ওরা আমার শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেয়। ওরা টিভি, সিনেমা, রেডিও, টেলিভিশন বন্ধ করে দেয়। ওরা মেয়েদের চাকরি করা, শপিংয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। আমার মা এখন আর বাইরে কাজ করতে যেতে পারে না, শপিংয়ে যেতে পারে না। তোমাদের মা পারে? তোমরা ভাবতে পার, সোয়াত উপত্যকায় যখন মাথাকাটা পুলিশের লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয় তখন আমাদের কেমন লাগে? (মালালার বয়স ১০ বছর) আমি বিবিসিতে একটা ব্লগ শুরু করেছি ওখানে আমার ছদ্মনাম গুল মাকাই গুল মাকাই মানে ‘ভুট্টার ফুল’ অর্থটা খুব সুন্দর, তাই না? পশতুন লোককাহিনীতে নামটা পাওয়া যায় আমার ব্লগ দেখে নিও... দেখে আমাকে জানিয়ো সোয়াত উপত্যকায় মিলিটারি অপারেশন শুরু হলো আমি খুব সমস্যায় পড়ে গেলাম আমার স্কুল বন্ধ হয়ে গেল ওরা আরও হাজারও স্কুল বন্ধ করল কী একটা অন্ধকার সময় রাতের বেলা নানা হট্টগোল, কামানের আওয়াজ আমি ঘুমাতে পারি না, ঘুমালেও বারে বারে জেগে উঠি- এগুলো সব আমি আমার ব্লগে লিখেছি দেখো কিন্তু, এ দেখো। মানুষজন এসে বাবার কাছে আমার প্রশংসা করে। বাবা হাসেন, আমিও হাসি। ওরা একের পর এক স্কুল ধ্বংস করছে আমার পরীক্ষা এখনও হয়নি হবেও না। তালিবানরা হতে দেবে না। নির্বোধ তালিবান। নির্বোধ। ফালতু পাকিস্তানি আর্মি। তালিবানরা হাজার হাজার স্কুল গুড়িয়ে দেবার সময় ওরা কোথায় ছিল! এতদিনে এসেছে! ইস! মিলিটারি যদি স্কুলগুলো রক্ষা করতে, মেয়েদের রক্ষা করতে কাজ করত! আমার পাঁচ বছরের ছোট ভাইটা দুয়ারে খেলতে খেলতে বলে আমি নাকি কবর খুড়ছি। কবর ? কার জন্য? তালিবানদের জন্য? নাকি...? (মালালার বয়স ১১ বছর) সেদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে শুনলাম কে যেন একটা লোক বলছে, ‘খুন করে ফেলব’। কে বলল? (মালালা জোরে হাঁটল, কিছুক্ষণ পর ফিরে তাকিয়ে দেখল লোকটা তখনও পেছনে আসছে কিনা) ওহ্, বাঁচা গেল। লোকটা ফোনে কথা বলছিল। নিশ্চয়ই ফোনে কাউকে হুমকি দিচ্ছিলা (মালালার বয়স ১২ বছর) আমি এখন বুঝতে পারি কোন বিষয়গুলো মানুষকে আতঙ্কিত করে তোলে আর কেনই বা মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে যায়। বিপদ আর ভালবাসা দুটোর কারণেই মানুষ হুট করে ঘরছাড়া হতে পারে। কী অসহ্য! অন্যের জায়গায় বাস করা, কী কষ্টকর! আমি এখন আর টিভি দেখতে পারি না। আমার প্রিয় ‘রাজা কি আয়েগী বারাত’ নাটকটা দেখতে পারি না। আমার স্বপ্নের রাজপুত্র একদিন এসে আমায় শাদী করে নিয়ে যাবে। নির্বোধ তালেবান! ওরা এখন বেশ সক্রিয় মানুষ ক্ষুধার্ত ত্রাণের মালামাল চুরি হয়ে যাচ্ছে। আমার ছোট ভাইটা স্কুলে যেতে ভয় পায়, কেউ যদি অপহরণ করে নেয়। প্রভু! আমাদের রক্ষা কর। আমাদের সোয়াতে শান্তি দাও। (মালালার বয়স ১৩ বছর) ফালতু একটা! রাষ্ট্রপতি আসিফ আলী জারদারি খুবই বিতর্কিত একটা ধারায় স্বাক্ষর করেছেন। এর ফলে সোয়াত উপত্যকায় শরিয়াহ আইন আরও কঠিনভাবে প্রয়োগ করার সুযোগ হয়ে গেল। মেয়েরা আর স্কুলে যেতে পারবে না। নারীরা বাইরে কাজ করতে বা বাজারে যেতে পারবে না। খুবই বিরক্তিকর অবস্থা। কী একটা বেয়াক্কেলে চুক্তি! এই নাকি রাষ্ট্রপতি! আমার পড়ার মত কোন বই নেই। করার মত কোন কাজ নেই। নাহ্! আর চুপ করে থাকা চলে না। কিছু একটা করতেই হবে। একটা নতুন স্বপ্ন দেখেছি। আমি রাজনীতিবিদ হব আমার দেশকে রক্ষা করব। (মালালার বয়স ১৪ বছর) প্রধানমন্ত্রী একটা ঘোষণা দিয়েছেন। এখন নাকি সোয়াত উপত্যকায় ফিরে যাওয়াটা নিরাপদ। পাকিস্তানি মিলিটারিরা তালিবানদের শহর থেকে বের করে দিয়েছে। আমরা পরিবারের সবাই একত্রিত হলাম। আমরা সোয়াত উপত্যকায় ফিরে যাব। কী যাচ্ছেতাই সময় গেল। আমাদেরকে অবশ্যই ওই ভয়ঙ্কর তালিবানদের বিপক্ষে কথা বলতে হবে। নির্বোধ তালিবানরা আমাকে খুন করতে চায়। আমি কি করেছি? মেয়েদের শিক্ষার জন্য কাজ করা থামাব না, এটাই কি আমার অপরাধ? ওহ্! ওরা কি পরিমাণ মাথামোটা! ওরা মেয়েদের স্কুলে যেতে দেবে না। এই কি একবিংশ শতাব্দী? আমি স্কুলে যাচ্ছি। সব মেয়ে স্কুলে যাবে। ওরা যদি আমাকে মারতে আসে তাহলে বলব ওরা যেটা করছে সেটা ভুল। শিক্ষা আমাদের মৌলিক অধিকার মেয়েদেরকে স্কুলে যেতে দাও। শিক্ষা আমাদের অহঙ্কার। শিক্ষা আমাদের স্বপ্ন। পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশে আমার স্বীকৃতি দেখে তালিবানরা ক্ষেপে যাচ্ছে। আমি ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেন’স পিস প্রাইজ এবং পাকিস্তানী ন্যাশনাল ইউথ পিস প্রাইজ পেয়েছি। ওরা আতঙ্কজনক। আমার কেমন ভয় ভয় করছে। ওই যে এক বন্দুকধারীকে দেখা যাচ্ছে। ও গুলি করছে। লোকটা আমাদের স্কুল বাসে উঠে পড়েছে। চিৎকার করে বলছে, ‘তোদের মধ্যে মালালা কে? জবাব দে, নয়তো গুলি করব।’ সব মেয়েই মালালা। মানে কি? সোয়াতের প্রত্যেকটি মেয়েই মালালা। (একের পর এক গুলির শব্দ পাওয়া গেল। মালালাসহ আরও অনেক মেয়ে আহত হলো। ওদের হাসপাতালে নেয়া হলো) সোয়াত উপত্যকার প্রতিটি মেয়েই আজ মালালা। সোয়াত উপত্যকার প্রতিটি মেয়েই আজ শিক্ষার জন্য কাঁদে। সোয়াত উপত্যকার প্রতিটি মেয়েই আজ শিক্ষার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ- তালিবান আমাদের হারাতে পারবে না। আজ আমরা সবাই মালালা লা... লা... লা...!
×