ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদের পরের চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ২৩:৩১, ২৯ মে ২০২০

ঈদের পরের চ্যালেঞ্জ

ঘরোয়াভাবে ঈদ উদযাপনের আহ্বান ছিল নিজের ও পরিবারের সুরক্ষার স্বার্থেই। সে আহ্বান যে অনেকাংশেই রক্ষিত হয়নি সেটি বলাইবাহুল্য। গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাওয়ার সংস্কৃতি থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারেননি বহু মানুষ। ফলে শঙ্কার জায়গাটি তৈরি হয়েছে। যারা ঢাকা শহর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঈদ করতে গেছেন তাদের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। একইভাবে তারা যখন আবার ঢাকায় ফিরে আসছেন সে সময়ও ভাইরাস বহনসহ কমিউনিটিতে ছড়িয়ে দেয়ার শঙ্কা অমূলক নয়। ফলে ঈদের পরে করোনা মোকাবেলায় নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে বলে ধারণা করা যায়। ইতোমধ্যে দেশে প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে এমনটাই অনুমিত হওয়া স্বাভাবিক যে, ভাইরাস সংক্রমণের চূড়ান্ত পর্বে প্রবেশ করছে দেশ। এই সময়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং নিজের সুরক্ষায় করণীয় কড়াকড়িভাবে পালনের আবশ্যকতা রয়েছে। এখানে বিন্দুমাত্র শিথিলতা বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। আমরা পাঠক তথা দেশবাসীর কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাই স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ মেনে চলার জন্য। মাস্ক পরা এবং একে অপরের থেকে কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে। তাছাড়া ঘন ঘন অন্তত কুড়ি সেকেন্ড ধরে দুই হাত সাবান দিয়ে ভাল করে ধুতে হবে। করোনাকালীন অর্থনৈতিক কর্মকা-ের স্থবিরতায় সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন দিন এনে দিন খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ। সরকার নানাভাবে তাদের প্রত্যেকের কাছেই ত্রাণ ও নগদ অর্থ সহায়তা পৌঁছে দেয়ার প্রয়াস চালিয়েছে। তারপরও এটাই বাস্তবতা যে, এই তালিকার বাইরেও থেকে গেছেন বহু অভাবী মানুষ। আবার তালিকাভুক্ত হওয়ার পরও সঠিকভাবে সহায়তা পৌঁছায়নি সবার কাছে। তাই সমাজের বিত্তবান মানুষ এবং নানা সমাজকল্যাণমূলক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর ওপরও কিছুটা দায় এসে পড়েছে। শতাব্দীর এই ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রমণে শুধু সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকা কোন কাজের কথা নয়। প্রত্যেককেই মানবিক হতে হবে, মানবতার দায়বোধ থেকে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে। ঈদ উত্তর এ পর্যায়ে খুব কঠিন সময়ের ভেতরে প্রবেশ করেছি আমরা। সমাজের শ্রমজীবী ও কর্মহীন মানুষের জন্য সময়টি আরও বেশি কঠিন। তাদের বাঁচিয়ে রাখতে পারে আমাদের সামান্য সহায়তা ও মানবিকতা। এ কথা মনে রেখেই আমাদের উদ্যোগী হতে হবে। সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি আগামীকাল শেষ হচ্ছে। দীর্ঘ দুই মাস এক সপ্তাহ পর এ ছুটি শেষে অফিস-আদালত খুললেও সঙ্গত কারণেই স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকছে। ব্যক্তিগত যানবাহনও চলবে। তবে সর্বক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যবিধি কড়াকড়িভাবে অনুসরণের তাগিদ দেয়া হয়েছে। এই সময়টাতেই অধিক সতর্কতা ও সচেতনতা কাম্য। আগেকার ছুটির সময়ের চাইতে সবাইকে আরও বেশি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। কেননা এখন বেশি সংখ্যক মানুষ ঘরের বাইরে যাবেন। কাজ শেষে তারাই আবার ঘরে ফিরে আসবেন নিজ পরিবারের সদস্যদের কাছে, যারা দিনমান ঘরেই অবস্থান করছেন। তাই বাইরে যাওয়া ব্যক্তির ওপর স্বাভাবিকভাবেই এসে পড়েছে অতিরিক্ত দায়। এই দায়িত্ব পালনে সামান্যতম গাফিলতি তার পুরো পরিবারকেই ফেলে দিতে পারে ভয়ঙ্কর ঝুঁকির মধ্যে। তাই নিজের ও পরিবারের কল্যাণ চাইলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে পালনের কোন বিকল্প নেই।
×