ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পহেলা জুন থেকে চালু হচ্ছে বিমান

প্রকাশিত: ২৩:০৬, ২৯ মে ২০২০

পহেলা জুন থেকে চালু হচ্ছে বিমান

আজাদ সুলায়মান ॥ আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে ফ্লাইট চলাচলের নিষেধাজ্ঞা উঠলো। চার শর্তে আগামী পহেলা জুন থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালু হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বেমামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এই সিন্ধান্ত নিয়েছে। তবে দেশের সবকটি বিমানবন্দর পুরেপুরি প্রস্তুত না হওয়ায় ফ্লাইট চলবে ৪টি বিমানবন্দরে। ফ্লাইট চালানোর ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি কঠোর শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে। শর্তের ব্যত্যয় ঘটলে ফ্লাইট বাতিল করারও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। একেকটি এয়ারলাইন্স প্রতিদিন তিনটির বেশি ফ্লাইট চালাতে পারবে না। যাত্রী ও বিমান কর্তৃপক্ষকে স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে। এদিকে সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১৫ জুনের পর থেকেই আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল শুরু করার পরিকল্পনা নিয়েছে বেবিচক। এ প্রসঙ্গে বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, ফ্লাইট চলাচলের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সীমিত আকারে পহেলা জুন থেকে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে। ফ্লাইট চলাচলের ব্যাপারে বেশ কিছু শর্ত দেয়া হয়েছে। শর্ত না মানলে ফ্লাইট চলতে দেয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে শুধু ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলবে। কক্সবাজার, রাজশাহী ও বরিশাল বিমানবন্দর এখনও প্রস্তুত নয়। করোনা সুরক্ষার জিনিসপত্রের কিছুটা অভাব আছে সেখানে। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ওইসব বিমানবন্দর ফ্লাইট চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৫ জুনের পর আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এতে দেশ-বিদেশের পরিস্থিতির ওপর সবককিছু নির্ভর করবে। সংশ্লিষ্টরা দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, বর্তমানে দেশের চারটি এয়ারলাইন্স কোম্পানি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। অভ্যন্তরীণ আকাশপথে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার, যশোর, সৈয়দপুর, রাজশাহী ও বরিশাল রুটে প্রতিদিন ১৪০টির মতো ফ্লাইট চলাচল হয়ে আসছিল। তবে ২০ মার্চ থেকে তিন মাসের জন্য ফ্লাইট চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে রিজেন্ট এয়ারওয়েজ। এক্ষেত্রে শুধু বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার এবং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সই ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে। করোনাভাইরাসের পাদুর্ভাবের কারণে গত ২১ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাজ্য, চীন, হংকং, থাইল্যান্ড ছাড়া সব দেশের সঙ্গে এবং অভ্যন্তরণীণ রুটে যাত্রীবাহী ফ্লাইট চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল বেবিচক। এরপর আরেকটি আদেশে চীন বাদে সব দেশের সঙ্গে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এই নিষেধাজ্ঞা সরকারী সাধারণ ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করে পর্যায়ক্রমে ১৪ এপ্রিল, ৩০ এপ্রিল, ৭ মে, ১৬ মে এবং ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এ প্রসঙ্গে অপর এক কর্তা বলেন- আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলের ক্ষেত্রে অনেক বিদেশী ও অনাবাসী বাংলাদেশী দেশে ফিরবে। তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন রাখা কিংবা একসঙ্গে এত যাত্রীকে ম্যানেজ করার বিষয়ে এখনও প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়নি। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি। তারপরও আমরা আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল শুরুর ব্যাপারে সিন্ধান্ত নিব। করোনা তা-বে দুনিয়াব্যাপী বন্ধ রয়েছে ফ্লাইট চলাচল। বিগত তিন থেকে চারমাস ধরে বন্ধ থাকায় অনেক এয়ারলাইন্স দেউলিয়ার পথে। ছাঁটাইয়ের ঢেউ লেগেছে এমিরেটসসহ দুনিয়ার শীর্ষ এয়ারলাইন্সে। শুধু এমিরেটসই আগামী মাসে ৩০ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। ভারতে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়েছে। আগামী মাস থেকে সৌদি আরবে ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে। বেসরকারী বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট মাহবুব আলী আমাদের জানিয়েছেন, করোনায় দেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমার মন্ত্রণালয়। করোনার জন্য আমাদের পর্যটনের সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিমানের শুধু এপ্রিল মাসেই বেতন, কিস্তি এবং অন্যান্য ব্যয়ের জন্য প্রয়োজন ৬২৮ কোটি টাকা। আমার বিমান প্রস্তুত আজই ফ্লাইট চালানোর জন্য।
×