ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

২৪ ঘণ্টায় ১৫ জনের মৃত্যু

করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে

প্রকাশিত: ২২:৩৮, ২৯ মে ২০২০

করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একদিনে করোনায় আক্রান্তের নতুন রেকর্ড হয়েছে বৃহস্পতিবার। আর করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৫ জনের মৃত্যু এবং ২০২৯ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ৫৫৯ এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪০ হাজার ৩২১ জনে। ২৪ ঘণ্টায় ৫০০ জনসহ এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন মোট ৮ হাজার ৪২৫ জন। পরীক্ষিত নমুনা সংখ্যার বিবেচনায় বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নতুন রোগী শনাক্তের হার ২২ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৩১০টিসহ এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৭৬৬টি। বৃহস্পতিবার দুপুরে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১৫ জনের মধ্যে পুরুষ ১১ জন, নারী চার জন। এলাকা ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায় এদের সাত জন ঢাকা এবং আট জন চট্টগ্রাম বিভাগের। ঢাকা বিভাগের সাত জনের মধ্যে ঢাকা সিটিতে ছয় জন ও নারায়ণগঞ্জে একজন রয়েছেন এবং চট্টগ্রাম বিভাগের আট জনের মধ্যে চট্টগ্রাম সিটিতে দুই জন, চট্টগ্রাম জেলায় দুই জন, কক্সবাজারে দুই জন এবং কুমিল্লায় দুই জন রয়েছেন। তাদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুই জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে পাঁচ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে পাঁচ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে দুই জন এবং ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন। নাসিমা সুলতানা জানান, নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৭৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। আর শনাক্তের তুলনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৩৯ শতাংশ। অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ২৪৮ জনকে এবং ছাড়া পেয়েছেন ১৩৮ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন চার হাজার ৯৮৪ জন। মোট আইসোলেশন শয্যা ১৩ হাজার ২৮৪টি। আর ঢাকা মহানগরীতে সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকা সিটির বাইরে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ছয় হাজার ৩৪টি শয্যা প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ সব হাসপাতালে আইসিইউর সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট ১০৬টি। অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে চার হাজার একজন এবং ছাড়া পেয়েছেন দুই হাজার ৪০৪ জন। দুই লাখ ৭৫ হাজার ১০৫ জনকে এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে এবং কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেয়েছেন দুই লাখ ১৬ হাজার ৮১২ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫৮ হাজার ২৯৩ জন। ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা আছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে আছে ছয় হাজার ৩৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা আছে ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১০৬টি। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে। প্রায় চার লাখ পিপিই মজুদ রয়েছে- স্বাস্থ্য অধিদফতর ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, এ পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়েছে ২৪ লাখ ৫৪ হাজার ৭৩৭টি পিপিই এবং বিতরণ করা হয়েছে ২০ লাখ ৮২ হাজার ৯৩৪টি। বর্তমানে মজুদ রয়েছে ৩ লাখ ৭১ হাজার ৮০৩টি পিপিই। ২৪ ঘণ্টায় প্রায় দুই লাখ করোনা সংক্রান্ত কল ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য বাতায়নের নম্বরে ৬০ হাজার ৬০২টি, ৩৩৩ নম্বরে ১ লাখ ২৬ হাজার ৭০২টি এবং আইইডিসিআর’র নম্বরে ১৫৯৪টি করোনা সংক্রান্ত কল এসেছে। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় মোট কল এসেছে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৮৯৮টি। এ পর্যন্ত হটলাইনগুলোতে করোনা সংক্রান্ত মোট কল এসেছে ৮১লাখ ৮৯ হাজার ১৭৬টি। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫০০ জন- স্বাস্থ্য অধিদফতর ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতরের সমন্বিত করোনা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র জানায়, ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৩, কুর্মিটোল জেনারেল হাসপাতালে ৪৩ জন, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১২ জন, রিজেন্ট হাসপাতালে ৭ জন, সাজেদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ১ জন, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ১৩৪ জন, মিরপুর লালকুঠি হাসপাতালে ৩ জন, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৮ জন, সিএমএইচ হাসপাতালে ৫৩ জন এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ বার্ন ইউনিটে ৩৫ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন। এভাবে ঢাকা বিভাগে ২৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৯ জন, খুলনা বিভাগে ৩৩ জন, বরিশাল বিভাগে ১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩১ জন এবং রংপুর বিভাগে ২৯ জন সুস্থ হয়েছেন। অর্থাৎ একদিনে সারাদেশে ৫০০ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট ৮৪২৫ জন সুস্থ হয়েছেন বলে জানান ডাঃ নাসিমা সুলতানা। ৬০ বছরের বেশি বয়সী রোগীর মৃত্যুহার বেশি ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, এ পর্যন্ত করোনায় মারা যাওয়া রোগীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৬০ বছরের বেশি ৪২ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ২৭ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৯ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৭ শতাংশ, ২১ থেকে ২৯ বছরের ৩ শতাংশ এবং ১০ বছরের নিচে বয়সীরা ২ শতাংশ। এখন পর্যন্ত ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী রোগীর মধ্যে কেউ মারা যাননি। ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীরাই বেশি আক্রান্ত ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের বেশি ৪ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১৩ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৩ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২৪ শতাংশ, ২১ থেকে ২৯ বছরের ২৬ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের ৪ শতাংশ এবং ১০ বছরের নিচে বয়সীরা ৩ শতাংশ। করোনায় মৃতের হার ৭১ শতাংশ পুরুষ এবং ২৭ শতাংশ নারাী। আর আক্রান্তের হার ৬৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৩২ শতাংশ নারী।
×