ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা ভাইরাসের কারণে পর্যটক শূন্য মুজিবনগর কমপ্লেক্স

প্রকাশিত: ১৪:১৩, ২৬ মে ২০২০

করোনা ভাইরাসের কারণে পর্যটক শূন্য মুজিবনগর কমপ্লেক্স

সংবাদদাতা, মেহেরপুর ॥ ঈদের ছুটিতে সপ্তাহ জুড়ে মেহেরপুরের বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র গুলোতে দর্শনার্থীদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠতো। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারনে এবার অন্য রকম এক ঈদ পালন করছে মেহেরপুর বাসী। পর্যটক শূন্য অবস্থায় এবার দেশের স্বাধীনতার সুতিকাগার ঐতিহাসিক মুজিবনগর, নীলকুঠি, ডিসি ইকো পার্ক সহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে গুলো। ঈদের ছুটিতে বেড়াতে যাওয়া মানুষগুলো ঘরে বসেই দিন পার করছেন। ঐতিহাসিক সেই স্থানের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে ঈদ উৎসবকে আরো নিবিড়ভাবে উপভোগ করার জন্য নেই কোন পর্যটক। ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে ও ইতিহাস কে ছুঁয়ে দেখতে মুজিবনগর সহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান গুলোতে দর্শনার্থীদের নেই কোন ভিড়। কেউ বা পরিবার কেউ বন্ধু বান্ধব নিয়ে ছুটে আসতেন এখানে। ঈদের দিন থেকে বিভিন্ন ভাবে ঈদ উদযাপন করতেন তারা। মেহেরপুরের বিভিন্ন পর্ষটক কেন্দ্রসহ ঐতিহাসিক মুজিবনগর সৃতি কমপ্লেক্সে পর্ষটক শূন্য। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে প্রতি বছর মুজিবনগরে লাখো মানুষের ঢল নামতো। করোনা ভাইরাসের মহামারীতে গত দুই মাসের বেশী সময় ধরে লক ডাউনে ঐতিহাসিক মুজিবনগর কমপ্লেক্স। বছরের দুই ঈদে পর্ষটকদের ঢল নামতো এখানে। এবার জন শূন্য অবস্থায় সেই মুজিবনগর। লকডাউনের ফাঁদে পড়ে মুজিবনগর কমপ্লেক্সে কে ঘিরে গড়ে ওঠা ছোট বড় কয়েক শত ব্যাবসায়ীরা দিন পার করছে কষ্টে মধ্যে দিয়ে। ঈদ সহ বিভিন্ন উৎসব প্রাবণ ঘিরে তাদের বেচাকেনা জমে ঊঠতো। অনেকে দূর-দুরন্ত থেকে ঈদে মুজিবনগরে ঘুরতে আসলে মুজিবনগর কমপ্লেক্সের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছেন। উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী কমপ্লেক্সে চত্বরে সব ধরনের জন সাধারনের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা জারি করে। মুজিবনগরের নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ আর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটে আসতেন এখানে। আমঝুপি নীলকুটি, ভাটপাড়া ডিসি ইকো পার্কে সপ্তাহ জুড়ে দর্শনার্থীদের ভীড় লক্ষ করা যেত। জেলার সব গুলো পর্ষটক কেন্দ্র গুলো এই ঈদে পর্ষটক শূন্য । মুজিবনগরে অবস্থিত অন্যন্যা শিশু পার্কের পরিচালক হাসানুজ্জামান লাল্টু জানান, গত দুই মাসের বেশী সময় ধরে ঐতিহাসিক মুজিবনগর পর্ষনট কেন্দ্রটি উপজেলা প্রশাসন করোনার কারনে লকডাউন করে রেখেছে। বছরের দুই ঈদে পর্ষটকদের সমগমে তার পার্কটি ভড়ে ঊঠতো। ঈদের সময় ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকা আয় করার কথা জানান তিনি। এবার ঈদে মুজিবনগর লকডাউন থাকায় বেকার সময় পার করছেন তারা। প্রতি মাসে ২০ জন কর্মচারী ও পশুপাখির খাদ্য দিয়ে দেড়লক্ষ টাকা ব্যায় হয় এই পার্কে। পর্ষটক না আসায় কষ্টের মধ্যে দিন পার করছে তারা। এমন চলতে থাকলে কয়েক মাসের মধ্যে পার্ক তুলে দেওয়ার কথাও জানান। মুজিবনগর গেটে কসমেটিকস বিক্রেতা মেহেদুল জানান, আমরা এখানে একশটির মত দোকানদার আছি। প্রতি ঈদে আমরা ভালো বেচাকেনা করতাম। এবার করোনার কারনে মুজিবনগর কমপ্লেক্সে প্রবেশ বন্ধ থাকায় আমাদের কোন ব্যাবসা নেই। খুব কষ্টের মধ্য আমাদের দিন যাচ্ছে। দুই মাস পর দোকান খুলেছি ঈদে বেচাকেনার আশায় কোন দর্শনার্থী আসছে না। যারা আসছে তাদের পুলিশ ঘুরিয়ে দিচ্ছে। ঐতিহাসিক মুজিবনগরে ঘুরতে আসা কয়েকজন পর্ষটক জানান, করোনার মধ্যেও ঈদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মুজিবনগরে ঘুরতে এসেছিলাম কিন্তু ভিতরে প্রবেশ করতে দেইনি গেটে দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা। তাই আমরা ফিরে যাচ্ছি। মুজিবনগর কমপ্লেক্সের আনসার ক্যাম্পের কমান্ডার আব্দুল হালিম জানান, মহামারী করোনার কারনে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে গত দুই মাসের বেশী সময় ধরে মুজিবনগর ঈদের সময় এখানে লাখো মানুষের ঢল নামতো বলেও জানান তিনি। মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঊসমান গনি বলেন, সরকারী নির্দেশে বর্তমানে ঐতিহাসিক মুজিবনগর কমপ্লেক্স লকডাউন আছে। পরবর্তি নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে লক ডাউন তুলে নেওয়া হবে।
×