ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হল পিপিই’র প্রথম চালান

প্রকাশিত: ১১:১১, ২৬ মে ২০২০

যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হল পিপিই’র প্রথম চালান

অনলাইন রিপোর্টার ॥ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সঙ্কটে দেশের অর্থনীতিও যখন জবুথবু, তখন রপ্তানির তালিকায় নতুন এক পণ্য যোগ করল বাংলাদেশ। এই মহামারীকালে চিকিৎসকসহ রোগ ঠেকানোর লড়াইয়ে যারা রয়েছেন সামনের সারিতে, তাদের সুরক্ষা পোশাক পিপিইর চাহিদা বেড়েছে বিশ্বজুড়ে; আর তাই রপ্তানি শুরু হল। বেশ কয়েকটি তৈরি পোশাক কারখানা পিপিই তৈরিতে নামলেও বেক্সিমকো প্রথম চালানটি যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেছে। সোমবার বেক্সিমকোর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ড হেইনসের কাছে ৬৫ লাখ পিপিই গাউনের একটি চালান পাঠানো হয়েছে। এই চালান পৌঁছাবে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (ফেমা) কাছে। সোমবার এই পিপিই রপ্তানি উপলক্ষে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও বাংলাদেশে যুক্তরাষেট্রর রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার ও বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান উপস্থিত ছিলেন। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক শিল্পে অমানিশা নেমে এসেছে। পোশাক কারখানাগুলো যখন একের পর এক ক্রয়াদেশ হারাচ্ছে। বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে এই পিপিই ছিল না। তবে চাহিদা দেখে অনেক কারখানা তা তৈরিতে মনোযোগী হয়। বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক এর আগে বলেছিলেন, “বিশ্বের অনেকগুলো সংস্থা বাংলাদেশকে পিপিই তৈরির সক্ষম দেশে পরিণত করতে এগিয়ে এসেছে। এটি প্রচলিত পোশাকের চেয়েও একটু ভিন্ন ধরনের। এর সুইং মেশিনগুলোও আলাদা। তাই প্রচলিত প্রডাকশন লাইনে পিপিই তৈরি সম্ভব হচ্ছে না। তবে আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যেই বাংলাদেশের অনেক কারখানা পিপিই তৈরির সক্ষমতা অর্জন করবে।” এর মধ্যেই বেক্সিমকো গ্রুপ পিপিই বানিয়ে তা রপ্তানি করল। বেক্সিমকো টেক্সটাইলসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ নাভেদ হোসেন বলেন, “কোভিড-১৯ ভাইরাসের কারণে বিশ্বের কার্যপদ্ধতি পাল্টে গেছে। তাই বেক্সিমকোকেও জরুরিভিত্তিতে সক্রিয় হতে হয়েছে। “মাত্র দুই মাসের মধ্যে আমরা আমাদের বিশ্বমানের উৎপাদন, প্রযুক্তিগত ও ডিজাইন দক্ষতা ও সক্ষমতা প্রয়োগ করে পিপিই তৈরি করতে শুরু করি। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাপী অতিপ্রয়োজনীয় পিপিই-এর সরবরাহ বৃদ্ধিতে অবদান রাখে বেক্সিমকো।” পিপিই উৎপাদন এই সময়ে ঝিমিয়ে পড়া তৈরি পোশাক শিল্পকে চাঙা করে দেশের অর্থনীতিতে সচল রাখবে বলে আশাবাদী তিনি। রপ্তানির অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বেক্সিমকোর প্রশংসা করে বলেন, “সংকটময় সময়ে বাংলাদেশ মাত্র দুই মাসের মধ্যে এই মুহুর্তে স্বাস্থ্য খাতের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিশ্বের এক গুরুত্বপূর্ণ বাজারে রপ্তানি করছে; তাও আবার ১০/২০ হাজার নয়, ৬৫ লাখ পিস। এক এক অভাবনীয় অর্জন।” পিপিই রপ্তানির ছবি নিজের ফেসবুকেও শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, “ঈদের দিনে এটা দেখে খুব ভালো লাগলো।” অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার বলেন, “বিশ্ববাজারের জন্য বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যায় বিশ্ব মানের পিপিই উৎপাদনের পদক্ষেপকে স্বাগত জানায় যুক্তরাষ্ট্র। বেক্সিমকো ও হেইনস’র চুক্তিতে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠে এ দুটি মহান দেশ কোভিড-১৯ মোকাবেলায় কীভাবে লড়াই করছে।” বেক্সিমকো টেক্সটাইল দেশের শীর্ষ স্থানীয় পোশাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন ৪০ হাজার কর্মী।
×