ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা ভাইরাস ॥ প্রাদুর্ভাবের নতুন কেন্দ্র দক্ষিণ আমেরিকা

প্রকাশিত: ১৪:৫৪, ২৩ মে ২০২০

করোনা ভাইরাস ॥ প্রাদুর্ভাবের নতুন কেন্দ্র দক্ষিণ আমেরিকা

অনলাইন ডেস্ক ॥ যুক্তরাষ্ট্রের পর দক্ষিণ আমেরিকাই করোনা ভাইরাস মহামারী ছড়ানোর নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের সবচেয়ে বড় দেশ ব্রাজিল এরই মধ্যে কোভিড-১৯ এ জ্ঞাত আক্রান্তের সংখ্যায় রাশিয়াকে টপকে বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। দারিদ্র্যপীড়িত ও ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আফ্রিকা মহাদেশেও নতুন করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। শনিবার সকাল পর্যন্ত ব্রাজিলে তিন লাখ ৩০ হাজারের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে জনস হপকিন্স বিশবিদ্যালয়ের হালনাগাদ তথ্যে দেখা যাচ্ছে। রাশিয়ায় শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ ২৬ হাজার ৪৪৮ রোগী। আক্রান্ত-মৃত্যুতে সবার উপরে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ লাখের বেশি মানুষের দেহে ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে। ব্রাজিল ছাড়াও দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরু ও চিলিতেও প্রতিদিন কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শনিবার সকাল পর্যন্ত পেরুতে এক লাখ ১১ হাজারের বেশি মানুষের দেহে নতুন করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে; চিলিতে এ সংখ্যা ৬২ হাজারের কাছাকাছি। কেবল আক্রান্তই নয়; ব্রাজিলে মহামারীতে মৃত্যুও ২১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। কোভিড-১৯ এ মৃতের সংখ্যায় তাদের উপরে আছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, স্পেন ও ফ্রান্স। দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে পেরুতে নতুন করোনাভাইরাসে মৃত্যু তিন হাজার ২০০ ছাড়িয়েছে; চিলিতে এ সংখ্যা এখনও অনেক কম, মাত্র ৬৩০। মহাদেশটির অবস্থা ক্রমশ আরও খারাপ হচ্ছে বলে শুক্রবার বলেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি স্বাস্থ্য কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক ড. মাইক রায়ান। “এক অর্থে দক্ষিণ আমেরিকাই এখন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের নতুন কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে,” সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন তিনি। মহামারীতে মহাদেশটির সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্রাজিলের কর্তৃপক্ষ কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় অ্যান্টি-ম্যালেরিয়াল ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের সফলতা এখনও প্রমাণিত নয় এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও মারাত্মক হতে পারে জানিয়ে বিশ্বজুড়েই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ওষুধটির ব্যাপকভিত্তিক ব্যবহারে সাবধান করে আসছিলেন। শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে রায়ানও কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারের ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করেছেন। একইদিন এক বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আফ্রিকায় নতুন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। “আফ্রিকায় কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে। ১৪ সপ্তাহ আগে মহাদেশটিতে প্রথম আক্রান্তের সন্ধান মেলে, আর এখন আফ্রিকার সব দেশেই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে,” বিবৃতিতে বলেছে তারা। আফ্রিকায় নতুন করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে তিন হাজার ১০০র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। “এখন পর্যন্ত আফ্রিকায় কোভিড-১৯ এর মৃদু অবতরণ দেখা যাচ্ছে, বিশ্বের অন্য দেশগুলোর তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যাও এখানে এখনও বেশি নয়। কিন্তু ভঙ্গুর স্বাস্থ্যকাঠামো ও হঠাৎ উল্লম্ফনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারার আশঙ্কা থাকায় আমাদের আত্মতৃপ্তিতে ভুগলে চলবে না,” বলেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক ড. মাতশিদিসো মোয়েতি।
×