ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আমফানে বিদ্যুতের ক্ষতি ৭০ কোটি টাকার

প্রকাশিত: ২১:৩০, ২৩ মে ২০২০

আমফানে বিদ্যুতের ক্ষতি ৭০ কোটি টাকার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঘূর্ণিঝড় আমফানে প্রায় ৭০ কোটি টাকার বিদ্যুত অবকাঠামোর আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিতরণ এবং সঞ্চালন উভয় জায়গাতে এই ক্ষতি হয়েছে। তবে সঞ্চালনের তুলনায় বিতরণে ক্ষতির পরিমাণ বেশি। সারাদেশে বিদ্যুত বিতরণ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হলেও সাতক্ষীরা, যশোর এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আজ শনিবার বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বিদ্যুত বিতরণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে যোগাযোগ করে এই ক্ষতির পরিমাণ জানা গেছে। তবে প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে এই ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কমতে বা বাড়তে পারে। আজ শনিবার বিদ্যুত বিভাগে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দেবে বিতরণ কোম্পানিগুলো। শুক্রবারও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের ক্ষতির পরিমাণ জানিয়েছে। জানতে চাইলে আরইবির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যার মধ্যে আরইবির বিদ্যুত পরিস্থিতি ৯০ ভাগ ঠিক করে ফেলবো বলে আশা করছি। বাকিটা ঠিক করতে শনিবার পর্যন্ত সময় প্রয়োজন হবে।’ তবে সাতক্ষীরা এবং যশোর-১ এবং ২ পল্লী বিদ্যুত সমিতির কিছু এলাকায় সরবরাহ স্বাভাবিক হবে না। এসব এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে বলে জানান তিনি। আরইবি মন্ত্রণালয়ে যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানিয়েছে তাতে বলা হয়েছে তাদের সারাদেশে ৩০ কোটি টাকার মতো আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তবে এর সঙ্গে কিছু ওভারহেড কস্ট যোগ হয়ে ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে পারে। বিদ্যুত বিভাগ জানায়, আরইবির দুই হাজার ৭০০ বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে গেছে, ট্রান্সফরমার পুড়ে গেছে ৭৬০টি, বিদ্যুতের ১৯ হাজার মিটার পুড়ে গেছে এছাড়া ৩৩ হাজার ৬০০ স্থানে সরবরাহ লাইনের তার ছিঁড়ে গেছে। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ ৩০ কোটি টাকার মতো। ঘূর্ণিঝড় আমফান দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত করার পর সীমান্ত জেলাগুলো ঘেঁষে উত্তরবঙ্গ অতিক্রম করে। এই এলাকা দিয়ে অতিক্রম করাতে দেশের তিনটি বিদ্যুত বিতরণ প্রতিষ্ঠান মূলত ক্ষতির শিকার হয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুত বিতরণ কোম্পানি ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো), পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের বিভিন্ন সমিতি এবং নর্দান ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি নেসকো। এর বাইরে কুষ্টিয়াতে একটি সাবস্টেশনের ট্রান্সফরমার পুড়ে গেছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির। তবে বেশি এলাকায় বিদ্যুত বিতরণ করায় আরইবির আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ অন্যদের তুলনায় বেশি। ঘূর্ণিঝড়টি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত করায় এ অঞ্চলের ২১ জেলায় বিদ্যুত বিতরণ কোম্পানি ওজোপাডিকোর ৭৮১টি পোল ভেঙ্গে গেছে। আর এক হাজার ৭১৬টি পোল হেলে পড়েছে। মোট ৪৯০ কিলোমিটার লাইনের ক্যাবল ছিঁড়ে পড়েছে। এছাড়া ১১৪টি ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে গেছে। ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিক উদ্দিন বলেন, সব মিলিয়ে তাদের ক্ষতির পরিমাণ ৯ থেকে ১০ কোটি টাকার মধ্যে রয়েছে। তিনি জানান অধিকাংশ এলাকায় সরবরাহ স্বাভাবিক করেছে বিতরণ কোম্পানিটি। বাংলাদেশে বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের কয়েকটি এলাকায় কিছু ক্যাবেল ছিঁড়ে গেলেও বড় রকমের কোন আর্থিক ক্ষতি হয়নি। কুষ্টিয়াতে পিজিসিবির একটি সাবস্টেশন পুড়ে গেছে। এই সাবস্টেশনের নতুন ট্রান্সফরমারের দাম ২০ কোটি টাকা। ফলে পিজিসিবিরও আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ২০ কোটি টাকার মধ্যেই থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে বিদ্যুত বিতরণ করা নেসকোর আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১০ কোটি টাকার মতো হতে পারে বলে জানা গেছে।
×