ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘আমি খুব রোমান্টিক ছিলাম’

প্রকাশিত: ২০:১২, ২৩ মে ২০২০

‘আমি খুব রোমান্টিক ছিলাম’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মানুষের জীবনের প্রথম কিছু ঘটনা সবসময়ই অন্যরকমভাবে দাগ কেটে থাকে হৃদয়ে। যা কখনোই ভুলা যায় না। আমেরিকান টেনিসের জীবন্ত কিংবদন্তি সেরেনা উইলিয়ামসের প্রথম চুমো খাওয়ার ঘটনাটাও ঠিক সে রকম। তবে তার প্রথম সেই চুমো খাওয়ার অভিজ্ঞতটা ছিল ভয়ঙ্কর! হ্যাঁ, ১৮ বছর বয়সে ইতালিয়ান এক ব্যক্তির সেই চুমো রীতিমতো আতঙ্কিত করেছিল সেরেনাকে। এ প্রসঙ্গে ২৩ গ্র্যান্ডস্লামের মালিক সেরেনা উইলিয়ামস এক আলাপচারিতায় বলেন, ‘প্রথম চুমো খাওয়ার গল্পটা আমি বলতে চাই না। কেননা, পাশের রুমেই আমার স্বামীর অবস্থান। তবে সে যেহেতু দেখছে না তাই বলি। প্রথম চুমো খাওয়ার প্রশ্নের উত্তর বলাটা সত্যিই ভয়ঙ্কর! তবে এটা এমন একটা ব্যাপার যা আমি কখনোই ভুলতে পারব না। এটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বাজে এক অভিজ্ঞতা।’ আমেরিকান টেনিসের কৃষ্ণকলি আরও বলেন, ‘আমার বয়স তখন প্রায় ১৮। সেই সময়ে আমি একজনকে পছন্দ করতাম। সে হাইস্কুল থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে। সেই গল্পটা অনেক বড়। যদি সংক্ষেপে বলি, সেই প্রথম ইতালিতে আমাকে চুমো খায়। ব্যাপারটা খুব ভয়ঙ্কর ছিল। আমি এখনও মনে করতে পারি। এরপর আমার পেট খারাপ হয়ে গেছিল। সেই ঘটনাটা আসলেই ভয়ঙ্কর ছিল। তখন ইতালিয়ান এক বন্ধুর সঙ্গে দৌড়ে বাসায় চলে গিয়েছিলাম আমি। প্রকৃতপক্ষে তার সেই চুমো খাওয়াটাকে আমি ঘৃণা করেছিলাম। এরপর আমি অনেক কেঁদেছিলাম। সেই সময়ে আমি খুব রোমান্টিক ছিলাম। যদিওবা আমি এখনও রোমান্টিকও রয়ে গেছি। যে কারণে এখনও কোন পরিবর্তন হয়নি আমার।’ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ করোনাভাইরাসের কারণে সব ধরনের টেনিস টুর্নামেন্ট স্থগিত। খেলোয়াড়রাও ঘরবন্দী জীবনযাপন করছেন। এই লকডাউনে সেরেনা উইলিয়ামস তার স্বামী ও একমাত্র কন্যার সঙ্গে অবস্থান করছেন। তবে করোনাভাইরাসের কারণে টেনিস থেকে যে বিরতিটা পেয়েছেন সেটাকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন তিনি। বিশেষ করে এই অবসর সময়টা তার শরীরের জন্য অনেক কার্যকর হয়েছে। তবে এটাও বলেছেন যে, প্রায় দুই মাসেরও বেশি সময় লকডাউনে থাকার পর এই মুহূর্তে টেনিসে ফেরার জন্য যেন কিছুতেই তর সইছে না সেরেনা উইলিয়ামসের। বয়সে আটত্রিশকেও ছাড়িয়ে গেছেন সেরেনা উইলিয়ামস। তারপরও চলতি বছরের শুরুটা বেশ ভালই করেছিলেন সেরেনা উইলিয়ামস। অকল্যান্ডে বছরের প্রথম খেতাব জিতেছিলেন তিনি। মা হওয়ার পর এটাই তার প্রথম শিরোপা। ৭২তম ডব্লিটিএ শিরোপা জেতার দীর্ঘ তিন বছর পর জিতলেন ৭৩ নম্বরটি। সর্বশেষ ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক এই নাম্বার ওয়ান। এরপর চার গ্র্যান্ডস্লামসহ পাঁচটি ফাইনাল খেলে তার সবকটিতেই হেরেছিলেন তিনি। যে কারণে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল ৩৮ বছরের সেরেনা আর খেতাব জিততে পারবেন কি না। অনেক সমালোচকই অবসরের জল্পনাও উস্কে দিয়েছিলেন। সেরেনার নিজের মুখেও শোনা যায় তার ক্লান্তির কথা। কিন্তু সেসব উড়িয়েই চার দশকে শিরোপা জয়ের অদ্ভুত নজির গড়ে ফেলেন সেরেনা উইলিয়ামস। ১৯৯৯ সালে প্রথম শিরোপা জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন সেরেনা উইলিয়ামস। এই শতাব্দীর দুই দশক মিলিয়ে মোট ৭৩ শিরোপা জিতেছেন তিনি। এই শতকের তৃতীয় দশক শুরুর ১২ দিনের মধ্যেই অকল্যান্ডে খেতাব জয় আমেরিকান তারকার। উইলিয়ামস পরিবারের দুই মেয়ে সেরেনা উইলিয়ামস ও ভেনাস উইলিয়ামস। রিচার্ড উইলিয়ামস আর ওরাসিন প্রাইসের ঘর আলো করে ১৯৮০ সালে জন্ম ভেনাসের। তার এক বছর পরেই ভূমিষ্ঠ হয় সেরেনা। উইলিয়ামসের পাঁচ সন্তানের মধ্যে ভেনাস ৪র্থ আর সেরেনা সর্বকনিষ্ঠ। বাবা রিচার্ড ছিলেন একজন টেনিস পাগল। খেলোয়াড় হিসেবে নিজে সফল না হলেও স্বপ্ন দেখেছেন মেয়েদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ুক টেনিস সঙ্গে নিয়ে। হয়েছেও তাই, সারা বিশ্ব আজ উইলিয়ামস কন্যাদের চেনে একনামে। ভেনাসের চেয়ে বয়সে এক বছর ছোট হলেও খ্যাতি ও প্রাপ্তির দিক দিয়ে অনেকাংশেই এগিয়ে সেরেনা। বাবার পরিকল্পনা ছিল ১৬ বছর বয়সে পেশাদার টেনিসে অভিষেক হবে মেয়ে সেরেনার। কিন্তু তার আগেই নিজের প্রতিভা দেখিয়েছেন এই মার্কিনী।
×