ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হালদায় ডিম ছেড়েছে মা মাছ ॥ সংগ্রহের উৎসবে জেলেরা

প্রকাশিত: ২০:০৩, ২৩ মে ২০২০

হালদায় ডিম ছেড়েছে মা মাছ ॥ সংগ্রহের উৎসবে জেলেরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফটিকছড়ি, ২২ মে ॥ দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে মা মাছ। প্রতিবছরের মতো এবারও হালদা নদীতে উৎসবের আমেজে ডিম সংগ্রহ করছেন স্থানীয় জেলেরা। শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে মা মাছ হালদা নদীতে পরিপূর্ণভাবে ডিম ছাড়তে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার প্রায় ৯০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকাজুড়ে আছে এ হালদা নদী। উক্ত তিন উপজেলার মধ্যে রাউজান ও হাটহাজারী অংশে হালদা নদীর সত্তার ঘাট, অঙ্কুরীঘোনা, মদুনা ঘাট, মদুনাঘাট, গড়দুয়ারা, কান্তার আলী চৌধুরী ঘাট, নাপিতের ঘোনা ও মার্দাশা এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে মা মাছ ডিম ছেড়েছে। আর ডিম সংগ্রহকে কেন্দ্র করে হালদা নদী পাড়ে বসেছে হাজার হাজার মানুষের মিলনমেলা। প্রশাসনের কর্মকর্তারাও আছেন তাদের সঙ্গে। এবার অমাবস্যা তিথি থাকলেও বর্ষণ এবং পাহাড়ী ঢল ছাড়াই মা মাছ ডিম ছেড়ে দিয়েছে। প্রথমে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নমুনা ডিম ছাড়ে মা মাছ। সকালে পূর্ণমাত্রায় ছেড়ে দেয়া হয়। প্রায় ৩ শতাধিক নৌকায় দেড় হাজার মৎস্যজীবী ডিম সংগ্রহ করছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সংগ্রহ করা ডিম থেকে রেণু ফোটানো হবে। পরিচর্যার মধ্য দিয়ে সেই ডিম থেকে পোনা হবে। ডিম ফোটানোর জন্য তিনটি হ্যাচারি ও ৬০টি কুয়া প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া ব্যক্তিগত পর্যায়ে আরও কুয়া প্রস্তুত আছে। তিনি আরও জানান, ডিম আহরণ অব্যাহত আছে। আহরিত ডিমের পরিমাণ এবার কত হবে তা সন্ধ্যা নাগাদ জানা যাবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘সাধারণত পূর্ণিমা বা অমাবস্যার তিথিতে ভারি বর্ষণ এবং পাহাড়ী ঢল নামলেই মা মাছ ডিম ছাড়ে। এর আগে, ২০১৯ সালে প্রায় ৭ হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছিল হালদা থেকে। ২০১৮ সালে স্থানীয়রা ডিম সংগ্রহ করেছিলেন ২২ হাজার ৬৮০ কেজি। ২০১৭ সালে এর পরিমাণ ছিল মাত্র ১ হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৬ সালে ৭৩৫ (নমুনা ডিম) কেজি, ২০১৫ সালে ২ হাজার ৮০০ কেজি। মৎস্য বিজ্ঞানীরা জানান, প্রতিবছর হালদা নদীর এ মৎস্য প্রজনন খাতে রাজস্ব পাওয়া যায় ৮শ’ কোটি টাকা।
×