ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আমফানে রাজশাহীর আম চাষীদের মাথায় হাত

প্রকাশিত: ২৩:৪৮, ২২ মে ২০২০

আমফানে রাজশাহীর আম চাষীদের মাথায় হাত

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ ঘূর্ণিঝড় আমফানের প্রভাবে রাজশাহীতেও রাতভর তা-ব চালিয়েছে ঝড়। বুধবার রাতের এই ঝড়ে রাজশাহীর অন্তত ১৫ শতাংশ আম গাছ থেকে ঝরে পড়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এ তথ্য দিয়েছে। অবশ্য জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেছেন, আম ঝরেছে ২০ শতাংশ। এদিকে গাছের আম ঝরে পড়ায় চাষীদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে। তারা বলছেন, এবার এমনিতেই আমের ফলন কম। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দাম পাওয়া নিয়েই ছিলেন অনিশ্চয়তায়। তার ওপর ঝড়ে আম ঝরে পড়ায় ফলনও কমে গেল। এতে তারা লোকসানের মুখে পড়বেন। রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বলেন, রাতেই বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে আমরাই জেলা প্রশাসককে জানিয়েছিলাম যে ২০ শতাংশ আম ঝরে পড়েছে। তবে সকালে আমরা বিভিন্ন বাগান পরিদর্শন করে দেখছি ক্ষতির পরিমাণ আরেকটু কম। শহরে ১০ শতাংশ এবং চারঘাট উপজেলায় এসে ১৫ শতাংশ আম ঝরে পড়ার দৃশ্য দেখছি। যোগাযোগ করা হলে বাঘা উপজেলার বাউসা গ্রামের আম চাষী ফরিদুল ইসলাম বলেন, বাগানে ঢিলের মতো আম পড়ে আছে। তারা কুড়াচ্ছেন। আচারের জন্য দুই থেকে পাঁচ টাকা কেজি দরে এসব আম বিক্রি করতে হবে। আর কয়টা দিন গেলেই এসব আম পরিপক্ব হয়ে যেত। এখন বাগানের ফলন কমে যাবে। এবার আমে লাভ হবে না বলেই মনে করছেন তিনি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা শামসুল হক বলেন, আম ঝরে গেলে তো ফলন কমবেই। এখন চাষীরা যদি আমের ভাল দাম না পান তাহলে হয়তো এবার তারা ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাই আমের যেন সঠিক মূল্য পাওয়া যায় তার জন্য যা যা করা দরকার আমাদের করতে হবে। নওগাঁ নিজস্ব সংবাদদাতা নওগাঁ থেকে জানান, ঘূর্ণিঝড় আমফানের প্রভাব নওগাঁ জেলাসহ সীমান্তবর্তী সাপাহার ও পোরশা উপজেলার ওপরও পড়েছে। বুধবার রাতভর ও বৃহস্পতিবার দিনভর আমফানের তা-বে সাপাহার ও পোরশার আম বাগানগুলোতে আমচাষীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই ঝড়ো হাওয়া কখনও দমকা হাওয়ায় রূপ নিয়ে বাতাসের গতিবেগকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর মধ্যে থেমে থেমে প্রচ- ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টিপাতও হয়েছে প্রচুর, জেলার বদলগাছী উপজেলায় অবস্থিত আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে রাতে যে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিপাত হয়েছে তা ঘূর্ণিঝড় আমফানেরই প্রভাব। এই ঘূর্ণিঝড়ের তোড়ে সাপাহার ও পোরশায় বাগানে বাগানে প্রচুর আম ঝরে পড়ায় ভোর হতে প্রতিটি বাগানে সাধারণ মানুষের আম কুড়ানোর ধুম পড়ে যায়। সাপাহার উপজেলার আমচাষী তছলিম উদ্দীন, মুমিনুল হক, দেলোয়ার হোসেন, শাহজাহান আলীসহ অনেক আমচাষী জানান যে, প্রায় ১৫ দিন পূর্বে কালবৈশাখীর তা-বে আমাদের এলাকায় আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। সে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ঘূর্ণিঝড় আমফান আবারো এই এলাকায় আঘাত হানল। আমফানের এই আঘাতে প্রতিটি বাগানে প্রায় ৩০ শতাংশ আম মাটিতে ঝরে পড়েছে। এবারের ঝড়ে বড় সাইজের আমই ঝরে গেছে।
×