ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে বিএনপির আহ্বান

প্রকাশিত: ২৩:১০, ২২ মে ২০২০

আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে বিএনপির আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঘূর্ণিঝড় আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার দুপুরে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ আহ্বান জানান। এদিকে সকালে রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় ত্রাণ বিতরণকালে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, স্বাস্থ্য খাতে সরকারের কোন নজর নেই। প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে ফখরুল বলেন, বিএনপির সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানাচ্ছি তারা যেন সব সামর্থ্য নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান। পাশাপাশি সমাজের সচ্ছল ব্যক্তিদেরও উপদ্রুত এলাকায় অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি। আমি ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা ও তাদের শোকবিহ্বল পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড়ে আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করছি এবং তাদের দ্রুত সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণ ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের বাড়িঘর নির্মাণে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সহযোগিতা প্রদানের আহ্বান জানাচ্ছি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, বুধবার উপকূলীয় জেলাসমূহে সুপার সাইক্লোন আমফানের তীব্র আঘাতে হতাহতের ঘটনাসহ মানুষের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, গাছপালা, গবাদিপশু ধ্বংস হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছি। উপকূলীয় এলাকা সাতক্ষীরা দিয়ে আসা এই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে কয়েকটি পয়েন্টের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বহু চিংড়ি ঘের ও বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে গেছে এই দানবীয় ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে। এছাড়াও কলাখেত, পানের বরোজ এবং আমসহ ফসলি খেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফখরুল বলেন, আমফানের আঘাতে মানুষের জীবন ও সম্পদ হয়েছে বিপন্ন, প্রাণহানীসহ অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়েছে। আমফান এর মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলসমূহের জনগণের প্রতি আমি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের করোনাভাইরাসের মহামারীতে দুর্বিষহ জনজীবনের ওপর এই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অভিঘাত এক ভয়াবহ বিপর্যয়। তবুও আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি অতীত ঐতিহ্যের মতো উপকূলবর্তী অঞ্চলসমূহের সাহসী মানুষরা তাদের শোক ও ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠে নব উদ্যোমে জীবন সংগ্রামে বিজয়ী হবে ইনশাল্লাহ। মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে প্রার্থনা করছি তিনি যেন ক্ষতিগ্রস্ত ও শোকে ¤্রয়িমান মানুষকে এই বিশাল শোক ও কষ্ট সইবার ক্ষমতা দান করেন। স্বাস্থ্য খাতে সরকারের কোন নজর নেই- রিজভী ॥ দেশের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে (এডিপি) স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দে সরকারের অবহেলা প্রকাশ পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুমের পক্ষে অসহায় ও দরিদ্রদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণকালে তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য খাতে সরকারের কোন নজর নেই। রিজভী বলেন, বিশ্বব্যাপী মহামারীর কবলে গোটা বাংলাদেশে আজকে যে ভয়াবহ অবস্থা এখানে সরকারের অগ্রাধিকার যে খাত সেই খাতের মধ্যে ৭ নাম্বারে রাখা হয়েছে স্বাস্থ্য খাতকে। গত বছর ছিল ১০ হাজার কোটি টাকা, এই বছর রাখা হয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকার একটু বেশি। অর্থাৎ এখনও এই স্বাস্থ্য খাতের ব্যাপারে সরকারের কোন নজর নেই। নজর থাকলে এ খাতে বরাদ্দ আরও করত। এডিপিতে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, সাংবাদিকরা পরিকল্পনামন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন করেছিল, করোনা মহামারীতে হাসপাতালে যন্ত্রপাতি নেই, স্বাস্থ্য সেবা নেই, স্বাস্থ্য খাতে সরকারের অগ্রাধিকার এত নিচে কেন? জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছেন, আমরা টাকা বাড়ালে সেটা বাস্তবায়নের সক্ষমতা নেই। স্বাস্থ্য খাতে এ সরকার ব্যর্থ মন্তব্য করে সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা খুব উষ্মা প্রকাশ করেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন আমরা নাকি দায়িত্ব নিয়ে কথা বলি না। কই আপনারা তো কোন কিছুর সমাধান করতে পারেননি। আজকে হাসপাতালে ভেন্টিলেটর নেই, অক্সিজেনের সিলিন্ডার নেই, যে যন্ত্র অক্সিজেন দেবে সেই যন্ত্র নেই। যে অক্সিজেন মাস্ক লাগে সেই মাস্ক ৪০ শতাংশ হাসপাতালে নেই। এগুলো কি সরকারের ব্যর্থতা নয়? সরকারের ব্যর্থতার কারণেই তো করোনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। রিজভী বলেন, ব্যর্থতার সমালোচনা করলেই সরকারের লোকেরা খুব মন খারাপ করেন, তারা রাগান্বিত হন। যারা এসব বিষয় নিয়ে ফেসবুকে লেখেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে, গ্রেফতার করে। গাজীপুরে পলাশ নামে একটি ছেলে ফেসবুকে লেখার কারণে তাকে গ্রেফতর করা হয়েছে। কে কোন বিষয়ে কি লিখছেন তাদের ওপর সরকারের নজরদারি রয়েছে অথচ করোনাকে প্রতিরোধ করার জন্য কি কি ব্যবস্থা নেয়া দরকার এ ব্যাপারে তাদের কোন নজর নেই। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক এজিএম শামসুল হক, ৯৭নং ওয়ার্ডেও সভাপতি রাশেদ আলম মনু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের বাবু প্রমুখ।
×