অনলাইন রিপোর্টার ॥ ঘূর্ণিঝড় আমফান বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হয়ে গভীর স্থল নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় সতর্ক সংকেত কমিয়ে এনেছে আবহাওয়া অফিস। এখন ঘূর্ণিঝড়টি আরও দুর্বল হয়ে উত্তরদিকে সরে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আবহাওয়া বিভাগের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঝড়টি গভীর স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। রাজশাহী-পাবনা অঞ্চল অতিক্রম করে এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে সরে যাচ্ছে। তবে এর প্রভাবে এখনও সাগর উত্তাল আছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও আশপাশের এলাকায় ঝড়ো বাতাস বইলেও দেশের সমুদ্র বন্ধরগুলোকে মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আমফান বাংলাদেশ উপকূলের কাছাকাছি চলে আসার পর বুধবার সকালে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরেও ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলেছিল বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস। উপকূলীয় জেলার দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১০-১৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলেও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। সুপার সাইক্লোন আমফান কিছুটা শক্তি হারিয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় রূপে বুধবার দুপুরের পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আঘাত হানে। কলকাতার উপর দিয়ে ঝড় বয়ে যাওয়ার সময় এর বাতাসের তীব্রতা ছিল ঘণ্টায় ১৩৩ কিলোমিটারের মত।
ঝড়ে বাংলাদেশের কয়েকটি জেলা থেকে মৃত্যুর খবর এসেছে। বহু গাছপালা ও ঘরবাড়ি উপড়ে যাওয়ার খবরও এসেছে। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে উপকূলের ১০ লাখ মানুষ।
আমফান বুধবার রাতে বাংলাদেশ উপকূলে প্রবেশ করে। সন্ধ্যা ৭ টায় সাতক্ষীরায় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫১ কিলোমিটার।
যশোর-ঝিনাইদহ পেরিয়ে এটি এখন দেশের উত্তরাঞ্চেলে স্থল নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করছে। দিনভর এর প্রভাবে বৃষ্টি থাকবে। আরও বৃষ্টি ঝরিয়ে উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে হতে তা অস্তিত্ব হারাবে।
উপকূলীয় এলাকায় এখনও ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। সেই সঙ্গে আমাবস্যার প্রভাব ও বায়ুচাপের তারতম্যের কারণে কোথাও কোথাও স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৬ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আমফানের প্রভাবে সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ ২০৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ঈশ্বরদীতে রেকর্ড করা হয়েছে ১৬০ মিলিমিটার, ঢাকায় ৭৪ মিলিমিটার।
শুক্রবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক স্থানে ভারি (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারি বর্ষণ (৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বৃষ্টি হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে অধিদপ্তর।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: