ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

লাইলাতুল কদর আজ

প্রকাশিত: ২২:৫৭, ২০ মে ২০২০

লাইলাতুল কদর আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পবিত্র লাইলাতুল কদর আজ। বুধবার দিন শেষে যে রজনী পৃথিবীতে আসছে তা মহিমান্বিত রজনী হিসেবে পরিচিত। পবিত্র কোরান শরীফে এ রাতকে হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম বলে ঘোষণা করা হয়েছে। পুণ্যময় সম্মানিত এ রাতেই নাজিল হয়েছিল পবিত্র কোরান। এ কারণেই এই রাতের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি মুসলমানদের কাছে। আজ কদরের রাতে রাতব্যাপী ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাবেন মুসল্লিরা। তবে অন্য ইবাদতের মতো শব-ই-কদরের ইবাদত এবার ঘরে বসেই পালন করতে হচ্ছে মুসলমানদের। করোনা প্রভাবের কারণে সারাদেশ গত ২ মাস ধরে স্থবির হয়ে আছে। কার্যত সারাদেশের মানুষ এখন ঘরবন্দী। ঘরবন্দী জীবনের মধ্যে গত মাসের ২৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে মাহে রমজান। রমজানের সেহরি ইফতারি ঘরে বসেই আদায় করতে হচ্ছে। শুরু থেকে তারাবি নামাজও ঘরে বসেই আদায় করেন মুসল্লিরা। পরে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে মসজিদে নামাজ পড়ার ওপর স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিথিল করা হয়েছে। ফলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মসজিদে নামাজ আদায় শুরু হয়েছে। তবে শর্ত মেনে ওজু এবং সুন্নত নামাজ ঘরে আদায় করতে হচ্ছে। এই অবস্থায় কদরের রাত মুসল্লিদের সামনে হাজির। প্রতিবছর এই রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে সারারাত অতিবাহিত করবেন। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ রাজধানী এবং দেশের সকল মসজিদে ইবাদতের বিশেষ প্রস্তুতি নেয়া হয়ে থাকে। তবে এবার এই দিবসের বিশেষ কোন কর্মসূচী থাকছে না করোনার কারণে। ফলে এবার এই রাতের ইবাদত-বন্দেগিও ঘরের মধ্যে বন্দী থাকছে। এদিকে পবিত্র লাইলাতুল কদর উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম রওশন এরশাদ পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা এই রাতের গুরুত্ব তুলে ধরে বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বের সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানান। ইসলামী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লাইলাতুল কদর লাইলাতুল কদর সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত বা পবিত্র রজনী। আরবি ভাষায় ‘লাইলাতুল’ অর্থ হলো রাত্রি বা রজনী এবং ‘কদর’ শব্দের অর্থ সম্মান, মর্যাদা, মহাসম্মান। এ ছাড়া এর অন্য অর্থ হলো ভাগ্য, পরিমাণ ও তাকদির নির্ধারণ করা। ইসলাম ধর্ম অনুসারে, এ রাতে মহানবী হযরত মুহম্মদের অনুসারীদের সম্মান বৃদ্ধি করা হয়। মানবজাতির ভাগ্য পুনর্নির্ধারণ করা হয়। মুসলমানদের কাছে এই রাত অত্যন্ত পুণ্যময় ও মহাসম্মানিত হিসেবে পরিগণিত। কুরানের বর্ণনা অনুসারে, আল্লাহ এই রাত্রিকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন এবং এই একটি মাত্র রজনীর উপাসনা হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও অধিক সওয়াব লাভের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। লাইলাতুল কদর বা শব-ই-কদর অর্থ সম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ রাত। বছরের যে ক’টি দিন ও রাত বিশেষভাবে মহিমান্বিত, তার মধ্যে সবচেয়ে উত্তম ও ফজিলতপূর্ণ এই শব-ই-কদর। পবিত্র রমজানের এ রাতে লাওহে মাহফুজ থেকে নিম্ন আকাশে মহাগ্রন্থ আল কোরান অবতীর্ণ হয়। কোরান নাজিলের মাস হিসেবে রমজান যেমন বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত, তেমনি কোরান নাজিলের কারণেই শব-ই-কদর অতি ফজিলত ও তাৎপর্য বহন করে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, কোরান আমি লাইলাতুল কদরে নাজিল করেছি। এ রাতের তাৎপর্য বর্ণনা করে কুরানে বলা হয়েছে, ‘তুমি জান লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতারা ও রুহ (জিবরাইল) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সব ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করেন। (সুরা কদর)
×