ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাগেরহাটে ‘আমফান’ প্রস্তুতি চূড়ান্ত

প্রকাশিত: ১৬:১৮, ১৯ মে ২০২০

বাগেরহাটে ‘আমফান’ প্রস্তুতি চূড়ান্ত

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ সুপার সাইক্লোন ‘আমফান’এর প্রভাবে সুন্দরবন সন্নিহিত উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে আজ মঙ্গলবার দুপুর থেকে দমকা হাওয়ার সাথে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। মানুষের মধ্যে অজানা উদ্বেগ-উৎকন্ঠা বাড়ছে। জেলায় ৮৪৫টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। লোকজন সেখানে আসতে শুরু করেছেন। স্থানীয়দের আশ্রয়ে আসতে সহায়তার পাশাপশি করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি সুরক্ষায় প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে অতিরিক্ত সেচ্ছাসেবক টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া ৮৪টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। চূড়ান্ত পর্যায়ে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় মঙ্গলবার সকালে আবারও জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত হয়েছে। মোংলা বন্দরের মালামাল ওঠানামার কাজ বন্ধ করে জাহাজ গুলি নিরাপদে নেওয়া হয়েছে। জেলার ৩৪৫ সাইক্লোন শেল্টারের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানের ৫’শ পাকা ভবনে আশ্রয় কেন্দ্র করা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে পাঁচ লাখ ৯৬ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবেলায় দুর্যোগকালিন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ৮৪ টি মেডিক্যাল টিমের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষে সমন্বয় ১১ হাজার ৭শ ০৮ জন সেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। জেলা সদরসহ ৯টি উপজেলায় ও মোংলা বন্দরে ১টি করে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। ‘আমফানের’ আগেই মাঠে থাকা অবশিষ্ট পাকা ধান যে কোন অবস্থায় দ্রুত কেটে কৃষকের ঘরে তুলতে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার শেখ ফকর উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার থেকে পণ্য ওঠা-নামার কাজ বন্ধ রয়েছে। জাহাজ গুলো নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বন্দরে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় বন্দরের সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বন্দরে সার, ফ্লাইএ্যাশ, কয়লাবাহীসহ মোট ১১টি দেশি বিদেশি জাহাজ অবস্থান করছে। বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে.এম হুমায়ুন কবির জানান, ঘুর্ণিঝড় আম্পান মোকাবেলায় দুর্যোগকালিন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ৮৪ টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। সুন্দরবনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচাচীদের সর্বোচ্চ সর্তক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১০টি ষ্টেশন ও টহল ফাঁড়ির সকলকে নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে কঠোর নজরদারী বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছে বন বিভাগ। সাগর উত্তাল হয়ে উঠায় গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা এবং ট্রলারসমূহকে নিরাপদে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ বলেন, “স্থানীয় মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি মাথায় রেখে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা ও উপজেলাগুলোতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি, খাবার মজুদ রাখা। সার্বক্ষণিক সমন্বিত ব্যবস্থাপনায় সেচ্ছাসেবক ও মেডিক্যাল টীম কাজ করছে। জেলার অধিক ঝুকিপূর্ণ শরণখোলা, মোংলা, রামপাল ও মোরেলগঞ্জ উপজেলায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা সেখানে অবস্থান করে সরেজমিনে মনিটরিং করছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
×