ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রোজায় ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য ব্যবস্থাপনা

প্রকাশিত: ০১:২০, ১৯ মে ২০২০

রোজায় ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য ব্যবস্থাপনা

ডায়াবেটিস রোগীর রোজা রাখার সময় সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে খাদ্য ব্যবস্থাপনায়। পরবর্তী অংশটুকুতে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো- ক্স সেহ্রির খাবার সেহ্রির শেষ সময়ের অল্প কিছুক্ষণ আগে খাওয়া উচিত। ক্স ইফতারের সময় অধিক পরিমাণে মিষ্টি ও চর্বি জাতীয় খাবার গ্রহণ না করা ভাল। ক্স ডায়াবেটিস রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে যেন তারা পানি শূন্যতায় না ভোগেন। খেজুর খেলে, একটা খেজুর খেতে পারেন। ফলমূল, শাকসবজি, ডাল ও টক দই তালিকাভুক্ত করতে পারলে ভাল। ডাবের পানি পান করতে পারেন। যদি কোন পানীয় পান করেন তবে চিনিমুক্ত পানি বেছে নেওয়াই উত্তম। যদি মিষ্টি পানীয় পছন্দ করেন, তবে সুইটনার যেমন- ক্যানডেরাল, জিরো ক্যাল বা সুইটেক্স ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন (তবে এগুলোও বর্জন করাটা বেশি সুস্বাস্থ্যকর হবে)। ভাজা পোড়া খাবার যেমন- পিঁয়াজু, বেগুনী, পুরি, পরোটা কাবাব অল্প পরিমাণে খেতে পারেন। ক্স খাদ্যের ক্যালরি ঠিক রেখে খাওয়ার পরিমাণ এবং ধরন ঠিক করতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণ খাওয়া প্রয়োজন। ক্স রমজানের পূর্বে যে পরিমাণ ক্যালরি যুক্ত খাবার খেতেন রমজানে ক্যালরির পরিমাণ ঠিক রেখে খাবার সময় এবং ধরণ বদলাতে হবে। প্রয়োজন হলে নিউট্রিশনিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে খাবার তালিকা ঠিক করে নিতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে ওষুধের সঙ্গে খাবারের যেন সামঞ্জস্য থাকে। ইফতারের সময় অতি ভোজন এবং শেষ রাতে অল্প আহার পরিহার করতে হবে, বরং উল্টোটা হতে পারে। নমুনা তালিকা (ক্যালরি ১৬০০) ইফতারবুট ভুনা ১/২ কাপ (২৫ গ্রাম কাঁচা বুট) পিঁয়াজু ২ টা বড় মাপের (২৫ গ্রাম ডাল) বেগুনী ২ টা মাঝারি (১০ গ্রাম বেশন)মুড়ি ২.৫ কাপ (৩০ গ্রাম) মিষ্টি ফল যে কোন একটি (শশা, ক্ষীরা, আমড়া, কাজি পেয়ারা, ডাবের পানি, লেবুর পানি, (চিনি ছাড়া) ও অন্যান্য টক ফল ইচ্ছামতো খাওয়া যাবে।) সন্ধ্যা রাত আটার রুটি৯০ গ্রাম (৩ টা ছোট পাতলা) বা ভাত ২ কাপ মাছ বা মাংস২ টুকরা ডাল১.৫ কাপ মাঝারি ঘন দুধ (যদি হজমে সমস্যা না হয়)১ কাপ (সর ছাড়া) সবজি ইচ্ছামতো (আলু বাদে) সেহ্রিভাত২.৫ কাপ (৩০০ গ্রাম) মাছ বা মাংস২ টুকরাডাল১.৫ কাপ মাঝারি ঘন দুধ (যদি হজমে সমস্যা না হয়)১ কাপ (সর ছাড়া) সবজি ইচ্ছামতো (আলু বাদে) বিশেষভাবে জানা প্রয়োজন ক্স ডায়াবেটিস রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন হয়ত। তবে ৩ মাস আগে থেকে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রস্তুতি নিতে হবে। ক্স রোজার সময় নিজে ডায়াবেটিসের ওষুধ সমন্বয় করবেন না, এতে মারাত্মক পরিণতি হতে পারে। ক্স সেহ্রির খাবার সেহ্রির শেষ সময়ের কিছু আগে খাওয়া উচিত। ইফতারের সময় বেশি চিনিযুক্ত খাবার খাবেন না। ক্স রোজার সময় দিনের বেলা অতিরিক্ত ব্যয়াম করা উচিত নয়। এতে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে। ক্স রোজার সময় রাতের বেলা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি (সম্ভব হলে ডাবের জল), কম মিষ্টি রসালো ফল এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। ক্স মনে রাখতে হবে যে, রোজার সময়ে ওষুধ ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা পুরোটাই পাল্টে যাবে এবং রমজানের পর আবার নতুন করে স্বাভাবিক সময়ের ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ফিরে আসতে হবে। লেখক : সহকারী অধ্যাপক এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ Email: [email protected]
×