ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চলতি সপ্তাহেই আসছে প্রজ্ঞাপন

বৈচিত্র্য আনতে বিভিন্ন খাতের দক্ষদের কমিশনার পদে নিয়োগের দাবি

প্রকাশিত: ০০:০৫, ১৯ মে ২০২০

বৈচিত্র্য আনতে বিভিন্ন খাতের দক্ষদের কমিশনার পদে নিয়োগের দাবি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। রবিবার তাকে এই পদে নিয়োগ দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে সংস্থাটির তিনটি কমিশনার পদ এখনও শূন্য রয়ে গেছে। খুব দ্রুতই এই তিন পদে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হবে। কমিশনে বৈচিত্র্য আনতে বিভিন্ন খাত থেকে দক্ষদের নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, শেয়ারবাজারের উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের পাশাপাশি অন্যান্য সেক্টর থেকে দক্ষ জনবল নিয়োগ দেয়া জরুরী। এতে করে সব সেক্টরের জ্ঞানের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া সহজ হবে। এক্ষেত্রে শেয়ারবাজারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত পেশাদার হিসাববিদ, ব্যাংকার, আমলা ইত্যাদি সেক্টর থেকে শূন্য কমিশনার পদে জনবল নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বিএসইসিতে চারটি কমিশনার পদ। এসব পদে একই সেক্টরের পরিবর্তে বিভিন্ন সেক্টর থেকে দক্ষ জনবল নিয়োগ দিতে পারলে ভাল। এতে বিভিন্ন সেক্টরের দক্ষ কমিশনারদের থেকে সার্বিক বিষয়ে মতামত আসবে। ফলে শেয়ারবাজারের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হবে। তিনি আরও বলেন, ইকোনমিক, ফাইন্যান্স, এ্যাকাউন্টস, ব্যাংকার ব্যাকগ্রাউন্ড ভালমানের ব্যক্তিকে কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। যার সততা নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই এবং স্বাধীন চেতা। যে চাপের মুখে নতিস্বীকার করবে না। একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি শেয়ারবাজার। তবে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার এদিক থেকে এখনও অনেক পিছিয়ে। ফলে এই বাজারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া বর্তমান সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ। যা মোকাবেলায় একাডেমিক অভিজ্ঞদের পাশাপাশি বাস্তবিক জ্ঞানসম্পন্ন জনবল নিয়োগ দেয়াটাও জরুরী। কারণ এই বাজারে দেশের সব সেক্টরের লোকজন জড়িত। দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড এ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) সাবেক সভাপতি দেওয়ান নুরুল ইসলাম বলেন, একাডেমিকভাবে অভিজ্ঞদের পাশাপাশি বাস্তবিক জ্ঞাপনসম্পন্ন ব্যক্তিদেরও বিএসইসিতে কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়া উচিত। এক্ষেত্রে নিয়োগ কমিটির মাধ্যমে এই কাজ করা যেতে পারে। অতীত রেকর্ড ভাল এমন কাউকে বেছে কমিটি নিয়োগ দেবে। শেয়ারবাজারকে অর্থনীতির বড় জায়গা উল্লেখ করে দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট এ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট এ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) সাবেক সভাপতি এ.এস.এম শায়খুল ইসলাম বলেন, শেয়ারবাজার ভবিষ্যত অর্থনীতির চালিকাশক্তি। এমতাবস্থায় শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) যোগ্য ও সৎ কমিশনারের কোন বিকল্প নেই। সার্চ কমিটির মাধ্যমে যাছাই করে বিভিন্ন সেক্টরের সমন্বয়ে যোগ্য ও সৎ কমিশনার নিয়োগ করা যেতে পারে। নির্ভরশীল সূত্রে জানা গেছে, বিএসইসির কমিশনারের তিনটি শূন্য পদ খুব দ্রুতই পূরণ করা হবে। সম্ভাব্য কমিশনারদের তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাকাউনটিং এ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও বর্তমানে জনতা ব্যাংকের পরিচালক অজিত কুমার পাল এফসিএ, চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের পরিচালক এবং কষ্ট এ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট এ্যাকাউনটেন্টদের সংগঠন আইসিএমএবির নেতা একেএম দেলোয়ার হোসেন প্রমুখের নাম আছে। উল্লেখ্য, বিএসইসিতে কমিশনারের চারটি পদ আছে। এর মধ্যে একটি পদ কয়েক বছর ধরেই শূন্য ছিল। বাকি তিনজনের মধ্যে গত ১৭ এপ্রিল একজন ও গত ৩ মে একজনের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। বর্তমানে সংস্থাটিতে মাত্র একজন কমিশনার আছেন। বিএসইসিতে যে কোন নীতিগত সিদ্ধান্তের জন্য কমিশন বৈঠকে চেয়ারম্যান ও ন্যূনতম দুইজন কমিশনারের উপস্থিতি প্রয়োজন হয়। এর কম উপস্থিতিতে কোরাম হয় না।
×