ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

তামিমের সঙ্গে এবার-মুমিনুল, সৌম্য ও লিটনের জম্পেশ লাইভ আড্ডা

প্রকাশিত: ২০:৫৭, ১৮ মে ২০২০

তামিমের সঙ্গে এবার-মুমিনুল, সৌম্য ও লিটনের জম্পেশ লাইভ আড্ডা

মিথুন আশরাফ ॥ করোনাকালে বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক ও ওপেনার তামিম ইকবাল বিনোদন দিয়ে চলেছেন। নেট দুনিয়া কাঁপিয়ে চলেছেন। ঘরবন্দী ক্রিকেট প্রেমীদের একটু বিনোদন দেয়ার চেষ্টা করে চলেছেন। কঠিন জীবনটাকে একটু সহজ করার চেষ্টা করছেন। করোনাভাইরাসের কারণে ঘরবন্দী মানুষের একঘুয়েমি দূর করার উদ্দেশ্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশী-বিদেশী ক্রিকেটারদের সঙ্গে নিয়মিত লাইভ আড্ডার আয়োজন করছেন তামিম। তামিমের লাইভ আড্ডায় এবার যোগ দেন বাংলাদেশ দলের টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক, সৌম্য সরকার ও লিটন কুমার দাস। তাইজুল ইসলামও আড্ডায় আসেন। সবাই নিজেদের মধুর স্মৃতি, অতীত থেকে বর্তমান এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। মুমিনুল তার টেস্ট অধিনায়কত্ব, সৌম্য তার দলের স্বার্থে খেলা এবং লিটন তার বদলে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। তামিম একেকজনকে প্রশ্ন করে যান, বাকিরা জবাব দিয়ে যান। কোন কোন সময় তামিমকেও প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। দেশ পেরিয়ে বিদেশী ক্রিকেটারদের সঙ্গেও আড্ডা জমিয়েছেন তামিম। দেশের মুশফিক, মাশরাফি বিন মর্তুজা, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ থেকে শুরু করে রুবেল হোসেন, তাসকিন আহমেদ, নাসির হোসেন আড্ডা দেন। সঙ্গে সাবেক ক্রিকেটারদের মধ্যে নাঈমুর রহমান দুর্জয়, খালেদ মাহমুদ সুজন ও হাবিবুল বাশার সুমনও লাইভে এসে আড্ডা জমিয়ে তুলেন। দেশ পেরিয়ে বিদেশী ক্রিকেটারদের সঙ্গে আড্ডা চলছে তামিমের। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিসের পর ভারত ওপেনার রোহিত শর্মার সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা দেন তামিম। এবার আজ রাতে সাড়ে দশটায় ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলির সঙ্গেও আড্ডা জমাবেন তামিম। তামিমের সঙ্গে লাইভ আড্ডায় মুমিনুল হক নিজের অধিনায়কত্ব নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন। শুরুতে মুমিনুলের টেস্ট নেতৃত্ব নিয়ে তামিম বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটের সব থেকে বড় দায়িত্ব মুমিনুল তোর কাঁধে। ক্রিকেটের সব থেকে বড় খেলা টেস্ট। সব থেকে বেশি সম্মানের বিষয় টেস্টে খেলা আর সব থেকে বেশি সম্মানের টেস্টের অধিনায়কত্ব করা। আমার মনে হয় তুই তোর লিডারশিপ দিয়ে আমাদের দেশকে অনেক ভাল কিছু এনে দিতে পারবি। আমার মনে হয় টেস্টের জন্যই তুইই সেরা অধিনায়ক আমাদের জন্য।’ মুমিনুল বলেন, ‘আমি যখনই অধিনায়কত্বের প্রস্তাব পাই তখনই আমার মনে হয়েছিল অধিনায়কত্ব করার এটাই সব থেকে ভাল সময়। আমার দলে চার-পাঁচটা সিনিয়র খেলোয়াড় আছে। যারা ১০ বছর ধরে ক্রিকেট খেলছে সেই সঙ্গে আরও তিন-চারজন জুনিয়র আছে যারা দুর্দান্ত খেলোয়াড়। ভাল কিছু স্পিনার আছে সেই সঙ্গে ভাল কিছু পেসারও আছে। সবকিছু মিলিয়ে আমার মনে হয়েছে এটাই সেরা সময় অধিনায়কত্বের দায়িত্ব নেয়ার।’ সৌম্য ও লিটনের খেলার ধরনটাই আলাদা। লিটন তো বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান। স্টাইলিস ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেছেন খুব ভালভাবেই। দেশের হয়ে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ১৭৬ রানের রেকর্ড ইনিংসটি তো এখন লিটনেরই। আর সৌম্য যেদিন খেলেন, ফাটিয়ে দেন। এই দুইজনকে নিয়ে তামিমের আশা, ‘সত্যি কথা বলতে কি লিটন, আমি এখনও বললাম, তুই ও সৌম্য যে ধরনের খেলোয়াড়, এই রেকর্ডগুলো যদি কেউ ভাঙতে পারে, তোরাই ভাঙবি। আমার কথাটা ধরে রাখিস। সৃষ্টিকর্তা তোদের বিশেষ কিছু প্রতিভা দিয়েই বাংলাদেশে পাঠিয়েছে।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘হয় তো বা মাঝে মাঝে আমরা খুব তাড়াতাড়ি সমালোচনা শুরু করে দিই। কিন্তু তোরা যত বেশি খেলবি বাংলাদেশের জন্য, তত বেশি রেকর্ড ভাঙবি। আজ থেকে ৭ বছর পর এসে বলিস, আমি এই কথাটা বলেছিলাম।’ সৌম্য এই সময় নিজের বাঁহাতি হয়ে ওঠার গল্প জানান। ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীকে পরিবারের লোকজন অনেক পছন্দ করতেন বলেই এমনটি যে হয়েছে, তা বলেন। সঙ্গে দলের স্বার্থে সব মেনে নিয়ে খেলার কথাও জানান সৌম্য, ‘দলের স্বার্থে আমি আসলে মেনে নিই। যতদিন খেলেছি আমি চেষ্টা করেছি যেই পজিশনেই খেলি না কেন একটা রান করলেও দলের যেন সেটা কাজে লাগে।’ লিটন নাকি অবলীলায় বাউন্ডারি হাঁকাতে পারেন। জানান তামিম। লিটন তার বদলে যাওয়া নিয়ে বলেন, ‘নেটে আমি খুব অল্প সময় অনুশীলন করে চলে যাই। কিন্তু অনুধাবন করলাম আমি এটা করে সফল নাও হতে পারি। অন্য কিছু চিন্তা করা উচিত। এখন অনেক অনুশীলন করি। কত দেরিতে খেলা যায়। দেরিতে খেললে এখন ভিশন অনেক ভাল হয়ে যায়, বল ভাল দেখতে পারি। আমার জন্য ক্রিকেট সহজ হয়ে যায়। আগে অনেক সময় দ্রুত ইনিংস শুরু করে মারতে গিয়ে আউট হয়ে গেছি। চিন্তা করেছিলাম, স্ট্রাইক রেট ১২০ এ নামলেও নামুক কিন্তু গড় ভাল করতে হবে। দুই-এক ম্যাচ খেলার পর বুঝতে পারলাম এটা চেষ্টা করলেও হবে না, কারণ আমি শট খেলতে পছন্দ করি এবং খেলবই। তখন ভাবলাম ইনিংসের শুরুতে নতুন বলকে গ্যাপে খেলার চেষ্টা করব, খুব জোরে না খেলে। এটাই কাজে দিয়েছে।’ তাইজুলও আড্ডায় যোগ দেন। লকডাউনে নাকি সারাদিন ঘর মুছেন তাইজুল। নেটে সবচেয়ে বেশি মারও নাকি খান এ স্পিনার। তবে গত বছর ক্রাইস্টচার্চে যে ক্রিকেটাররা হামলা থেকে বেঁচে যান, তা মুশফিকের সঙ্গে ফুটবল খেলা নিয়ে তাইজুল জিতবেই, এমন জেদ ধরে খেলাতে, তাতে কয়েক মিনিট দেরি হওয়াতেই বাঁচা গেছে! এমনই জানান তামিম।
×