ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শঙ্কার কালো মেঘ সরিয়ে মাঠে ফিরল ফুটবল

প্রকাশিত: ২০:৪৪, ১৮ মে ২০২০

শঙ্কার কালো মেঘ সরিয়ে মাঠে ফিরল ফুটবল

জাহিদুল আলম জয় ॥ অবশেষে কেটে গেছে শঙ্কার কালো মেঘ। দেখা দিয়েছে সোনালি সূর্য। মরণঘাতী করোনাভাইরাসের থাবায় দুই মাসেরও বেশি সময় (৬৫ দিন) বন্ধ থাকার পর আবারও মাঠে ফিরেছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও আকাক্সিক্ষত খেলা ফুটবল। শনিবার রাতে একগাদা নিয়মের মধ্য দিয়ে নতুন করে মাঠে ফিরেছে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লীগের একটি জার্মান বুন্দেসলিগা। দুই মাস পর ফুটবল ফেরায় সবমহলে ফিরে এসেছে স্বস্তি। ফেরার দিনে জার্মানির ১২টি ক্লাব মাঠে নেমেছিল। অর্থাৎ ছয় ম্যাচের সবকটিতেই ছিল দর্শকশূন্য স্টেডিয়াম। শিরোপা প্রত্যাশী বরুসিয়া ডর্টমুন্ড গোলোৎসব করে নতুন যাত্রা শুরু করেছে। নিজেদের মাঠ সিগনাল ইদুনা পার্কে অতিথি শালকে জিরো ফোরকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ডর্টমুন্ড। ডুসেলড্রফ-প্যাডারবোর্ন ম্যাচ গোলশূন্য ও লাইপজিগ-ফ্রেইবার্গ ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র হয়। অন্য ম্যাচে স্বাগতিক অগর্সবার্গকে ২-১ গোলে উফলসবার্গ, হোফেনহেইমকে ৩-০ গোলে হার্থা বার্লিন ও ফ্রাঙ্কফুটকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বরুসিয়া মনশেনগ্লাডব্যাচ। বড় জয়ে বুন্দেসলিগার পয়েন্ট তালিকার আগের স্থানটা ধরে রেখেছে ডর্টমুন্ড। ২৬ ম্যাচে ৫৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় আছে বিভিবি’রা। রবিবার রাতের ম্যাচের আগে ৫৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বেয়ার্ন মিউনিখ। ফুটবল মাঠে ফিরলেও মানতে হয়েছে রাশি রাশি নিয়ম। যে কারণে ছিল দর্শকহীন ফাঁকা গ্যালারি। লোক সমাগম বলতে কেবল দুই দলের খেলোয়াড়, কোচ, ক্লাব কর্মকর্তা, রেফারি, নিরাপত্তাকর্মী, মেডিক্যাল দল, ফটোগ্রাফার ও সাংবাদিক। জার্মান ফুটবল লীগ (ডিএফএল) কর্তৃপক্ষ আগেই নিয়ম করে দিয়েছে, ৩০০ জনের বেশি লোক মাঠের ভেতর থাকতে পারবে না। কিভাবে ম্যাচ চালাতে হবে তা নিয়ে ৫১ পৃষ্ঠার এক নির্দেশিকাও দেয়া হয় ক্লাবগুলোকে। ‘ক্লোজড ডোর’ ম্যাচ হলেও অবশ্য উত্তেজনার কমতি ছিল না ম্যাচে। লম্বা সময় পর মাঠে ফিরলেও পা দুটিতে জং ধরতে দেননি ফুটবলাররা। শালকের বিরুদ্ধে ম্যাচের ২৯ মিনিটে নরওয়ের উঠতি তারকা আর্লিং হালান্ডের গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিক ডর্টমুন্ড। ডানপ্রান্ত থেকে থোরগান হ্যাজার্ডের পাস থেকে পা ছুঁয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ২০১৯-২০ মৌসুমে ইদুনা পার্কে যোগ দেয়া ১৯ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে জুলিয়ান ব্রান্ডের পাস থেকে ডর্টমুন্ডকে দ্বিতীয় গোল উপহার দেন রাফায়েল গুরেইরো। বিরতি থেকে ফিরে ৪৮ মিনিটে ব্যবধান ৩-০ করেন থোরগান হ্যাজার্ড। এবারও গোলটিতে এ্যাসিস্ট করেন ব্রান্ড। ৬৩ মিনিটে নিজের জোড়া ও দলের চার নম্বর গোল করেন গুরেইরো। প্রত্যাশিত ফুটবল ফিরলেও কোনকিছুতেই ছিল না আগের গমগমে পরিবেশ। দর্শকহীন মাঠ, খেলা চলার সময় কোন শব্দ নেই, শ্মশানের মতো নীরবতা। জীবাণুমুক্ত বল, দূরত্ব মেনে গোল উদযাপন, সবমিলিয়ে মিলিয়ে নতুন এক অভিজ্ঞতা হয়েছে সবার। সবকিছু নিয়মের ঘেরাটোপে বাঁধা থাকলেও মাঠের ফুটবলে অবশ্য উত্তেজনার কমতি ছিল না। ছিল ট্যাকল, বল কাড়াকাড়ি। গোলও হয়েছে অনেক। ছয় ম্যাচে মোট ১৬ গোল হয়েছে। গোল উদযাপনে অবশ্য খেলোয়াড়দের সতর্ক থাকতে দেখা গেছে। পরস্পরকে জড়িয়ে না ধরে বা ‘হাই ফাইভ’ না করে অনেককে দেখা গেছে কনুইয়ে কনুই ঠেকাতে। যেমন ডর্টমুন্ডের হয়ে প্রথম গোল করার পর হালান্ডকে উদযাপন করতে দেখা গেছে একপ্রান্তে একা একা। ওই সময় তার সতীর্থরা ছিলেন অনেকটাই দূরে। জীবাণুনাশক স্প্রে দিয়ে বল মাঝেমধ্যেই পরিষ্কার করা হয়েছে। ডাগ আউটে দূরত্ব মেনে বসেন কোচ ও স্টাফরা। দলগুলোর হোম ম্যাচের সময় তাদের সমর্থকদের স্টেডিয়ামের বাইরে ভিড় করাটা স্বাভাবিক ঘটনা। মূলত এই চিন্তা থেকেই প্রিমিয়ার লীগে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে বুন্দেসলিগার ফেরার দিনে তেমন দৃশ্য চোখে পড়েনি। ডর্টমুন্ড পুলিশের মুখপাত্র অলিভিয়ের পেইলের তাই অবাক। তিনি বলেন, পরিবেশ বিস্ময়কর রকমের নীরব। আমাদের অনেক শঙ্কা ছিল, সম্ভাব্য অনেক চিত্র অনুমান করে রেখেছিলাম। ভাবতে পারিনি যে স্টেডিয়াম ও সিটি সেন্টারে এত কম সমর্থক আসবে। বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের কোচ লুসিয়েন ফাভরে বলেন, কোন শব্দ ছিল না। সবকিছু ছিল অবিশ্বাস্যরকমের নীরব। গোলে কেউ শট নিল, কেউ দারুণ একটা পাস দিল কিংবা
×