ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় নতুন করে ১৪ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ১০৪১

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ১৫ মে ২০২০

করোনায় নতুন করে ১৪ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ১০৪১

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৪ জনের মৃত্যু এবং ১০৪১ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ২৮৩ এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১৮ হাজার ৮৬৩ জনে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ২৪২ জনসহ এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন মোট ৩,৬০৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৩৯২টিসহ মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১ লাখ ৫১ হাজার ৯৩০টি। ৪১ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১৪ জনের মধ্যে পুরুষ ১১ জন, নারী তিন জন। এর মধ্যে ঢাকা শহরের ৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচ জন। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে দুই জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে পাঁচ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে পাঁচ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন ও ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ২০১ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন দুই হাজার ৫৭০ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৬৬ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন এক হাজার ৩৯৮ জন। তিনি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইন মিলে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে তিন হাজার ৩১ জনকে। এখন পর্যন্ত দুই লাখ ৩০ হাজার ৬৭৩ জনকে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন দুই হাজার ২৯৮ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেয়েছেন এক লাখ ৭৯ হাজার ৬৫৯ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৪৬ হাজার ১৪ জন। ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা আছে আট হাজার ৬৩৪টি। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে দুই হাজার ৯০০টি ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ছয় হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। আইসিইউ শয্যা আছে ৩২৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১০২টি। আইসিইউ শয্যা ও ডায়ালাইসিস ইউনিট শয্যা বাড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬১৭টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ১৬৫ জনকে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনলাইন ব্রিফিংয়ে। প্রায় চার লাখ পিপিই মজুদ রয়েছেÑ স্বাস্থ্য অধিদফতর ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, এ পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়েছে ২১ লাখ ৬৭ হাজার ৫৪৭টি পিপিই এবং বিতরণ করা হয়েছে ১৭ লাখ ৯৬ হাজার ১৯৬ টি। বর্তমানে মজুদ রয়েছে ৩ লাখ ৭১ হাজার ৩৫১টি পিপিই। করোনা সংক্রান্ত কলের বিষয়ে তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য বাতায়নের নম্বরে ৪৬ হাজার ৭৬৭টি, ৩৩৩ নম্বরে ৮৭ হাজার ৮৫৬টি এবং আইইডিসিআর’র নম্বরে ২৪০৩টি করোনা সংক্রান্ত কল এসেছে। অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় মোট কল এসেছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৬টি। এ পর্যন্ত হটলাইনগুলোতে করোনা সংক্রান্ত মোট কল এসেছে ৫০ লাখ ৬৫ হাজার ৫৫৬ টি। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২১৪ জন Ñ স্বাস্থ্য অধিদফতর ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতরের সমন্বিত করোনা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৩, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৬ জন, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে ৪ জন, সাজেদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ৩ জন, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ২ জন, মিরপুর লালকুঠি হাসপাতালে ২ জন, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২৬ জন, সিএমএইচ হাসপাতালে ৩৫ জন এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ বার্ন ইউনিটে ৩ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন। এভাবে ঢাকা বিভাগে ৬২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২১ জন, রাজশাহী বিভাগে ১০ জন, খুলনা বিভাগে ৮ জন, সিলেট বিভগে ১২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪ জন এবং রংপুর বিভাগে ১৩ জন সুস্থ হয়েছেন। অর্থাৎ একদিনে সারাদেশে ২১৪ করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট ৩৩৬১ জন সুস্থ হয়েছেন বলে জানান ডাঃ নাসিমা সুলতানা। ৬০ বছরের বেশি বয়সী রোগীর মৃত্যু হার বেশি ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, এ পর্যন্ত করোনায় মারা যাওয়া রোগীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৬০ বছরের বেশি ৪২ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ২৭ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৯ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৭ শতাংশ, ২১ থেকে ২৯ বছরের ৩ শতাংশ এবং ১০ বছরের নিচে বয়সীরা ২ শতাংশ। এখন পর্যন্ত ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী রোগীর মধ্যে কেউ মারা যাননি। ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীরাই বেশি আক্রান্ত ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের বেশি ৪ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১৩ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৩ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২৪ শতাংশ, ২১ থেকে ২৯ বছরের ২৬ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছরের ৪ শতাংশ এবং ১০ বছরের নিচে বয়সীরা ৩ শতাংশ। করোনায় মৃতের হার ৭১ শতাংশ পুরুষ এবং ২৭ শতাংশ নারাী। আর আক্রান্তের হার ৬৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৩২ শতাংশ নারী। ৪১টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা চলছে Ñ অতিরিক্ত মহাপরিচালক ॥ স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার মধ্যে ৫০৪০টি এবং ঢাকার বাইরে মোট ২৮৬০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার ভেতরে ও বাইরে মোট ৭৯০০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে রোগী বাড়ছে ॥ গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্তের পর বর্তমানে দশম সপ্তাহ চলছে। দশম সপ্তাহের মেয়াদকাল ১০ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত। অর্থাৎ এ সপ্তাহ শেষ হতে এখনও দু’দিন বাকি। তবে অষ্টম সপ্তাহের তুলনায় দশম সপ্তাহের এখনও দু’দিন বাকি থাকতেই আক্রান্ত বেড়েছে প্রায় তিনগুণ ও মৃত্যু বেড়েছে প্রায় দ্বগুণ। সুস্থতার পরিমাণও বেড়েছে কয়েক গুণ। তবে অষ্টম সপ্তাহে যেভাবে সুস্থতা নির্ধারণ করা হতো, এখন সেখানে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে।
×