ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সিলেটে ত্রাণ নিয়ে স্বজনপ্রীতি

প্রকাশিত: ২৩:৫২, ১৩ মে ২০২০

সিলেটে ত্রাণ নিয়ে স্বজনপ্রীতি

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ পর্যাপ্ত ত্রাণ বরাদ্দ সত্ত্বেও স্বজনপ্রীতির কারণে ত্রাণ পাচ্ছেন না অনেকেই। বিভিন্ন এলাকায় নামে মাত্র ত্রাণ কমিটি। তালিকা তৈরি ও ত্রাণ বিতরণ নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। ত্রাণ কার্যক্রমের কোন জবাবদিহিতা না থাকায় বৃদ্ধি পেয়েছে অনিয়ম স্বজনপ্রীতি। সরকারের পক্ষ থেকে খাদ্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং চলছে। বিভিন্ন ধাপে ত্রাণ বিতরণ, রেশন ব্যবস্থা, কম মূল্যে খাদ্যদ্রব্য ক্রয়ের ব্যবস্থা মানুষকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যথাযথভাবে সরকারের দেয়া ত্রাণ ও রেশন কার্ড বিতরণ না হওয়ায় গরিব অসহায় মানুষের একটি অংশ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ত্রাণ পাওয়ার দাবিদারদের তালিকা তৈরি ও বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে কমিটি গঠন করেছে। এলাকার কোন শ্রেণীর লোকদের নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হবে তারও একটি দিক নির্দেশনা রয়েছে। তালিকা তৈরি করে কি পরিমাণ ত্রাণ, কিভাবে বিতরণ করা হবে তারও সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এই নির্দেশনা কার্যকর হচ্ছে না। বিভিন্ন এলাকায় সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর মনগড়া পকেট কমিটি করে নিজের মতো কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কাদের নিয়ে ত্রাণ পরিচালনা কমিটি গঠন করার নির্দেশনা রয়েছে, কি পরিমাণ ত্রাণ বিতরণ করা হবে, কারা, কোন শ্রেণীর লোক ত্রাণ বা রেশন কার্ডের সুবিধা পাবে এই তথ্যগুলো সকলের জানা প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তবে সবকিছুই অন্ধকারে। ত্রাণ গ্রহণকারী, সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী, কারও কাছেই কোন তথ্য নেই। সিটি কর্পোরেশন বলছে ত্রাণ গ্রহীতার তালিকা তাদের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। কিন্তু একজন ত্রাণ গ্রহীতা গরিব অসহায় লোক ওয়েবসাইটের কি বুঝবে? এলাকার সচেতনমহলও জানেন না, এই এলাকার কতটুকু ত্রাণ বরাদ্দ এসেছে, আর কিভাবে বিতরণ করা হচ্ছে। এলাকার ত্রাণ গ্রহীতাদের ভাগ্যবিধাতা হচ্ছেন কাউন্সিলর। সরকারের মাল আর দাতা তিনি। তিনি যাকে খুশি তাকে দেবেন। কারও কিছু বলার নেই। একজন গরিব লোক কোন কারণে কাউন্সিলরের রোষানলে থাকায় ত্রাণ পায়নি অথচ তার প্রতিবাদ করার জায়গাও নেই। একজন লোক ত্রাণ পায়নি সেটা বলার জায়গা নেই। আর এই বিষয়ে জবাবদিহিতা না থাকায় ত্রাণ নিয়ে তুঘলঘি কা- ঘটছে। ইতোমধ্যে কয়েক দফা ত্রাণ বিতরণ করা হয়ে গেছে। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পৃথকভাবে ত্রাণসামগ্রী বিতরণের তালিকা হচ্ছে। এই পর্যন্ত যে পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা যথাযথভাবে বিতরণ করা হলে গরিব, অসহায় নিম্নœ আয়ের সকল মানুষের ঘরে সেটা পৌঁছানোর কথা। জনগণের জন্য সরকারের এই প্রচেষ্টার খবরও যথাযথভাবে জনগণের কাছে পৌঁছার কথা। দুঃসময়ে মানুষের পাশে রয়েছে সরকার। সরকার মানুষকে ত্রাণ দিচ্ছে সে সংবাদ মানুষের মনোবলকে আরও দৃঢ় করবে। পর্যাপ্ত ত্রাণ বরাদ্দ সত্ত্বেও অনেক মানুষ ত্রাণ সহায়তা পায়নি। মানুষ ক্ষোভ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আবার বিভিন্ন এলাকায় একই ব্যক্তি একাধিকবার ত্রাণ সামগ্রী পাচ্ছে। সেটা পেয়ে অনেকে খোলাবাজারে বিক্রিও করছেন। নিজের দল ভারি ও পক্ষের লোক থাকার সুবাদে ত্রাণ পাওয়ার পর্যায়ে নেই, অবস্থাসম্পন্ন এমন লোককেও রেশন কার্ড ও ত্রাণ সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
×