ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ওরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ‘দেশরত্নের কর্মী’

অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর নিরন্তর চেষ্টা

প্রকাশিত: ২৩:২৮, ১৩ মে ২০২০

অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর নিরন্তর চেষ্টা

ওয়াজেদ হীরা ॥ দুর্দিনের কা-ারি সবাই হতে পারে না। প্রচুর অর্থবিত্ত থাকা সত্ত্বেও অনেকেই দাঁড়ায় না মানুষের পাশে। এখনেই ব্যতিক্রম হয়েছেন কিছু তরুণ-তরুণী। যারা আলাদাভাবে মানুষের জন্য কাজ করছেন। নিজেরাই শিক্ষার্থী, মা-বাবার অর্থে নিজেদেরই চলতে হয়। কিন্তু তারাই মানবতার সেবা করছেন, দিয়েছেন ভালবাসার হাত বাড়িয়ে। মানুষের সেবার জন্য ইচ্ছাশক্তি আর মনমানসিকতাই যে মুখ্য তাই যেন বুঝিয়ে দিলেন ওরা। কর্মজীবী বা অঢেল সম্পত্তির মালিক নয় তবুও করোনার এবং রোজার এই সময়ে কিছু মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর কি আপ্রাণ চেষ্টা ওদের। মলিন মুখে হাসি ফুটাতে অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছেন। যারা গর্ব নিয়ে পরিচয় দেন দেশরতœ শেখ হাসিনার সৈনিক হিসেবে। ওদের নাম, গ্রাম, এমনকি কোন ক্ষেত্রে ধর্মও আলাদা। তবে একটা জায়গায় খুব মিল সেবার ব্রত নিয়ে কাজ করা ওরা সবাই শিক্ষার্থী। সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। আরও একটা মিল আছে ওরা শেখ হাসিনার নিবেদিত কর্মী, উজ্জীবিত সৈনিক, ওরা ছাত্রলীগ করে। রাজনীতিতে কারো পদ আছে, কারো নেই। আরো একটা কাকতালিয় মিল হলো সবাই স্ব স্ব অবস্থান থেকে করোনাকালে ছিন্নমূল অসহায় দরিদ্র নি¤œ-মধ্যবিত্ত যারা খাবার সঙ্কটে দিন পাড় করছেন তাদের পাশে প্রতিনিয়ত বিশেষ ব্যবস্থায় নিজেদের রান্না করা খাবার ইফতার হিসেবে তুলে দিচ্ছেন। মানুষগুলোর মুখে ফুটে উঠছে এক স্বস্তির তৃপ্তির হাসি। মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় অনেকেই প্রশংসাও করছেন। তবে প্রচারবিমুখ এরা চায় অন্যরাও এগিয়ে আসুক, সাধ্যমতো মানুষের পাশে দাঁড়াক, সবাই মিলে ভাল থাকুক প্রিয় দেশ। এমন একজন হিন্দু তরুণ সঞ্জিত চন্দ্র দাস যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতিও। মুসলমানদের রমজানে ইফতার করাচ্ছেন বিভিন্ন দরিদ্র অসহায় মুসল্লিদের। তিলোত্তমা শিকদার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীদের উপ-সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং ঢাকসুর সদ্যসও। হিন্দু ওই তরুণীও প্রতিদিন রান্না করা ইফতার নিয়ে হাজির হচ্ছেন মানুষের পাশে। শহর ঘুরে ঘুরে দিচ্ছেন এই খাবার। হাবিবুল্লাহ বিপ্লব ছাত্রলীগের সাবেক পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এবং জনপ্রিয় ছাত্রনেতা। কখনও মাকে দিয়ে কখনও বাবুর্চি দিয়ে বাড়িতে বিভিন্ন কিছু রান্না করে ইফতার নিয়ে হাজির হয় মানুষের জন্য। মানবতার ডাকে ছুটে চলছে ওরা। নিজ নিজ স্থানে থেকে পরম যতেœ রান্না করা খাবার আরও কেউ কেউ বিতরণ করছেন। সাইফুর রহমান সোহাগ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন নিজস্ব একটি প্রতিষ্ঠানের নামে দাঁড়িয়েছেন মানুষের পাশে। রাসেল আল মামুন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তবে ইচ্ছাশক্তিতে সেবা করছেন মানুষের। ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হলেও ওরা শিক্ষার্থী আর তাই এমন কাজ সামাজিক মাধ্যমগুলোতে সুনাম কুড়িয়েছে। দুটো কারণে বেশি সুনাম কুড়িয়েছে, প্রথমত ওরা শিক্ষার্থী হয়েও যেখানে নিজেদেরই হাত খরচের টাকা আনতে হয় বাবা-মার কাছ থেকে তবুও নিজেদের জমানো অর্থ যা আছে কিংবা কেউ পরিবার থেকে অর্থ নিয়ে মানুষের পাশে সেবার মধ্যেই থাকতে চায়। প্রশংসার আরেকটি কারণ হলো- করোনার এই সময়ে সরকারের দেয়া অনুদান বা খাদ্য সহায়তাও মানুষ লুটেপুটে খাচ্ছে সেখানে সরকার দলের লোকও আছে। সেখানে শিক্ষার্থীদের মানবতার উদ্যোগ তথাকথিত জনপ্রতিনিধিদের জন্য লজ্জার হয়ে আসে। এছাড়াও গত এক দশকে দেশে বিত্তবানের সংখ্যাও কম বাড়েনি। অথচ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সেবা দিচ্ছে ভালবাসার হাত বাড়িয়েছে হাতেগোনা কয়েকটা গ্রুপ বা প্রতিষ্ঠান।
×