ফিরোজ মান্না ॥ দুই বছর আগে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’র সফল উৎক্ষেপণ করা হয়। ২০১৮ সালের ১২ মে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল স্যাটেলাইটটি। ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট (বিএস-১) কেবল দেশের সবগুলো সরকারী বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেলকেই সম্প্রচার সুবিধা। পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) সম্প্রচার সুবিধা প্রায় সব দেশেই দেয়া হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার অনেক দেশেই বাংলাদেশের পাঠানো স্যাটেলাইটের মাধ্যমে টেলিভিশন দেখতে পাচ্ছেন। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দুর্গম এলাকায় টেলিযোগাযোগ সেবা স্থাপনের কাজ চলছে। তবে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ স্থাপন ব্যয় সাপেক্ষ বলে কাজটি ধীরগতিতে করা হচ্ছে। অনেক কারিগরি দিক বিবেচনা করে আগানো হচ্ছে। বিদেশে স্যাটেলাইটের বিপণন করার কাজও এগিয়ে যাচ্ছে। স্যাটেলাইটের মালিক দেশ হিসেবে বিশ্বে ৪৭তম দেশ বাংলাদেশ। এটা আমাদের গৌরবের বিষয়। এ তথ্য জানিয়েছেন বিসিএসসিএল’র চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ।
বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএসসিএল) চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ জনকণ্ঠকে বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রথম এক বছর কারিগরি কাজ করতেই সময় চলে গেছে। বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের স্যাটেলাইটের সঙ্গে সংযোগ ঘটানোর কাজ করা হয়েছে। এরপর গত বছরের অক্টোবর মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে দেশের ৩৫ টেলিভিশনকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। সেই থেকে টেলিভিশনগুলো আর বিদেশী স্যাটেলাইট নির্ভরশীল হতে হয়নি। তারা করোনা মহামারীতেও নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ঐতিহাসিক এই ১২ মে আমরা ঘটা করে পালন করতে চেয়েছিলাম। কিন্ত করোনা মহামারীতে আমরা দিবসটি উদযাপন করিনি। তবে বিসিএসসিএল টিভি সম্প্রচার শিল্পের উন্নতির জন্য কিছু বিষয় নিয়ে কাজ করছে। আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে দেশের সবগুলো ক্যাবল অপারেটরকে তাদের সব গ্রাহকের কাছে সেট টপ বক্স (এসটিবি) বিতরণ বাধ্যতামূলক করা হবে।
চেয়ারম্যান বলেন, বিসিএসসিএলের ভবিষ্যত পরিকল্পনায় রয়েছে, তাই দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রক্রিয়াটি এগিয়ে নেয়ার জন্য পরামর্শক নিয়োগ করা হয়েছে। তবে করোনার কারণে সেই কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। গত ১০ এপ্রিল, থাই উপগ্রহ সিরিজ থাইকোম-৬’র সহযোগিতায় বিএস-১ বিটিভির উপগ্রহ ভিত্তিক শাখা বিটিভি ওয়ার্ল্ডের মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোতে অনুষ্ঠান সম্প্রচারের ব্যবস্থা করেছে। প্রাথমিকভাবে এটি পরীক্ষামূলক। বিটিভি ওয়ার্ল্ডের সম্প্রচারের ফলাফলের ভিত্তিতে আমরা মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা এবং অন্যান্য অঞ্চলের জন্য দেশের বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল চালুর প্রক্রিয়া চলছে। দেশের সব টিভি চ্যানেল এখন বিএস-১ পরিষেবার মাধ্যমে সম্প্রচার কার্যক্রম চালাচ্ছে। এছাড়াও, দেশে নিরবচ্ছিন্ন ও সুরক্ষিত ব্যাংকিং পরিষেবা নিশ্চিত করতে সবগুলো ব্যাংকের এটিএম’র মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্যও বিএস-১ কাজ করছে।