ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিমুলিয়ায় ঢাকামুখী মানুষের ঢল

প্রকাশিত: ২৩:২৮, ১২ মে ২০২০

শিমুলিয়ায় ঢাকামুখী মানুষের ঢল

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে ঢাকামুখী মানুষের ঢল যেন থামছে না। সোমবার সকাল থেকে শতশত লোক ঢাকায় ফিরতে ফেরিতে করে পার হয়েছে। ফেরিতে গাদাগাদি করে করোনার ভয়কে উপেক্ষা করে এসব যাত্রী ফিরছে কর্মস্থলে। সোমবার ১৫তম দিনেও শতশত ঢাকামুখী নানা পেশার মানুষ শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুট দিয়ে কর্মস্থল ঢাকা ও তার আশপাশে ফিরেছে। সকালে শিমুলিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে ফেরিতে করে আসছে লোক আর লোক। ফেরিগুলোতে গুটি কয়েক গাড়ির সঙ্গে শতশত লোক আসছে শিমুলিয়া ঘাটে। এখানে এসে ফেরি থেকে নামতে ধাক্কা-ধাক্কি করে রীতিমতো প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ছেন যাত্রী সাধারণ। তাদের মধ্যে করোনার তেমন কোন ভয় দেখা যায়নি। ফেরি থেকে নেমেই কার আগে কে যানবাহনে উঠবে এ নিয়ে ছোটাছুটি করেছে লোকজন। বাস না থাকায় প্রতিদিনকার মতো আটো, সিএনজি, ট্যাম্পু, ইয়েলোক্যাব, নসিমন, করিমন, উবারের অফলাইনের মোটরসাইকেল ও গাড়িতে করে ভেঙ্গে ভেঙ্গে তারা গন্তব্যে ফিরছে। এতে তাদের কয়েকগুণ বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সিরাজুল কবির জানিয়েছেন, কোথা থেকে প্রতিদিন শতশত লোক আসছে তা বোধগম্য নয়। সবই ঢাকামুখী যাত্রী। সরকার গার্মেন্টস খোলার ঘোষণার পর মার্কেট খুলে দেয়ার ঘোষণা দিলে নানা শ্রেণী পেশার শতশত লোক গত কয়েকদিন ধরে ঢাকা ও তার আশপাশের জেলাগুলোতে ছুটছে। এদিকে ফেরিতে প্রতিদিন এভাবে লোক পার হতে দেখে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী লঞ্চ মালিকগণ দাবি করেছে তাদের লঞ্চ পারাপারের জন্য খুলে দিতে। মোশারফ হোসেন নসু নামে এক লঞ্চ মালিক ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে বলেছেন, তাহলে আমদের দোষ কি? ফেরিতে যদি এভাবে লোক পার হয়, তবে আমাদেরও লঞ্চে পারাপারের অনুমতি দেয়া হোক। তাতে গাদাগাদি কম হবে, করোনা সংক্রামণের আশঙ্কা কম থাকবে। বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের এজিএম মোঃ শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ১২টি ফেরি চলাচল করছে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে। সোমবার শতশত ঢাকামুখী যাত্রী পার হয়েছে ফেরিতে করে। পাটুরিয়া নিজস্ব সংবাদদাতা মানিকগঞ্জ থেকে জানান, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার কর্মজীবী মানুষ ও পোশাক শ্রমিকরা করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে পাটুরিয়া ঘাট হয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় নৌ-পথে পাটুরিয়া ঘাট হয়ে প্রতিদিনই রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের জেলামুখী মানুষের ঢল অব্যাহত রয়েছে। সোমবার সকালে পাটুরিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায় ফেরিতে গাদা গাদি করে পদ্মা নদী পার হয়ে পাটুরিয়া ঘাটে এসে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন এসব লোকজন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে সবাই ট্রাক, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, পিকআপ, রিক্সা, ভ্যানে গাদাগাদি করে ফিরছেন গন্তব্য স্থানে। উপায় না দেখে কেউ কেউ মোটরবাইক ভাড়া করেও যাচ্ছেন অধিক ভাড়া দিয়ে। এদের বেশিভাগ লোকজনই ঢাকাসহ আশপাশ এলাকার পোশাক কারখানার শ্রমিক। পাটুরিয়া ঘাটে এসে নারী ও শিশুদের নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে কর্মমুখী মানুষ। ঘাট কর্তৃপক্ষ জানান, গণপরিবহন পারাপার নিষেজ্ঞা থাকলেও এ নৌ-রুট দিয়ে শুধু জরুরী পণ্য, কাঁচামালবাহী ট্রাক ও এম্বুলেন্স পারাপার করা হচ্ছে। লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় ফেরিঘাটে প্রতিদিন যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে পদ্মা নদী পার হতে। জোর করেই ফেরিতে উঠছে শতশত যাত্রী কোনভাবেই আটকানো সম্ভব হচ্ছে না এদের। এতে আমাদের কিছুই করার থাকছে না। এ রুটে ১৫টি ফেরির মধ্য আজ ছোট বড় ৮টি ফেরি চলাচল করছে।
×