ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা ঝুঁকিতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন!

প্রকাশিত: ২২:১৬, ১১ মে ২০২০

করোনা ঝুঁকিতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন!

জিএম মোস্তফা ॥ চলতি বছরে বিশ্ব টেনিসের একটি মাত্র গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট সম্পন্ন হয়েছে। মার্চের প্রথম দিকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই যে স্থগিত করা হয় সব ধরনের টেনিস টুর্নামেন্ট। যে কারণে এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ান ওপেনই একমাত্র গ্র্যান্ডস্লাম যেটাতে খেলতে পেরেছেন টেনিস খেলোয়াড়রা। তবে করোনাভাইরাসের প্রকোপ যেভাবে বাড়ছে তাতে আগামী বছরের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন অনিশ্চিত। ঠিক তেমনই আশঙ্কা প্রকাশ করছে টুর্নামেন্টের আয়োজকরা। এই গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট দিয়ে নতুন মৌসুম শুরু হয়। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের আয়োজকরা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ২০২১ সালে মেলবোর্নে ১৮-৩১ জানুয়ারি টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু করোনার জেরে বিশ্বজুড়ে যে সতর্কতা ও বিধিনিষেধ আরোপ হয়েছে তা আগামী বছরও জারি থাকলে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন হবে না। তবে টুর্নামেন্ট আয়োজন করার জন্য সব রকম পরিকল্পনা তাদের হাতে রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন যদি আয়োজিত হয়ও তবে সেখানে সমর্থকদের উপস্থিতিও সীমিত করা হবে। এ সম্পর্কে টেনিস অস্ট্রেলিয়ার প্রধান ক্রেইগ টিলে বলেন, ‘এই মুহূর্তে যে পরিস্থিতিতি তাতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন হওয়ার কোন সম্ভাবনাই আমি দেখছি না। তবে এখনই চূড়ান্ত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। সম্ভাব্য পরিস্থিতিতে খেলোয়াড়দের কোয়ারেন্টাইনে রেখে শুধুমাত্র অস্ট্রেলিয়ান সমর্থকদের উপস্থিতিতে এই গ্র্যান্ডস্লাম আয়োজন করা যেতে পারে।’ টেনিস ক্যালেন্ডারে পক্ষকালব্যপী আয়োজিত অস্ট্রেলিয়ান ওপেনই সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চলা কোন টুর্নামেন্ট। সে কারণেই টেনিস অস্ট্রেলিয়াও অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকে এই গ্র্যান্ডস্লামটি আয়োজনের। আগামী বছরও তার ব্যতিক্রম করতে চাইছে না আয়োজকরা। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে আন্তর্জাতিকভাবে সব ধরনের যাতায়াত বন্ধ থাকায় ইতোমধ্যেই ২০২০ মৌসুমে এটিপি ও ডব্লিউটিএ টুর্নামেন্ট বাতিলের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে টিলে জানিয়েছেন আগামী বছরের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন আয়োজনের জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের পরিকল্পনা এখন থেকেই করে রাখছে অস্ট্রেলিয়া। এক্ষেত্রে তারিখ কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে বলেও তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন তো পরের কথা টেনিসবোদ্ধারা এখন ভাবছেন ফ্রেঞ্চ ওপেন ও ইউএস ওপেন নিয়ে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের থাবায় ইতোমধ্যেই বাতিল হয়ে গেছে টেনিসের মর্যাদার আসর উইম্বলডন। যে কারণেই ইউএস ওপেন ও ফ্রেঞ্চ ওপেনের কোর্টে গড়ানো নিয়েও দেখা দিয়েছে শঙ্কা। যদিও ইউএস ওপেন, ফ্রেঞ্চ ওপেনের জন্য যথেষ্ট সময় হাতে রয়েছে। তারপরও টুর্নামেন্ট নিয়ে চিন্তিত আয়োজকরা। কেননা বিনা প্রস্তুতি কিংবা আনুষ্ঠানিকতায় বড় টুর্নামেন্ট মাঠে গড়ালে সেটা কতটা সফল হবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে শেষ হয় অস্ট্রেলিয়ান ওপেন। এরপরই মোড় নেয় বৈশ্বিক পরিস্থিতি। কোভিড-১৯ নামক ভয়ঙ্কর এই ভাইরাসের ঝুঁকিতে একে একে স্থগিত হয় ক্রীড়াজগতের সব বড় আসর। ফুটবল, ক্রিকেট, অলিম্পিকের পর, বাতিল করা হয় মর্যাদার উইম্বলডনও। করোনার কারণে আপাতত স্থগিত এটিপি আর ডব্লিউটিএ ট্যুরর্সের টুর্নামেন্ট। ফ্রেঞ্চ ওপেনও স্থগিত করা হয়েছে। ২৪ জুনের টুর্নামেন্ট চলে গেছে অক্টোবরে। ইউএস ওপেনের নির্ধারিত তারিখ ৩১ আগস্ট। তবে বিশ্ব পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে তাতে এসব টুর্নামেন্ট শুরু করা নিয়েই জেগেছে শঙ্কা। তবে ২০২১ সালের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন আয়োজন নিয়ে ক্রেইগ টিলে যে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাই যদি হয় তবে টেনিস বিশ্ব হয় তো বা আর কখনই সুইস মাস্টার রজার ফেদেরার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে দেখবে না, এমন আশঙ্কাও এখন অনেকের মুখে মুখে ঘুরছে। সুইস তারকার বর্তমান বয়স ৩৮। আসছে আগস্টেই উনচল্লিশে পা রাখতে যাচ্ছেন ২০ গ্র্যান্ডস্লামের মালিক। তবে এখন পর্যন্ত নিজের অবসর প্রসঙ্গে মুখ খুলেননি তিনি। বরং নিজের সেরাটাই ঢেলে দেয়ার প্রত্যয় তার চোখে মুখে। শুধু তাই নয়, চলতি বছরের অক্টোবরে শুরু হতে যাওয়া সুইস ইনডোর বাসেল টুর্নামেন্টে খেলার জন্য ইতোমধ্যেই নিজের নাম নিশ্চিত করেছেন বিশ্ব টেনিসের এই জীবন্ত কিংবদন্তি।
×