ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

২০২৩ বিশ্বকাপে সব পুষিয়ে দেবেন তামিম

প্রকাশিত: ২২:১৬, ১১ মে ২০২০

২০২৩ বিশ্বকাপে সব পুষিয়ে দেবেন তামিম

মিথুন আশরাফ ॥ পরপর দুই বিশ্বকাপে ক্যাচ মিস। গত বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে বিশেষ উজ্জ্বলতা ছড়াতে না পারা। এই সব কিছুই ২০২৩ ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপে পুষিয়ে দিতে চান বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক ও ওপেনার তামিম ইকবাল। তিনি বলেছেন, ‘আল্লাহই জানে, কেন বিশ্বকাপ এলেই আমার কাছ থেকে ক্যাচ ছুটে যায়! এই (২০১৯) বিশ্বকাপেও ক্যাচ ছুটে গেছে। আশা করি, ২০২৩ বিশ্বকাপ যদি খেলতে পারি, তাহলে একবারে সব পুষিয়ে দেব।’ ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্যাচ মিস করেন তামিম ইকবাল। ২০১৯ বিশ্বকাপেও ভারতের বিরুদ্ধে রোহিত শর্মার ক্যাচ ছাড়েন তিনি। ২০২৩ বিশ্বকাপে খেলতে পারলে সব ক্যাচ মিস পুষিয়ে দেবেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আড্ডায় এমনটিই জানিয়েছেন। ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। এ্যাডিলেডের সেই ম্যাচে যখন ১৫ বলে ইংলিশদের ২০ রান দরকার ছিল, তখন তাসকিনের বলে লংঅনে ক্যাচ তুলে দেন ক্রিস ওকস। যে ক্যাচটি লুফে নিতে ব্যর্থ হন তামিম। এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আমি ওকসের ক্যাচটা ছেড়েছিলাম তাসকিনের বলে, যে সময় খেলাটা খুব ক্লোজ হয়ে গিয়েছিল। ক্যাচটা ছাড়ার পর আমার কাছে মনে হচ্ছিল, মাটি দুই ভাগ হয়ে যাক, আমি ভেতরে ঢুকে যাই। আমাকে কেউ আর দেখার দরকার নেই। আমি সেই মুহূর্তে ৩২ কোটি গালাগাল শুনেছি। ৩২ কোটি কারণ, বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ, একটা করে গালি তো দেয়নি, দুইটা করে দিয়েছে সবাই।’ পেসার রুবেলের জাদুকরী স্পেলে সেই ম্যাচটি জিতে নেয় বাংলাদেশ। তবে এবারের বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচটি জেতা হয়নি বাংলাদেশের। রোহিতের ক্যাচ মিসের আফসোস এখনও করেন তামিম। তিনি জানান, ‘আমি সব সময় নাসিরকে বলতাম, নাসির চিন্তা কর, বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা, ১ বলে ২ রান দরকার, বল আকাশে উঠল, তুই ক্যাচ মিস করলি। তোর কেমন লাগবে? এটা নিয়ে ওর সঙ্গে মজা করতাম। আল্লাহ মনে হয় বেশি সিরিয়াসলি নিয়েছেন আর আমার সঙ্গেই ঘটে গেছে এটা।’ পরের ওভারে রুবেল দুই উইকেট নিয়ে জয় নিশ্চিত করতেই হাফ ছেড়ে বাঁচেন তামিম। এ ওপেনার বলেন, ‘তারপর রুবেল দুই উইকেট নিয়ে নিল। ওই খেলার হাইলাইটস দেখলে দেখবি সবাই রুবেলের পেছনে দৌড়ায়। সবাই তো রুবেলের পেছনে দৌড়েছে যে ম্যাচ জিতে গেছি বলে, আর আমি রুবেলের পেছনে দৌড়েছি যে, আমি বেঁচে গেছি (হাসি)! যদি ওই ম্যাচ হারতাম, তাহলে আমার আর বাংলাদেশে আসা লাগত না।’ এ সময় তামিম নিজেও আফসোস করেন বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তার হাত থেকে ক্যাচ ছুটে যাওয়ার ব্যাপারে। দেশের অন্যতম সেরা ফিল্ডার হয়েও বিশ্বকাপে গেলেই যেন সব ওলটপালট হয় তামিমের। তার আশা ২০২৩ বিশ্বকাপে সব পুষিয়ে দিতে পারবেন। তামিম যে আর ক্যাচ ছাড়া নিয়ে রসিকতা করেন না, তাও জানিয়ে দিয়েছেন। তামিমের ক্যারিয়ার যে বাংলাদেশের কোচ থাকার সময় জেমি সিডন্স পাল্টে দিয়েছেন, তাও জানান তামিম। তিনি বলেছেন, ‘আমার ক্যারিয়ারের শুরুতে, অলমোস্ট প্রথম ম্যাচগুলোর দিকে এই জিনিসটা হয়ে গেছে। ২০০৭ বিশ্বকাপে ওই ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচের সময় (যেখানে তামিম ইকবাল ভারতের দেয়া ১৯২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ঝোড়ো ৫১ রান করেন) এই জিনিসটা হয়ে গিয়েছিল। আমার স্টার্টিংটাই এ রকম ছিল।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘ওই ম্যাচের পর বড় সময় ধরে আমি বলার মতো রান পাইনি, ভাল খেলি নাই। হ্যাঁ, দলে জায়গা পাকা করার জন্য যতটা প্রয়োজন ততটা করেছি। তবে ওইরকম কোন বড় পারফর্মেন্স করতে পারছিলাম না। আমার মনে হয়, আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট যদি বলতে হয়, তবে তা হচ্ছে জেমি সিডন্স। সিডন্স যখন এলো, যখন আমি ওর সঙ্গে কাজ করা শুরু করলাম। আমার ব্যাটিংয়ে যত সীমাবদ্ধতা ছিল ওগোল নিয়ে কাজ করা শুরু করলাম। আমার স্ট্রোক প্লে আমি আরও বাড়াতে পারলাম। আমি আমার দুর্বলতাগুলো নিয়ে কাজ করতে থাকলাম। তখন থেকে আমার মনে হয়, যতদিন সিডন্সের অধীনে ছিলাম, সেটাই ছিল আমার টার্নিং পয়েন্ট।’
×