ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আক্রান্ত শূন্য নিউজিল্যান্ড ॥ সাত সপ্তাহে প্রথম

প্রকাশিত: ২৩:২১, ৫ মে ২০২০

আক্রান্ত শূন্য নিউজিল্যান্ড ॥ সাত সপ্তাহে প্রথম

নিউজিল্যান্ডে লকডাউন শুরু হওয়ার পর এই প্রথমবার নতুন করে কেউ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। দেশটির স্বাস্থ্য মহাপরিচালক ড. এ্যাসলে ব্লুমফিল্ড সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত ২৫ মার্চ দেশটিতে লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই দেশজুড়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। দ্য গার্ডিয়ান। এরই মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে ১ হাজার ২৭৬ জন। সে দেশে আক্রান্তদের মধ্যে সেরে উঠেছে অন্তত ৮৬ শতাংশ। ১৯১ জন এখনও চিকিৎসাধীন থাকলেও তাদের কেউ গুরুতর অবস্থায় নেই। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লুমফিল্ড বলেন, নিউজিল্যান্ডে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৪৮৭ এবং মারা গেছে ২০ জন। নিউজিল্যান্ডে করোনার এ্যাক্টিভ কেস ১৯১টি। এর আগে গত ১৬ মার্চ নিউজিল্যান্ডে নতুন করে কোন আক্রান্ত ছিল না। এদিকে গত মঙ্গলবার দেশজুড়ে কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। দেশজুড়ে কড়াকড়ির মাত্রা ৪ থেকে ৩ এ নামিয়ে আনা হয়েছে। গত প্রায় পাঁচ সপ্তাহ ধরে ৪ মাত্রার লকডাউন জারি রয়েছে নিউজিল্যান্ডে। ইতোমধ্যেই দেশটিতে প্রায় ৪ লাখ মানুষ কাজে যোগ দিয়েছে। দেশটির প্রায় ৭৫ ভাগ অর্থনীতি সচল হতে শুরু করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্ন। সোমবার সাংবাদিকদের সামনে ব্লুমফিল্ড বলেন, আজকের হিসেবটা সত্যিই আশা দেখাচ্ছে। তবে সাত সপ্তাহ পর এটা কেবল একদিন ঘটল। এই অবস্থান ধরে রাখতে হবে বলেও জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, আসল পরিস্থিতি বোঝা যাবে এই সপ্তাহের শেষের দিকে। ভাইরাস থেকে নিরাময়ের পর আমরা আবারও পরীক্ষা করে দেখব যে, তাদের পরিস্থিতি ঠিক কেমন থাকছে। সচরাচর একবার করোনা পজিটিভ হওয়ার পর দুটি পরীক্ষায় নেগেটিভ আসলে আমরা রোগীকে ছাড়পত্র দিচ্ছি। এর পাঁচ-ছয়দিন পর আমরা আবারও টেস্ট করব। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কেউ আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়নি। তবে এখনই আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে দেয়ার দিকে এগোব না। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা বলেছেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, সপ্তাহের শেষের দিকে গিয়ে পরিস্থিতি হয়তো আরও স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। তবে আমাদের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে এবং যে সুবিধার জন্য আমরা এতটা কঠোর লড়াই করছি তার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। আমাদের আরও কিছুদিন কষ্ট করতে হবে। এর আগে দেশটি দাবি করে, তারা করোনাভাইরাসের গণসংক্রমণ রোধ করতে সক্ষম হয়েছে। এরপরই কঠোরতম লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেয় দেশটি। করোনাভাইরাস বিষয়ক সরকারের দৈনিক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা বলেন, ‘আমরা অর্থনীতি সচল করছি কিন্তু সামাজিক জীবনযাপন চালু হতে যাচ্ছে না।’ রোগটি প্রতিরোধে সবচেয়ে সফল দেশগুলোর একটি হলো নিউজিল্যান্ড। তিনি সতর্ক করে বলেন, ভাইরাসটি দূর হয়েছে ঘোষণা করার অর্থ এ নয় যে, নতুন কোন রোগী পাওয়া যাবে না। কিন্তু নতুন রোগীর সংখ্যা হবে কম এবং সহজে নিয়ন্ত্রণযোগ্য। তিনি বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডে অশনাক্ত গণসংক্রমণ নেই। আমরা এ যুদ্ধে জয়ী হয়েছি। কিন্তু এটি বজায় রাখতে হলে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’ করোনাভাইরাস মহামারীর শুরু থেকেই ভ্রমণ এবং সামাজিক কার্যক্রমে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে দেশটি। তখন মাত্র কয়েকডজন রোগী শনাক্ত হয়েছিল সেখানে। তখনই সীমান্ত বন্ধ করে দেয় দেশটি এবং বিদেশ ফেরত সবাইকে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে পাঠায়। গণহারে পরীক্ষা করতে শুরু করে তারা এবং শনাক্ত রোগীরা যাদের সংক্রমণে এসেছেন, তাদের খুঁজে বের করে। জেসিন্ডা জানান, শুরুতেই লকডাউন না করলে নিউজিল্যান্ডে দৈনিক এক হাজারেরও বেশি রোগী শনাক্ত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। সবার সংঘবদ্ধ কার্যক্রমের মাধ্যমে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে তারা।
×