ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ক্ষণজন্মা বঙ্গবন্ধু

প্রকাশিত: ২১:০২, ৩ মে ২০২০

ক্ষণজন্মা বঙ্গবন্ধু

বাংলাদেশ ও বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো নেতা বিশ্বে বিরল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লিখিত এক পত্রে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে লেখা হয়েছে চিঠিটি। এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি বিরল উদাহরণও সৃষ্টি করলেন বৈকি। সচরাচর মার্কিন এই প্রেসিডেন্টকে পারতপক্ষে কারও প্রশংসা করতে শোনা যায় না। বরং চাচাছোলা ও বিতর্কিত বক্তব্য রাখার জন্য তিনি প্রায়ই সমালোচিত হন নিজ দেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন মহলে। উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিমের সঙ্গে তার সম্পর্ক অম্লমধুর এবং ইরানের সঙ্গে বৈরিতাসুলভ। সে অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের লিখিত চিঠিতে বঙ্গবন্ধুর প্রশংসা সত্যিই বিরল। বঙ্গবন্ধুকে ক্ষণজন্মা নেতা হিসেবে উল্লেখ করে ট্রাম্প লিখেছেন, তাঁর মতো নেতা বিশ্বে খুব কমই দেখা যায়। এর বাইরেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেছেন এবং এ বিষয়ে সে দেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করার সদিচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত সাময়িকী ফোর্বসের এক নিবন্ধেও করোনা মোকাবেলায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করা হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো নেতা বিশ্বে সত্যিই বিরল। ক্ষণজন্মা তো বটেই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে গত বছর জাতিসংঘ সদর দফতরে প্রথমবারের মতো এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর স্থায়ী প্রতিনিধি, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, জাতিসংঘের কর্মকর্তারা, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মূলধারার মানবাধিকারকর্মী, লেখক, চলচ্চিত্র শিল্পী, টিভি উপস্থাপকসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন। শোকসভায় একাধিক বক্তা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাপ্নিক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে ‘ফ্রেন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ বা বিশ্ববন্ধু হিসেবে অভিহিত করেন। এর মাধ্যমে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বঙ্গবন্ধুর সবিশেষ ভূমিকা ও অবদান তুলে ধরার আন্তরিক উদ্যোগ এবং প্রচেষ্টাই প্রতিফলিত হয়েছে। উল্লেখ্য, চলতি বছর পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষেও জাতিসংঘ সদর দফতরে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা। পাশাপাশি ২০২১ সালে উদযাপন করা হবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম বা ডব্লিউইএফ ২০২১ সালে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। এর পাশাপাশি জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা বলেছেন তাও সবিশেষ প্রণিধানযোগ্য। বঙ্গবন্ধুর অন্যতম আদর্শ ও লক্ষ্য সর্বোপরি স্বপ্ন ছিল, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়া। প্রধানমন্ত্রী শোকবিহ্বল দীপ্তকণ্ঠে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘সেই বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমেই আমরা জাতির পিতার রক্তঋণ শোধ করব। এটা আমাদের অঙ্গীকার।’ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের রূপকার এবং প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু। আমাদের স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু। আর সে কারণেই তিনি বিশ্বনেতা, বিশ্ববন্ধু। ২০১৭ সালে জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা তথা ভাষণকে ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল’ এবং মানবজাতির অমূল্য সম্পদ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ নীতি, সকলের সঙ্গে সৌভ্রাতৃত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। অতঃপর সরকারের সামনে প্রধান কাজটিই হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাওয়া। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চিঠিতে সেই আশা-আকাক্সক্ষাই প্রতিফলিত হয়েছে।
×