স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনা ভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসার গতি আনতে দুই হাজার চিকিৎসক ও পাঁচ হাজার ৫৪ নার্স নিয়োগের সুপারিশ করেছে সরকারী কর্ম কমিশন (পিএসসি)। সরকারের চাহিদাপত্র আসার মাত্র তিন দিনের মধ্যে আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করে পিএসসি সুখবর দিল চাকরি প্রার্থীদের। রাষ্ট্রীয় জরুরী প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার পিএসসি সুপারিশ প্রাপ্তদের রেজিস্ট্রেশন নম্বরসহ মেধাতালিকা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করেছে। দুই হাজার চিকিৎসক ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে ৩৯তম বিশেষ বিসিএস থেকে। এছাড়া নার্স নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে ২০১৮ সালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে।
বৃহস্পতিবার কমিশনের বিশেষ সভায় এই সুপারিশ অনুমোদন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারই এই সুপারিশ জনপ্রশাসন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পিএসসির উপ-সচিব মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিস্তারিত ফলাফল পিএসসির ওয়েবসাইটে (নঢ়ংপ.মড়া.নফ) পাওয়া যাচ্ছে। পিএসসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্যাডার হিসাবে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের জন্য সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে। স্বাস্থ্য ক্যাডারের সহকারী সার্জন হিসেবে তাদের নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। পাঁচ হাজার ৫৪ নার্স নিয়োগের সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন ২০১৮ সালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ পরীক্ষার অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে। নার্সদের ১০ম গ্রেডের নন-ক্যাডার দ্বিতীয় শ্রেণীর পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।
অত্যন্ত দ্রুত সময়ে প্রক্রিয়া শেষ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক জনকণ্ঠকে, করোনা শুধু জাতীয় নয়, এটি বৈশ্বিক সঙ্কট তৈরি করেছে। একটি মহামারী। সুতরাং এ দুর্যোগ মোকাবেলায় সকলে মিলেই কাজ করতে হবে। সরকারের কাছ থেকে ডাক্তার ও নার্স নিয়োগের চাহিদা পাওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। এ জন্য কমিশনের সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সকলে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। নতুন করে নিয়োগের জন্য সুপারিশ প্রাপ্ত চিকিৎসক ও নার্সরা কাজে যোগ দিলে চলমান সঙ্কটে জাতি অনেক উপকৃত হবে।
তবে জানা গেছে, জাতির এমন সঙ্কটে পিএসসি অবশ্য এ নিয়োগের বিষয়ে সব সময়েই ছিল ইতিবাচক অবস্থানে। সকলেরই মত ছিল, নতুন ভাবে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে গেলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, কয়েক দফা পরীক্ষার আয়োজন করতে হবে। যা সময় সাপেক্ষ। সেই অবস্থাও এখন নেই। দেশে এখন চিকিৎসক সঙ্কট। এই বিশেষ সঙ্কটের সময় জাতীয় স্বার্থের কথা বিবেচনা করে ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে মেধার ভিত্তিতে ২ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া সম্ভব। এছাড়া নার্স নিয়োগ হতে পারে ২০১৮ সালের পরীক্ষার উত্তীর্ণদের থেকেই। কারণ এরা সবাই পরীক্ষিত। সবাই পাস করেছেন। পদ কম থাকার কারণে আমরা তাদের নিয়োগের সুপারিশ করা যায়নি। রাখা হয়েছিল অপেক্ষমাণ তালিকায়।
কমিশনের সদস্যরা জানিয়েছেন, একটি বড় দিক হচ্ছে আগে যারা নন-ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত ছিলেন তারাও এখন ক্যাডারে নিয়োগ পাচ্ছেন। এছাড়া ২০১৮ সালে পদ না থাকায় লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও যারা নিয়োগ পাননি এখন সেই তালিকা থেকে আরও হাজার হাজার নার্স নিয়োগ হলো।
কিন্তু সুপারিশপ্রাপ্তদের নিয়োগ দ্রুত কিভাবে করতে পারে মন্ত্রণালয়? এমন প্রশ্নে কমিশনের সদস্যরা বলেন, পুলিশ ভেরিফিকেশন ও মেডিক্যাল চেকআপ নিয়োগের পরবর্তীতে করা হবে। শর্ত দিয়েই তাদের নিয়োগের কাজ করতে পারে সরকার। তাহলে দ্রুতই তাদের কাজে যোগ দেয়া সম্ভব হবে।