ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় আরও দুই পুলিশ সদস্যের মৃত্যু

প্রকাশিত: ২৩:০৫, ১ মে ২০২০

করোনায় আরও দুই পুলিশ সদস্যের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও দুই পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গত দুই দিনে তিন পুলিশ সদস্যের মৃত্যু ঘটল। আরও ৪৭৫ জন পুলিশ সদস্য ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের সংস্পর্শে আসা বহু পুলিশ সদস্য প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। আবার বাড়িতেও হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন অনেক পুলিশ সদস্য। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ বাহিনীতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ সদস্যদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশকে। এমন পরিস্থিতির বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে জরুরী বৈঠক করে যাচ্ছেন পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা। বৈঠকে বৈশ্বিক এ মহামারী থেকে বাঁচতে কৌশল নির্ধারণ করে দেয়া হবে। পুলিশ সদস্যদের মৃত্যুতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি, পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ ও ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলামসহ উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তারা শোক জানিয়েছেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার ভোর চারটার দিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা এএসআই মোঃ আবদুল খালেকের (৩৬) মৃত্যু হয়। এর আগে বুধবার রাত দশটার দিকে একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত পুলিশ কনস্টেবল আশেক মাহমুদ (৪২) মারা যান। আর মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া পুলিশ কনস্টেবল জসিম উদ্দিন (৪২) মারা যান। আব্দুল খালেক ও আশেক মাহমুদের করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকায় তাদের প্রথমে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল। পরে পরীক্ষায় করোনাভাইরাস পজেটিভ এলে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানেই তাদের মৃত্যু হয়। নিহত এএসআই আব্দুল খালেক ২০০৪ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। সর্বশেষ তিনি মিরপুর-১৪ নম্বর পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তিনি মিরপুরে পুলিশ প্রশিক্ষণ একাডেমিতে কর্মরত থাকার পাশাপাশি একাডেমির মসজিদে ইমামতি করতেন। তার গ্রামের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার ঝোপখালীতে। তিন সন্তান ও স্ত্রী রেখে গেছেন তিনি। নিহত অপর পুলিশ সদস্য আশেক মাহমুদ আশেক ১৯৯৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ইন্দ্রবাড়িতে। তিনি দুই সন্তান ও স্ত্রী রেখে গেছেন। তিনি ট্রাফিক পুলিশের উত্তর বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তাকে সিদ্ধেশ্বরী কলেজে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল। করোনাভাইরাস পজেটিভ আসায় তাকে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিহতদের লাশের জানাজা শেষে যার যার গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়। সেখানে উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় তাদের দাফন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, পুলিশ বাহিনীর দুই লাখ সদস্যের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪৭৫ জনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া তাদের সংস্পর্শে আসা অনেককেই প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তবে তাদের সংখ্যা জানাননি মন্ত্রী। পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ নিয়মিত আক্রান্ত সদস্যদের পরিবারের খোঁজ খবর নেয়ার জন্য প্রত্যেক ইউনিটের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। পাশাপাশি করোনায় মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বরত আর সবাইকে সুস্থ রাখার জন্যও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
×