ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মিলারের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর ফোনে কথা

যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতানিতে অগ্রাধিকার মূল্য সুবিধা চায় বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২৩:০৩, ১ মে ২০২০

যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতানিতে অগ্রাধিকার মূল্য সুবিধা চায় বাংলাদেশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাসে অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রফতানিতে অগ্রাধিকার মূল্য বাজার সুবিধা চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি আরও বলেন, বাজার সুবিধার পাশাপাশি এ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগও এদেশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া প্রকল্প সহায়তা, খাদ্য সহায়তা এবং পণ্য সহায়তা হিসেবে এ যাবত ৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং কোভিড-১৯ প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ামূলক কর্মসূচীতে ৩ দশমিক ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জরুরী সহায়তার জন্য অর্থমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট আর্ল মিলারের সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি এবং সহযোগিতা নিয়ে টেলিফোন আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন। ওই সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ঘোষিত সময়োপযোগী আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন রবাট আর্ল মিলার। যুক্তরাষ্ট্র চলমান এই সঙ্কট মোকাবেলায় সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকবেন বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে সহায়তার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। রাষ্ট্রদূত মিলার ইউএস এক্সিম ব্যাংকের নতুন পণ্য সম্পর্কে অবহিত করেন। এক বছরের জন্য প্রদত্ত এ সুবিধার আওতায় রয়েছে সরাসরি ঋণ বা ঋণ গ্যারান্টি, সাপ্লাই চেন অর্থায়ন গ্যারান্টি ও কার্যনির্বাহী মূলধন গ্যারান্টি। অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে বর্তমানে জরুরী সেবা কার্যক্রম ছাড়া সব কিছু বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতির কারণে এখন দেশের সিংহভাগ শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ছোট-খাটো কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। গণপরিবহন ও বিমান চলাচল স্থগিত। করোনার প্রভাবে দেশের আমদানি-রফতানির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এছাড়া স্থবিরতা নেমে এসেছে রেমিটেন্স প্রবাহে। যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষ ও অর্থনীতির জন্য ১১ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, যা জিডিপি’র ৩.৫ শতাংশ। এই প্যাকেজের অর্থব্যয়ে জনসাধারণের ব্যয় বৃদ্ধি, সামাজিক সুরক্ষাবেষ্টনীকে প্রশস্ত করবে। চলমান সঙ্কট মোকাবেলায় আর্থিক সরবরাহ বাড়ানোর ক্ষেত্রে জোর দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প, পরিষেবা খাত এবং কুটির শিল্পগুলো সুরক্ষার জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে কার্যনির্বাহী মূলধনের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বৃহত্তম রফতানি বাজার। গত ২০১৩ সালে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে। বর্তমানে দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা কাঠামো চুক্তি (টিকফা) স্বাক্ষরিত হয়েছে। কিন্তু অগ্রাধিকারযোগ্য বাজারে প্রবেশের সমস্যা এখনও মীমাংসিত হয়নি। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাবে সৃষ্ট বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব কাটিয়ে উঠতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অগ্রাধিকারযোগ্য বাজারে প্রবেশাধিকার এবং বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
×