ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগসহ ৬ সুবিধা চায় ডিবিএ

প্রকাশিত: ২১:২৫, ৩০ এপ্রিল ২০২০

অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগসহ ৬ সুবিধা চায় ডিবিএ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ করোনাভাইরাস কারণে তীব্র সঙ্কটে পড়া পুঁজিবাজারকে উদ্ধারে ৬ ধরনের সুবিধা চায় ডিএসই ব্রোকার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)। সংগঠনটি মনে করছে, বিশেষ সহযোগিতা ছাড়া পুঁজিবাজারে গতি ফেরানো অসম্ভব হয়ে পড়বে। ডিবিএর দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে আগামী বাজেটে পুঁজিবাজারে বিনা শর্তে অপ্রদর্শিত অর্থ (কালো টাকা) বিনিয়োগের সুযোগ রাখা, মার্জিন ঋণধারী বিনিয়োগকারীদের ৩ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়া, মার্জিন ঋণের সুদ এক বছরের জন্য স্থগিত করা, ব্রোকারদের এক বছরের অফিস ব্যয় মেটানোর জন্য সহজ শর্তে সহবিল যোগান দেয়া। ডিবিএ সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। এসব দাবি জানিয়ে সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে একটি চিঠি দিয়েছে ডিএসইর ব্রোকারদের এই ফোরাম। চিঠিতে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে বিরাজমান মন্দার কারনে পুঁজিবাজারের মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। ব্রোকারেজ হাউসসহ পুঁজিবাজারের অন্যান্য অংশীজন ব্যবসা পরিচালনা করতে প্রায় ব্যর্থ। এছাড়া কোভিড-১৯ এর ফলে দেশের অন্য সব ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি পুঁজিবাজারেও এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় পুঁজিবাজারকে সচল ও গতিশীল রাখতে ডিবিএ ৬টি প্রস্তাব পাঠিয়েছে। ডিবিএ করোনার কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রাখতে আর্থিক সহায়তার দাবি জানিয়েছে তাদের চিঠিতে। বলা হয়েছে ব্রোকারদের অফিস পরিচালন ব্যয়ভার (অফিস ভাড়া, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন, বিদ্যুত বিল ইত্যাদি) মিটিয়ে সকল কার্যক্রম সচল রাখার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। ডিবিএ শেয়ার কেনাবেচার ওপর সরকার প্রদেয় আগাম করের হার দশমিক ০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ০১৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে। তারা বলেছে, ব্রোকারদের অফিস কার্যক্রম সচল রাখতে, প্রাতিষ্ঠানিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখে বিনিয়োগকারীদের মাঝে উন্নত বিনিয়োগ সেবা ও সুবিধা প্রদান করে বিনিয়োগে আগ্রহী করার লক্ষ্যে শেয়ার লেনদেনের ওপর ব্রোকারদের প্রদেয় অগ্রিম আয়কর কমানো দরকার। মার্জিন ঋণধারী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়াতে ৩ বছর মেয়াদে ৩ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়ার প্রস্তাব করেছে ডিবিএ। তাদের মতে, এই ঋণ পেলে বিনিয়োগকারীদের পুনরায় লেনদেনে ফিরিয়ে এনে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তথা ফোর্স সেল থেকে বিনিয়োগকারীকে সুরক্ষা দেয়া সম্ভব হবে। মার্জিন এ্যাকাউন্টে ঋণের বিপরীতে আরোপিত সুদ ১ বছরের জন্য স্থগিত করার প্রস্তাব দিয়ে ডিবিএ বলেছে, এতে করে বিনিয়োগকারী তার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সুযোগ পাবে এবং লেনদেনে অংশ গ্রহণ করে বাজারকে সক্রিয় করে তুলবে। ডিবিএর দেয়া অপ্রদর্শিত আয় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ সংক্রান্ত প্রস্তাবে ৩ শর্তে এই সুবিধা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ওই অর্থ ১:১ ভিত্তিতে বন্ড মার্কেট ও সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ করতে হবে, বন্ডে বিনিয়োগকৃত অর্থ ৩ বছরের জন্য ব্লক থাকবে এবং ওই বন্ড একচেঞ্জের মাধ্যমে লেনদেনযোগ্য হতে হবে। এছাড়া ব্রোকার কর্তৃক প্রদেয় সিডিবিএল ফি ও চার্জ, বিনিয়োগকারীদের বিও ফি ইত্যাদি থেকে পূর্ণ অব্যাহতি দেয়ারও প্রস্তাব করেছে ডিবিএ। ডিবিএর প্রস্তাবে, তাদের দাবিসমূহের যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজার উন্নয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়ন একাকার। পুঁজিবাজার উন্নয়নে স্টক ব্রোকারদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্টক ব্রোকারসহ সকল অংশীজনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম সচল রেখে তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার নিমিত্তে উল্লিখিত সুপারিশমালার যথাযথ বাস্তবায়ন দরকার।
×