ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে দেশে লকডাউন শিথিল

প্রকাশিত: ২১:১৬, ২৯ এপ্রিল ২০২০

দেশে দেশে লকডাউন শিথিল

বিশ্বব্যাপী বুধবার পর্যন্ত ৩০ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তারপরও ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বন্ধ থাকা অর্থনৈতিক কর্মকা- পুনরায় শুরুর পদক্ষেপ হিসেবে চলমান লকডাউন শিথিল করছে। অবশ্য ইউরোপের বিভিন্ন অংশে স্কুল ও দোকানপাট পুনরায় শুরু হলেও নিজে ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে ফেরা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যুক্তরাজ্যকে আরও ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, পুনরায় সব খুলে দেয়ার পথ অনুসরণ করা যথেষ্ট তাড়াহুড়ো করা হবে। বিভিন্ন দেশ লকডাউনের শর্ত শিথিল করলেও সামাজিক দূরত্বের বিধান বজায় রাখতে কড়া নির্দেশ দিয়েছে। খবর বিবিসি, আলজাজিরা ও এএফপির। মহামারীতে বিশ্বে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২ লাখ ৯ হাজার এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে, দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ৫৫ হাজার ছাড়িয়েছে। করোনায় মোট মৃতদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি মারা গেছে ইউরোপে। বুধবার পর্যন্ত এই মহাদেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার জনের বেশি। ইউরোপের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে দৈনিক মৃত্যু কমে আসায় সেখানকার সরকারগুলো বিদ্যমান অর্থনৈতিক ও সামাজিক দূরত্বের বিধি-নিষেধ কিভাবে শিথিল করা যায় সে বিষয় ভাবছে। ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে ইতালি সবার আগে লকডাউন শুরু করে, সাত সপ্তাহ আগে লকডাউন শুরু হওয়া এই দেশটিতে সোমবার অবকাঠামো ও কারখানা শ্রমিকদের কাজে ফেরার অনুমতি দিয়েছে সরকার। ৪ মে থেকে ইতালিতে শরীরচর্চা কেন্দ্র ও ভ্রমণ সংশ্লিষ্ট এলাকায় লোকরা যেতে পারবেন, তবে তাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং মাস্ক পরতে হবে। একই দিনে রেস্টুরেন্ট, খাবার সরবরাহ ও পাইকারি বিক্রয় কেন্দ্র খুলে দেবে তবে অন্যান্য দোকান, জাদুঘর ও লাইব্রেরি ১৮ মে থেকে খোলা হবে। স্পেনে কঠোর লকডাউন রবিবার থেকে শিথিল করা হয়েছে, ২ মে থেকে লোকদের শরীর চর্চা ও হাঁটার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। স্পেন ও ফ্রান্স মঙ্গলবার এ বিষয় বিস্তারিত পরিকল্পনা ঘোষণা করে। ফরাসী প্রধানমন্ত্রী এদোয়ার্দো ফিলিপ্পির ঘোষিত পরিকল্পনার অধীনে ১১ মে থেকে লকডাউন তুলে নেয়া হবে, ফ্রান্সে গত ১৭ মার্চ লকডাউন শুরু হয়। স্কুলগুলো পর্যায়ক্রমে খুলে দেয়া হবে, তবে রেস্তেরাঁ, ক্যাফে ও সিনেমা প্রদর্শনী স্থল এবং ভিড়ের স্থানগুলো বন্ধ থাকবে। সুইজারল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া ও সার্বিয়ায় সোমবার থেকে ছোট দোকানগুলো পুনরায় খুলে দেয়া হয়েছে। নাইজিরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি বলেছেন, বৃহত্তম সিটি লাগোজ ও রাজধানী আবুজায় ৪ মে থেকে লকডাউন শিথিল করা হবে, তবে অবশ্যই লোকদের মাস্ক পরে বের হতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গবর্নর এন্ড্রু কোমো কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ১৫ মে থেকে কিছু কারখানা এবং নির্মাণ কার্যক্রম চালুর ঘোষণা দিয়েছেন। আমেরিকার জর্জিয়া, টেক্সাস, টেনেসি, আলাস্কা, ওকলাহোমা, মিনেসোটা, মিসিসিপি, কলোরাডো, সাউথ ক্যারোলিনায় লকডাউন বিভিন্ন পর্যায়ে শিথিল করা হচ্ছে। জার্মানিতে গত সপ্তাহ থেকে লকডাউনের কড়াকড়ি শিথিল করা হয়েছে। গণপরিবহন ও মার্কেটে চলাচলে লোকদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সৌদি আরব আংশিকভাবে কারফিউ তুলে নিয়েছে, তবে পবিত্র নগরী মক্কায় ২৪ ঘণ্টা কড়া লকডাউন অব্যাহত থাকবে। করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত স্পেনে এক মাস পর দৈনিক মানুষের প্রাণহানি সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। ফলে স্পেন মহামারীর সবচেয়ে কঠিন সময়টি পেরিয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছে সরকার। ফ্রান্স সরকার জানিয়েছে, দেশটিতে মহামারী করোনা ভাইরাসে নতুন করে আরও ৩৬৭ জন প্রাণ হারিয়েছে। এ নিয়ে ১ মার্চ থেকে কোভিড-১৯ ভাইরাসে দেশটির মৃতের সংখ্যা বেড়ে মোট ২৩ হাজার ৬৬০ জনে দাঁড়াল। তবে, আইসিইউতে রোগীর সংখ্যা হ্রাস অব্যাহত রয়েছে।
×