ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শিমুলিয়া ঘাট দিয়ে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ

প্রকাশিত: ২২:৪৬, ২৭ এপ্রিল ২০২০

শিমুলিয়া ঘাট দিয়ে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুট দিয়ে সোমবার সকাল থেকেই ঢাকায় কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছে মানুষজন। এর বেশিরভাগ যাত্রীই গার্মেন্টস ও কলকারখানার শ্রমিক। সকালে শিমুলিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায় ফেরি, লঞ্চ, সিবোর্টসহ বিভিন্ন নৌযান বন্ধ থাকায় ফেরিতে করে পদ্মা পাড়ি দিয়ে শিমুলিয়া ঘাটে আসছে দক্ষিণবঙ্গের মানুষ। গার্মেন্টস খুলে দেয়ায় তারা ফিরতে শুরু করছে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরসহ কলকারাখানাগুলো প্রধান এলাকাগুলোতে। তারা বাড়ি থেকে বিভিন্ন যানবাহনে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে এসে ফেরিতে করে পদ্মা পাড়ি দিয়ে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের শিমুলিয়া ঘাটে আসছে। এখানে এসে বাস না পেয়ে বিভিন্ন প্রকার যানবাহনে তারা গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছে। এসব যানবহনের মধ্যে ইয়েলো ক্যাব, আটোরিক্সা, মাইক্রো, নসিমন, করিমনসহ নানা প্রকার যানবহনে তারা ছুটছে কর্মস্থলের দিকে। এতদিন ঘাটে তেমন কোন যানবাহন না থাকলেও রবিবার থেকে বেশ কিছু যানবাহন দেখা যাচ্ছে শিমুলিয়া ঘাটে। এছাড়া ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের চেকপোস্টগুলো কিছুটা শিথিল করায় লোকজন বিভিন্ন প্রকার যানবাহনে করে ফিরতে শুরু করেছে কর্মস্থলে। এর কয়েকদিন আগে দেখা গেছে এ পথে যানবাহন চলাচলে অনেক কড়াকড়ি ছিল। লোকজনকে দেখা গেছে যাত্রীবাহী পরিবহন না পেয়ে তারা অনেকেই ঢাকায় ফিরছেন হেঁটে। সোমবার সকাল থেকেই দেখা গেছে ফেরিতে করে যেমন লোকজন আসছে রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে, তেমনি শিমুলিয়া ঘাটেও দেখা গেছে বিভিন্ন প্রকার যানবাহনে করে তারা ফিরছে কর্মস্থলে। মির্জাপুর নিজস্ব সংবাদদাতা মির্জাপুর থেকে জানান, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে ধেয়ে চলেছে শত শত গার্মেন্টসকর্মী। এদের অধিকাংশই হেঁটে। কেউ রিক্সায় কেউ ভ্যানে বা মোটরসাইকেলে। সবার গন্তব্য নিজ নিজ কর্মস্থল ঢাকা, গাজীপুর ও আশুলিয়ার গার্মেন্টস কারখানায়। এরা সবাই সিরাজগঞ্জসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে রবিবার রাতে বা সোমবার ভোরে রওনা হয়েছে। মালিকপক্ষের ফোন পেয়ে চাকরি বাঁচাতে রমজানের মধ্যে প্রচ- রোদে গার্মেন্টসকর্মীদের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে এই ধেয়ে চলা সকাল থেকেই লক্ষ্য করা গেছে। গার্মেন্টস কারখানা খোলার অনুমতি সরকার দিয়েছে কি দেয়নি তা কোন গার্মেন্টকর্মীই বলতে পারেননি। শুধু মালিক পক্ষের কাছ থেকে খবর পেয়ে চাকরি বাঁচাতে তারা ছুটে চলেছে বলে জানা গেছে। সিরাজগঞ্জের কাজীপুর থেকে আসা সুরিয়া আক্তার বলেন, হাজিরা না দিলে চাকরি থাকবেনা। যেখানে গাড়ি ভাড়া ২শ’ টাকা সেখানে ৩ হাজার টাকা খরচ হলেও কাজে যেতে হবে। সিরাজগঞ্জ সদরের গার্মেন্টসকর্মী আলমগীর হোসেন বলেন, ঢাকা যতই দূর হোক যেতেই হবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন বন্ধের পাশাপাশি সরকার গার্মেন্টস শিল্পও বন্ধ ঘোষণা করে। ফলে মহাসড়কে ঘরমুখো গার্মেন্টসকর্মীদের বিপুল সমাগম ঘটে। মালিক পক্ষ পুনরায় গার্মেন্টস খোলার ঘোষণা দিলে সোমবার আবার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে ঢাকার দিকে গার্মেন্টকর্মীদের স্রোত বইতে শুরু করেছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও কারখানার শ্রমিকরা চাকরি বাঁচাতে হেঁটেই ঢাকা ও গাজীপুরের দিকে যাচ্ছেন। গার্মেন্টসকর্মী চাঁন মিয়া বলেন, সোমবার ভোর থেকে রওনা দিয়েছি গাজীপুর যাব। রাস্তায় প্রায় দুই হাজার টাকা খরচ করেছি কিন্তু কখন পৌঁছাব জানিনা।
×