ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শেষের শুরু এ্যাঞ্জেলিক কারবারের!

প্রকাশিত: ১৯:৪১, ২৭ এপ্রিল ২০২০

 শেষের শুরু এ্যাঞ্জেলিক  কারবারের!

জিএম মোস্তফা ॥ গত কয়েক মৌসুমে যে কয়েকজন প্রমীলা খেলোয়াড় বিশ্ব টেনিসে আলো ছড়িয়েছেন তাদের মধ্যে এ্যাঞ্জেলিক কারবার অন্যতম। এই সময়ে গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন তিনি। সেইসঙ্গে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানটাও দখল করেছেন জার্মান তারকা। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ্যাঞ্জেলিক কারবারের পারফর্মেন্সের ধারও যেন কমে যাচ্ছে। গত মৌসুমটা একেবারেই বাজে কেটেছে তার। চলতি মৌসুমের শুরুটাও ভাল করতে পারেননি তিনি। যে কারণে অনেকেই তার শেষের শুরু দেখছেন। তবে আসলেই কী পতন ঘটবে আরও একজন টেনিস তারকার? সেই উত্তর এখন সময়ের হাতে। করোনাভাইরাসের কারণে গোটা বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই যখন লকডাউনে তখন জেনে নেয়া যাক জার্মান টেনিসের এই তারকা খেলোয়াড়ের উত্থানের গল্প। এ্যাঞ্জেলিক কারবার খুব অল্প বয়সেই টেনিসের রেকেট হাতে নিয়েছিলেন। আশ্চার্য্য হলেও মাত্র তিন বছর বয়সেই টেনিস খেলতে শুরু করেন তিনি। ১৯৮৮ সালে ব্রেমেনে তার জন্ম। কিন্তু পিতা-মাতার সঙ্গে কিয়েলে পাড়ি জমান কারবার। সেখানেই এক অনুশীলন একাডেমিতে কাজ করতেন তার জার্মান বংশোদ্ভূত মা বিয়েটা এবং পোল্যান্ডের বাবা স্লাউক। কারবারের বয়স যখন ১৫। তখনই পেশাদার টেনিসে যাত্রা শুরু করেন। তার তিন বছর পর বেলজিয়ামের হাসেল্টে প্রথম মেজর কোন টেনিস টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেন কারবার। চার ইন্টারন্যাশনাল ট্যুর টুর্নামেন্ট জয়ের সৌজন্যে ২০০৭ সালে বিশ্ব টেনিসে প্রথমবার শীর্ষ ১০০ জনের তালিকায় জায়গা করে নেন এ্যাঞ্জেলিক কারবার। সে বছরই প্রথম ফ্রেঞ্চ ওপেন, উইম্বলডন এবং ইউএস ওপেনের মূল ড্রয়ে অংশ নেন তিনি। ইউএস ওপেনের প্রথম রাউন্ডে সেবারই সেরেনা উইলিয়ামসের বিপক্ষে প্রথম কোর্টে নামেন জার্মান তারকা। সেই ম্যাচে আমেরিকান তারকার বিপক্ষে লড়াই করলেও ম্যাচটা জিততে পারেননি তিনি। ২০০৮ সালে প্রথম কোন মেজর টুর্নামেন্টের প্রথম পর্বের বাধা অতিক্রম করেন কারবার। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ডের টিকেট নিশ্চিত করেন জার্মান তারকা। কিন্তু তারপরও টেনিস কোর্টে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি কারবার। যে কারণে হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। এমনকি টেনিস থেকে সরে দাঁড়ানোরও চিন্তা-ভাবনা করতে থাকেন জার্মান তারকা। তবে মানসিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ২০১২ সালের সূচনা করেন তিনি। এ বছরটাই তার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট। র‌্যাঙ্কিংয়েও ব্যাপক অগ্রগতি হয় তার। বিশ্ব টেনিসে অন্যতম সেরা খেলোয়াড়দের একজনে পরিণত হন তিনি। সে বছরই প্রথম ফ্রেঞ্চ ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করেন এই তারকা। শুধু তাই নয় সে বছরে সিনসিনাটি মাস্টার্সে সেরেনা উইলিয়ামসের বিপক্ষেও প্রথম জয়ের দেখা পান এ্যাঞ্জেলিক কারবার। পরের বছর আবারও নিষ্প্রভ পারফর্ম করেন তিনি। যদিওবা লিঞ্জ ওপেনের শিরোপা জয়ের পাশাপাশি ডব্লিউটিএ ফাইনালসে খেলার রেকর্ড গড়েন এই জার্মান তারকা। ২০১৫ সালে চারটি ডব্লিউটিএ শিরোপা জিতে জার্মানির শীর্ষ খেলোয়াড়ে পরিণত হন তিনি। এরপরের বছরেই বাজিমাত করেন এ্যাঞ্জেলিক কারবার। ২০১৬ সালের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। সেইসঙ্গে ক্যারিয়ারের প্রথম মেজর শিরোপা জয়েরও দেখা পান জার্মান তারকা। এরপর একই বছরে ইউএস ওপেনেও চমকে দেন তিনি। দুর্দান্ত খেলে ইউএস ওপেনের চ্যাম্পিয়ন হন কারবার। শুধু তাই নয়? ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ স্থানটাও দখল করে নেন স্টেফি গ্রাফের উত্তরসূরি। এ যেন সোনায় মোড়ানো বছর কারবারের। দুটি গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টের শিরোপা জয়ের পাশাপাশি বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর স্থানটিও দখল করেন তিনি। পরের মৌসুমে আবারও ব্যর্থ। তবে ২০১৮ সালে উইম্বলডনে চ্যাম্পিয়ন হয়ে নতুন রেকর্ড গড়েন এ্যাঞ্জেলিক কারবার। যদিওবা গত মৌসুমে মেজর কোন টুর্নামেন্টে নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ হন তিনি। যে কারণেই ৩২ বছর বয়সী কারবারের শেষের শুরু দেখছেন টেনিসবোদ্ধাদের অনেকেই।
×